বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বেনাপোল অফিস : বেনাপোল বন্দর দিয়ে সপ্তাহে সাতদিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রেখে বাংলাদেশ-ভারত আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য গতিশীল করার কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। ফলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গতি বাড়ানোর দুই দেশের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ শুরু থেকেই ভেস্তে গেল। বেনাপোল বন্দরের প্রচুর যানজট, পণ্যাগারসহ অবকাঠামো সঙ্কট, নতুন ওয়্যারহাউস ও শেড, কার্গো হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতির তীব্র সঙ্কট’র কারণে সাতদিন ২৪ ঘন্টা কার্যক্রম মুলত সফল হচ্ছে না।
সূত্র জানায়, বন্দরে মালামাল রাখার ধারণ ক্ষমতা চাহিদার তুলনায় এমনিতেই অপর্যাপ্ত। এডিবির অর্থায়নে আটটি ইয়ার্ড ভেঙে বড় দুটি ইয়ার্ড নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য আরও কয়েকটি ইয়ার্ড ব্যবহার করা যাচ্ছে না। আগুনে পুড়ে যাওয়ার ক্ষত নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দুটি ইয়ার্ড। অপ্রতুল ও নষ্ট ক্রেন ও ফর্কলিফট সঙ্কটকে আরও তীব্র করে তুলেছে। বন্দরের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার মান নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। ডিজিটাল বাংলাদেশের এই যুগে এখনও ম্যানুয়াল রেজিস্টারে কাজ চলে। কাস্টমস ব্যবস্থা অটোমেটেড হলেও বন্দরের ম্যানুয়াল পদ্ধতির কারণে সেবাগ্রহিতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। একইভাবে কাস্টমসে সিসিটিভি থাকলেও বন্দরে তা নেই। ‘বিশেষ কারণে’ ম্যানুয়াল রেজিস্টার টিকিয়ে রাখা আর সিসিটিভি স্থাপনে কর্তৃপক্ষের অনীহার অভিযোগ রয়েছে। বন্দরের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে পণ্যচুরির স্বার্থে টিকিয়ে রাখার অভিযোগও আছে। বন্দরের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও দুর্বল। বিদ্যমান বেনাপোল-পেট্রপোল সড়কের পশ্চিমপাশের সড়কের সাথে সিডবিøউসি-এর সংযোগ সড়ক নির্মিত হলেও বাংলাদেশ অংশে প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয়নি। এই সড়কের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের আমবাগানে ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের কথা শোনা গেলেও জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি।
বেনাপোল বন্দরের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্দরে প্রায়ই অফিস প্রধান অনুপস্থিত থাকেন। উপ-পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে দিয়ে চলতি দায়িত্ব পালন করানো হচ্ছে। তিনি বন্দরের জরুরি কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার রাখেন না বলে ঢাকার দিকে তাকিয়ে থাকেন। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ঢাকায় অবস্থানকারী অতিরিক্ত সচিব মর্যাদার কর্মকর্তা নিজের শেষ ধাপ পদোন্নতির ব্যাপারে দৌড় ঝাঁপে অধিকাংশ সময় ব্যস্ত থাকেন বলে বন্দর ব্যবহারকারীদের অভিযোগ। এ কারণে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের পদ ভারতের মতো যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা পদায়নের দাবি তাদের। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২৪/৭-এর সুফল হিসেবে গত বছরের তুলনায় এ বছর দুইমাসে মাত্র ১২৮ পণ্যবাহী ট্রাক বেশি খালাস করতে পেরেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। গত অর্থবছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে পণ্যবাহী ১৯ হাজার ২৬০ ট্রাক পণ্য খালাস হলেও এ বছর এই দুই মাসে ১৭ হাজার ২৭০ ট্রাক পণ্য বন্দর থেকে খালাস হয়। অবশ্য বাংলাদেশী ট্রাক গতবছরের তুলনায় দুই হাজার একশ ১৮টি বৃদ্ধি পায়। গতবছর দুই মাসে চার লক্ষ ৬৩ হাজার ৩৭৬ মেট্রিক টন পণ্য খালাস হলেও এ বছর তা বৃদ্ধি পেয়েছে ৪৫ হাজার ৬শ’ মেট্রিক টনে। বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ২৪/৭ ঘণ্টার কারণে রাস্তায় যানজট নেই। ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে দুইটি শেড, ট্রাক টার্মিনাল, ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড, বন্দরের অভ্যন্তরের রাস্তা, ড্রেনেজ নির্মাণের কাজ চলছে। ডিসেম্বরের মধ্যে এসব কাজ শেষ হলে অনেক বেশি সুফল পাওয়া যাবে।
বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার মো. শওকাত হোসেন বলেন, ২৪/৭-এর উদ্দেশ্য ছিল রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও বন্দরের জ্যাম কমানো। আগে প্রতিদিন ৪শ’ থেকে ৫’শ ট্রাক মালামাল প্রবেশ করতো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।