Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নওগাঁয় পুলিশের অভিযানে আতঙ্কে গাড়ি চালক

| প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা : জীবিকার তাগিদে গ্রামের মানুষ শহরমুখী হচ্ছে। গত ৪ বছরে শহরের মানুষ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় চারগুন। কিন্তু বাড়েনি রাস্তার প্রশস্থতা। অপরকিল্পিত ভাবে শহরের ব্যাটারি চালিত অটোচার্জার (ইজিবাইক), ভ্যান, রিক্সা ও সিএনজি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে শহরের যানজটের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছ। যানজটে ভোগান্তী এবং যানবাহনের শব্দে অতিষ্ট শহরবাসী।
শহরের যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং এবং লাইসেন্স বিহীন গাড়ি অবৈধভাবে চলাচলে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এসমস্যা দূরীকরণে গত ১০দিন থেকে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছেন নওগাঁ ট্রাফিক পুলিশ। এ কয়দিনে প্রায় ৩০০ টি ব্যাটারি চালিত অটোচার্জার (ইজিবাইক), ভ্যান ও রিক্সা আটক করা হয়েছে। এসব গাড়ি নওগাঁ পুলিশ লাইন্স মাঠে রাখা হয়েছে। আটককৃত এসব গাড়ি কোন রকম জরিমানা ছাড়াই শাস্তি স্বরুপ ৩-৪ দিন আটক করে রাখছে পুলিশ প্রশাসন। শহরে যানজট সৃষ্টি না করে মর্মে এসব মালিকদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। আবার ৩-৪ দিন পর গাড়িগুলো ছেড়ে দেয়ার কথা থাকলেও মালিকদের হয়রানি করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
এদিকে মাইকিং করে পূর্ব কোন রকম ঘোষণা ছাড়াই গাড়িগুলো আটক করাই শ্রমিকদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক শুরু হয়েছে। নতুন করে ইজিবাইকগুলো লাইসেন্স ও নবায়ন করতে শ্রমিকরা ছুটছেন নওগাঁ পৌরসভা যানবাহন অফিসে। সেখানে অতিসহজে এবং অল্প সময়ে লাইসেন্স পেতে দালালের কাছে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ৫০০ থেকে হাজার টাকা।
আবার আটক গাড়িগুলো পুলিশ নির্দিষ্ট সময় পর ছেড়ে না দেওয়ায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন গাড়ির মালিকরা। পুলিশের হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিলে এরপর গাড়িগুলো ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। কয়েকদিন ধরে গাড়িগুলো আটকে থাকায় ব্যাটারির সমস্যা হয়ে পড়ছে। এছাড়া কিস্তি থেকে যারা টাকা উত্তোলন করে গাড়ি কিনছে তারাই বেশি সমস্যার মধ্যে পড়েছেন।
আবদুল জলিল নামে এক ইজিবাইকের মালিক বলেন, তার দুইটি গাড়ি আটক করেছিল। ৪ চারদিন পর ছেড়ে দেয়ার কথা থাকলেও পুলিশ ছেড়ে দেয়নি। ৬ দিন হয়রানির পর ট্রাফিক অফিসের এক মুন্সিকে ১ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছেন। কয়েকদিন গাড়ি বন্ধ থাকায় ব্যাটারিও ডাউন হয়ে গেছে।
শহরের খাঁস-নওগাঁ মহল্লার ইজিবাইক চালক নুরুল ইসলাম বলেন, গত দুই মাস আগে বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ৬০ হাজার টাকা কিস্তির উপর নিয়ে ইজিবাইকটি কিনেছিলেন। প্রতিদিন ৬০০-৭০০ টাকা ভাড়া হতো। প্রতিমাসে ৬ হাজার ৯০০ টাকা কিস্তি দিতে হয়। ইজিবাইকের উপর দিয়ে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়াসহ সংসারের সব খরচ চলে। গত ১৬ অক্টোবর শহরের বালুডাঙ্গা থেকে যাত্রী নিয়ে আসার সময় সাকির্ট হাউজের কাছে পুলিশ গাড়িটি আটক করে নিয়ে যায়। এখন ব্যাটারির নষ্ট হয়ে যায় কিনা তা নিয়ে শঙ্খায় আছি। নওগাঁ পৌরসভা যানবাহন ইন্সপেক্টর নুরুল ইমলাম মন্টু বলেন, লাইসেন্সকৃত শহরের ইজিবাইক আছে প্রায় ১ হাজার ৪০০টি। এগুলো নবায়ন করা হচ্ছে প্রতিটি ইজিবাইক ৪০০ টাকা এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স ১৫০ টাকা। নতুন ইজিবাইকের ক্ষেত্রে লাইসেন্স ৫০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। অফিসের বাহিরে যদি কেউ কাউকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে থাকে এ বিষয়টি আমার জানা নেই। শহরে যানজট কমাতে গত ২০১৪ সাল থেকে ব্যাটারি চালিত চার্জার ভ্যান ও রিক্সার লাইসেন্স বন্ধ আছে। নওগাঁ পুলিশ সুপার মো: ইকবাল হোসেন বলেন, মাইকিং করার প্রয়োজন হয়নি এজন্য যে, যারা এটার সাথে সংশ্লিষ্ট তাদের সবাইকে কয়েকবার ম্যাসেজ দেয়া হয়েছে। আটককৃত গাড়ি শাস্তির পর ছেড়ে দেয়ার কথা থাকলেও গাড়ির মালিকদের হয়রানি করা হয় এবং টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে এরকম কোন অভিযোগ আমার কাছে নেই। অনেক মানুষ আছেন যারা যোগাযোগ করে। এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ