Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সরকারের নির্দেশে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারী করা হয়েছে -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকারের নির্দেশে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, তারেক রহমানের অপরাধটা কী, তিনি রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছিলেন আর তা একুশে টেলিভিশনের লাইভ প্রচার করা হয়েছিল। আর সেজন্য আরও দুইজন সাংবাদিককেও আসামি করা হয়েছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনের পর দেশটা যেন মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে। কেউ সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারবেন না, সরকারের দুর্নীতি ও অপকর্মের সমালোচনা করতে পারবেন না, মিডিয়ায় সরকারের সমালোচনা প্রকাশ করা যাবে না। সমালোচনা করলেই রাষ্ট্র্রদ্রোহসহ মিথ্যা মামলার খড়গ চালানো হবে। আসলে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী অমানবিক নষ্টবুদ্ধি নিয়ে বিনাভোটে দেশ চালাচ্ছে। গতকাল (সোমবার) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সম্পূর্ণরুপে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও হয়রানীমূলকভাবে বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেছে আদালত। তিনি বলেন, যে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতিকে সরকারি আক্রমণের শিকার হয়ে জোরপূর্বক ছুটিতে পাঠিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয় সেখানে বিরোধী দলের নেতারা সরকারের কী ধরণের নিষ্ঠুর আক্রোশের শিকার হবেন তা সহজেই অনুমেয়। প্রধান বিচারপতিকে হেনস্তার মাধ্যমে বর্তমানে নি¤œ আদালতকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে নির্বাহী বিভাগের আদেশে কিভাবে চলতে হবে। এমনকি সাবেক প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমানের অবদান সম্পর্কে প্রধান নির্বাচন কমিশনার একটি ঐতিহাসিক সত্য উচ্চারণ করাতে তাঁকেও আওয়ামী মন্ত্রী ও নেতারা প্রধান বিচারপতির পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সতর্ক করেছেন।
গোটা দেশটা একব্যক্তির ইচ্ছার শাসনে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, এখন বিরাজমান ২ নং একদলীয় বাকশালের দুঃশাসনে প্রিয় মাতৃভুমি বাংলাদেশ আবারও ক্ষতবিক্ষত। গুম, খুন, অপহরণ, মিথ্যা মামলায় আটক করে নির্যাতন নিপীড়নকে করা হয়েছে বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের নিত্য সঙ্গী। লুটতরাজের রাজনীতির যারা বিরোধীতা করবেন, যারা প্রতিবাদী হবেন তারা হারিয়ে যাবেন, গুম হবেন, গ্রেফতার হবেন, বর্বর নির্যাতনের শিকার হবেন। আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনার দুঃশাসনের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হল বিএনপি তথা জিয়া পরিবার।
তাই তাদের হেনস্তা করতে হবে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিতে হবে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে হবে। তারেক রহমান এর রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই শেখ হাসিনা তাঁকে প্রবল প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করে অসত্য, বানোয়াট, মনগড়া অপপ্রচার ও কুৎসা রটনা করে যাচ্ছেন। তারেক রহমান বারবার শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার শিকার। এর কারণ তারেক রহমান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অনুসৃত পথ অবলম্বন করে সারা বাংলাদেশের তৃণমূলে জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে শক্তিশালী করছিলেন। তারেক রহমানকে ধ্বংস করাটাই যেন এখন আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রীয় নীতি। আর সেই নীতি বাস্তবায়ন করতে আওয়ামী লীগ উঠেপড়ে লেগেছে। কিন্তু চক্রান্তকারীরা কোন দিনই সফল হতে পারে না। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করার চক্রান্তও সফল হবে না।
জনগণের প্রতিবাদী স্রোতকে আটকিয়ে রাখা যাবে না উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, মূঢ় অহমিকার যবনিকাপাত ঘটবেই। দুঃশাসনের কবল থেকে দেশকে রক্ষা করতে গোটাদেশ বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এখন ঐক্যবদ্ধ। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা আওয়ামী লীগের প্রথাগত টেকনিক। এই টেকনিক প্রয়োগ করে নিজেদের পতন ভূমিতলে দ্রুতই আছড়ে পড়বে। তিনি অবিলম্বে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা ও গ্রেফতারী পরোয়ানা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এসময় রিজভী আরও বলেন, গত রোববারসিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ কামারখন্দ উপাজেলায় এক কর্মীর স্মরণসভায় গেলে ফেরার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা কড্ডার মোড়ে তার গাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে আহত এবং গাড়ীবহরের গাড়ীগুলোতে ভাংচুর চালায়।
এ বিষয়ে স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে মামলা গ্রহণ করেনি পুলিশ। রোববার সন্ধ্যা ৬টায় চায়ের দাওয়াতের কথা বলে বিএনপির সহ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল ফারুককে শেরেবাংলা নগর থানায় মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক দেখানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের নামে এখনও তাকে তেজগাঁও জোনের ডিসি কার্যালয়ে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। একজন কৃষিবিদ হিসেবে তিনি সুনামের সাথে শেরেবাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেছেন। সর্বমহলে একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল ফারুকের সুখ্যাতি রয়েছে। শুধুমাত্র বিএনপি’র দায়িত্বশীল একজন নেতা হওয়ার কারণেই আজকে তাকে ভয়াবহ নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হলো। সমাজের কোন স্তর থেকে কেউ যেন সরকারের বিরুদ্ধে সামান্য আওয়াজ যেন তুলতে না পারে সেজন্য চলছে সারাদেশে অমানবিক দমন-পীড়ণ। সেই দমন-পীড়ণের ধারাবাহিকতার আরেকজন শিকার হলেন কৃষিবিদ চৌধুৃরী আবদুল্লাহ আল ফারুক। তিনি বিএনপি’র সহ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল ফারুক এর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ