Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এসপি সুভাষ চন্দ্রের ব্যাংকে সাড়ে ৮ কোটি টাকা! : মামলা করছে দুদক

মামলার এজাহারে তথ্য

মালেক মল্লিক | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পুলিশ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সাহার ব্যাংক হিসাবে মিলল সাড়ে ৮ কোটি টাকা!। এই পুলিশ কর্মকর্তা বর্তমানে ফরিদপুরে পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে কমর্রত আছেন। তিনি ওয়ান ব্যাংকের বংশাল, এলিফ্যান্ট রোডসহ তিনটি শাখায় ১৯টি এফডিআরের মাধ্যমে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা রেখেছেন। মাত্র চার বছরের হিসাব অনুসন্ধান করে এই তথ্য পাওয়া যায়। দুর্নীত দমন কমিশনের মামলার এজহারের এসব চিত্র উঠে এসেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে সাড়ে আট কোটি টাকা উপার্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা করেছে কমিশন। এসব অর্থ সুভাষ ও তার স্ত্রীর যৌথ নামে পাওয়া যায়। 

গত মাসে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে তিন বছরে ৬ কোটির বেশি টাকার মালিক সহকরী কমিশনার (কাস্টমস) শরিফ আল আমীন। এছাড়াও ভ’মি অফিসের এসি ল্যান্ডের অনুসন্ধান পায় কমিশন। গত আগস্ট মাসে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের, বিআরটিএসহ তিনটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে তিন কর্মকর্তাকে ঘুষগ্রহণকালে গ্রেফতার করেছে রাষ্ট্রের একমাত্র দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এসপি সুভাষ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে গত ১১ সেপ্টেম্ব মানিলন্ডারিং আইনে মামলা অনুমোদন দিয়েছিল কমিশন। মামলা নম্বর ৩৭। দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় পর মামলা করল দুদক ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক জনসংযোগ কর্মকর্তা জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য ইনকিলাবকে বলেন, ওই অর্থ অপরাধ কর্মকান্ডের মাধ্যমে অর্জিত জানা সত্তে¡ও এসপি নিজ ও স্ত্রী রীনা চৌধুরীর নামে ওয়ান ব্যাংকের ওই তিন শাখায় এফডিআর হিসাবে জমা রেখে ভোগ দখলে রেখেছেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এক মতবিনিময় সভায় বলেছেন, আমরা দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করছি। আমরা কাউকেই ছাড় দিচ্ছি না কিংবা ভবিষ্যতেও ছাড় দিব না।
দুর্নীতির মাধ্যমে সাড়ে আট কোটি টাকা উপার্জনের অভিযোগে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। গতকাল দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকার সহকারী পরিচালক মো. আবদুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে বংশাল থানায় মামলাটি করা হয়। মামলার
এজাহারে বলা হয়েছে, সুভাষ চন্দ্র সাহা পুলিশ বিভাগে চাকরিকালে বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে তাঁর নিজ নামে ও স্ত্রী রীনা চৌধুরীর নামে একাধিক এফডিআর হিসাব খোলেন। তাঁরা যৌথ নামে ওয়ান ব্যাংকের ঢাকার বংশাল শাখায় ছয়টি, এলিফ্যান্ট রোড শাখায় একটি এবং যশোর শাখায় ১২টি এফডিআর হিসাবে অর্থ জমা করেন। তাঁদের ১৯টি এফডিআর হিসাবে বর্তমানে মোট স্থিতির পরিমাণ আট কোটি ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৭ টাকা। এই অর্থের উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন রেখে আসামি সুভাষ চন্দ্র সাহা ও তাঁর স্ত্রী রীনা চৌধুরী মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, তাঁদের যৌথনামীয় এফডিআরগুলোর স্থিতি ও তা অর্জনের উৎসের বিষয়টি ২০১৬-২০১৭ কর বর্ষ পর্যন্ত দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করেননি। এ ছাড়া ২০১৬-১৭ করবর্ষে আয়কর রিটার্ন দাখিলের পরে খোলা এফডিআর হিসাবে জমাকৃত অর্থের সমপরিমাণ টাকা ২০১৬-১৭ করবর্ষে তাঁদের দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নে উদ্বৃত্ত ছিল না। অর্থাৎ, তিনি পুলিশ বিভাগে চাকরিকালে বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে অর্জিত এই অর্থের উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন করেছেন। আর তাঁর স্ত্রী রীনা চৌধুরী তাঁর স্বামীর অপরাধ হতে অর্জিত অর্থ জেনেও স্বামীর সঙ্গে যৌথ নামে এফডিআর হিসাবে জমা রেখে এবং তা গোপন করে উক্ত অপরাধ সংগঠনে সহায়তা করেছেন। ২০১৩ সালের ২৬ মে থেকে ১৭ সালের ২২ মে পর্যন্ত সময়কালের হিসাব অনুসন্ধান করে এই তথ্য পাওয়া গেছে। আসামি সুভাষ চন্দ্র সাহা বর্তমানে এসপি হিসেবে ফরিদপুরে কমর্রত আছেন। তাঁর বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার রাধানগর গ্রামে।
এসি ল্যান্ডের প্রতিবেদনে লক্ষ টাকা ঘুষ: ভূমি অফিসের এসি (ল্যান্ড) সার্ভেয়ারের প্রতিবেদন পেতে লাগবে এক লক্ষ টাকার ঘুষ ! অন্যথায় জমি ক্রেতার বিপক্ষে প্রতিবেদন তৈরী করার হুমকিও দেন সরকারি এক কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা আব্দুল হালিম। তিনি নারাণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ায়। তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। কমিশনের অনুসন্ধানে এমন চিত্র উঠে এসেছে। ঘুষ গ্রহণকালে হাতে-নাতে ওই সরকারি তর্মকর্তাকে আটক করেছে দুদক।
ছয় কোটি টাকার মালিক কাস্টমস কর্মকর্তা: তিন বছরে ৬ কোটির বেশি টাকার মালিক হয়েছেন সহকরী কমিশনার এর এক কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তার নাম শরিফ আল আমীন। তিনি বর্তমানে সুনামগঞ্জের বিভাগীয় ভ্যাট কার্যালয়ে কমর্রত। সরকারি এ কর্মকর্তার বিভিন্ন নামে-বেনামে ব্যাংক হিসাবে ৬ কোটি ২৬ লাখ ১১ হাজার ২২২ টাকা সন্ধান দুদক। তিনি যেন রাতারাতি বড় লোক হতে বসেছেন। এসব টাকার বৈধ কোনো উৎস খুঁজে না পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক।

 



 

Show all comments
  • মিলন ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ২:৫২ এএম says : 0
    এরকম আরো যারা আছে তাদেরকেও খুঁজে বের করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Salman Ahmed ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:২৯ পিএম says : 0
    All law enforcement personnel bank accounts should be audited. More will come out
    Total Reply(0) Reply
  • Masud Bhuiyea ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:৩০ পিএম says : 1
    এ তো কেবল একজন এসপির গল্প বাকিদের খবর কি ?
    Total Reply(0) Reply
  • Rahman Sadman ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:৩১ পিএম says : 0
    শুধু উনি কেন,আরো যার আছেন,উচ্চ পদে তাদের তাদের বলায় কেন নয়-- এমন ভুরি ভুরি--
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Nuruddin Jahangir ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:৩১ পিএম says : 0
    উন্নয়ন হয়েছে বুঝা গেল
    Total Reply(0) Reply
  • Mahbubur Rahman ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:৩২ পিএম says : 0
    দুদ‌কের কর্মকর্তা‌দের সম্প‌দের হিসাব তদন্ত কর‌বে কে ? ভাল ক‌রে খোজ নিন
    Total Reply(0) Reply
  • MD Musa Miah ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:৩৩ পিএম says : 0
    ওনার একাউন্টেই এত টাকা। আর বাকিদের যে কি?
    Total Reply(0) Reply
  • Fatema Akter Rubina ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:৩৩ পিএম says : 0
    Only
    Total Reply(0) Reply
  • Shohidul Islam ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:৩৪ পিএম says : 0
    বেতন কত উনার
    Total Reply(0) Reply
  • S. Anwar ১১ নভেম্বর, ২০১৭, ৮:৫৫ পিএম says : 0
    হবে না.?? সুযোগতো আর বার আসে না। একেতো ফরিদপুরের লোক, তার উপর আবার হিন্দু। মোদী দাদাকেও খুশি রাখতে হবে। সামনে ভোট আর গদির ব্যাপার-স্যাপার আছে। ভোট ব্যাংক হাতে রাখার আওয়ামী কৌশল আরকি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশ

১২ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ