Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহাবিশ্বে দু’মৃত তারকার মধ্যে সংঘর্ষে বিপুল পরিমাণ সোনা প্লাটিনাম ইউরেনিয়াম সৃষ্টি

কভেন্ট্রি টেলিগ্রাফ | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দু’টি মৃত তারকার মধ্যে টাইটানিক সংঘর্ষে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ফলে অপরিমেয় পরিমাণ সোনা, প্লাটিনাম ও ইউরেনিয়াম উৎপন্ন হয়েছে। বিশেষ করে এর ফলে যে পরিমাণ সোনা সৃষ্টি হয়েছে তা পৃথিবীতে যত সোনা আছে তার দ্বিগুণেরও বেশি।
খবরে বলা হয়, মহাজাগতিক সীমানায় এক দূরবর্তী ছায়াপথে একটি সোনার খনি পাওয়া গেছে যেখানে কভেন্ট্রির জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দু’টি অতিমাত্রায় ঘন নিউট্রন তারকার মধ্যে টাইটানিক সংঘর্ষ প্রত্যক্ষ করেছেন।
জানা গেছে, এ সংঘর্ষ এক ধরনের অজ্ঞাত রসায়নে ১৩ কোটি আলোকবর্ষ দূরের একটি অগ্নিগোলক প্লাটিনাম, ইউরেনিয়াম ও অন্যান্য ভারি উপাদানসহ বিপুল পরিমাণ মূল্যবান ধাতু সৃষ্টি করেছে।
বিজ্ঞানীরা পরে বলেছেন, নিউট্রন তারকা সংঘর্ষে উপন্ন ‘কিলোনোভা’ নামে আখ্যায়িত সোনা পৃথিবীর সোনার ২শ’গুণ বেশি। অন্যদিকে উৎপন্ন প্লাটিনামের পরিমাণ পৃথিবীর সমস্ত প্লাটিনামের চেয়ে ৫শ’গুণ বেশি।
দৃশ্যমান ঘটনাটি মহাবিশ্বের বিশেষ কাঠামোতে ঢেউ সৃষ্টি করার মত যথেষ্ট শক্তিশালি এবং তা মহাকর্ষীয় তরঙ্গ সনাক্ত করায় সহায়ক ও গামা রশ্মির উৎসের জবাব।
আবেগাক্রান্ত জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের নতুন অধ্যায় উন্মোচন নিয়ে এবং নতুন বিজ্ঞানের সম্পদ ভান্ডার খুলে যাওয়া বিষয়ে আলোচনা করছেন।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বহু সংস্থার একটি ওয়ারউইক বিশ^বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ড. সামান্থা ওয়েটস বলেন, এ আবিষ্কার তিনটি প্রশ্নের জবাব দিয়েছে যা নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা কয়েক দশক ধরে ধাঁধার মধ্যে নিপতিত ছিলেন। যেমনঃ নিউট্রন তারকারা পরস্পর সম্মিলন ঘটলে কি ঘটে? স্বল্পস্থায়ী গামা-রশ্মি বি¯্ফােরণের কারণ কি? সোনার মত ভারি পদার্থ কোথায় তৈরি হয়?
তিনি বলেন, এক সপ্তাহের মত সময়ের মধ্যে এ তিনটি রহস্যের সব ক’টির সমাধান মেলে।
ওয়ারউইকের আরেকজন বিজ্ঞানী ড. জো লিম্যান বলেন, সোনা বা প্লাটিনামের মত ভারি পদার্থ যা আসলে ভষ্ম, নিউট্রন তারকার সম্মিলনকালীন বিলিয়ন ডিগ্রি তাপমাত্রায় অবশিষ্টাংশে উৎপন্ন হয়।
নিউট্রন তারকা সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটেছে ১৩ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত তুলনামূলকভাবে পুরনো এনজিসি ৪৯৯৩ নামে পরিচিত একটি ছায়াপথে।
নিউট্রন তারকাগুলো হচ্ছে সুবিশাল তারকাগুলোর দগ্ধীভ‚ত অবশেষ্। তার ঘনত্ব এত বেশি যে তাদের এক চামচ পরিমাণ পদার্থের ওজন পৃথিবীতে এক বিলিয়ন টন।
দু’টি পদার্থ যার প্রত্যেকটির ব্যাসার্ধ প্রায় ১২ মাইল, সেগুলো প্রসারিত এবং একে অপরের দিকে কুন্ডলায়িত যাদের মধ্যে চ‚ড়ান্তভাবে সংঘর্ষ ঘটে।
বিজ্ঞানীদের মতে, কোনো পুকুরে পাথর ছুঁড়লে যেমন ঢেউ জাগে তেমনি মহাকর্ষীয় তরঙ্গও আলোর গতিতে মহাজগত জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
কিন্তু কথা হচ্ছে, এ ঘটনা এত দূরে সংঘটিত হয়েছিল যে যখন মহাকর্ষীয় তরঙ্গ মহাশূন্যে তাদের যাত্রা শুরু করেছিল তখন পৃথিবীতে ডায়নোসররা বিচরণ করত।



 

Show all comments
  • Shihab Ahmed ২০ অক্টোবর, ২০১৭, ৩:০২ পিএম says : 0
    সুবহান আল্লাহ!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ