বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নাইমুর রহমান নাবিল : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একযুগে পদার্পন হচ্ছে আজ ২০শে অক্টোবর। তবে ভর্তি পরীক্ষা থাকায় যুগপূর্তি উৎসব হবে ২২শে অক্টোবর। জাঁকজমকপূর্ণ ভাবেই শোভাযাত্রা ও আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে এ দিনটি উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ২০০৫ সালে ২০ শে অক্টোবর জাতীয় সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে শতবর্ষী জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করে সরকার। ২০০৯ সাল থেকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে যাত্রা শুরু করে ১৫৯ বছরের পুরনো এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে আগামী ২২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন হাতে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ওই দিন সকাল ৯টা ১০ মিনিটে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন এবং সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করবেন ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। বেলা সাড়ে ৯টায় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সুসজ্জিত র্যালি বের হবে। ভিসির নেতৃত্বে র্যালীটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে সমাবেত হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রায় সাহেব বাজার মোড় হয়ে ক্যাম্পাসে এসে শেষ হবে। সকাল ১১ টায় আলোচনা সভা ও সঙ্গীতানুষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবন চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। ক্যাম্পাস মাতাবেন ব্যান্ডদল দলছুট।
১৮৫৮ সালে পুরান ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত ‘ব্রাহ্ম স্কুল’টিকে ১৮৭২ সালে জগন্নাথ স্কুল রুপে রুপান্তর করেন টাঙ্গাইলের বালিয়টির জমিদার জগন্নাথ রায় চৌধুরীর ছেলে কিশোরীলাল চৌধুরী। পরে এটি কলেজে উন্নীত করা হয় এবং ২০০৫ সালে আইন পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত দেশের সর্ববৃহত কলেজ হিসাবে খ্যাতি ছিল জগন্নাথের। বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার পর চার বছর পেরিয়েছে নানা জটিলতায়। অবশেষে ২০০৯ সালে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আত্মীভূত করার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। তবে প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছর পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয়ভার কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হয়েছে। ২০১১ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে কালো আইন হিসাবে খ্যাত ২৭(৪) ধারা বিলুপ্ত পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে জবির রুপ লাভ করে। বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি অনুষদে ৩৬টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউটে রয়েছে। ৬৩৮ জন শিক্ষক ৬০৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ১৯ হাজার শিক্ষার্থীদের পদচারণায় ক্যাম্পাস মূখরিত থাকে। এছাড়া বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৯ জন এমফিল এবং ৪৩ জন পিএচডি গবেষনা করছেন। এবং প্রায় শতাধিক শিক্ষক বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি ও পিএচডি ডিগ্রির জন্য অবস্থান করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫ সালের আগে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কয়েকটি হল, হোস্টেল ও ডরমেটরি ছিল। দিন দিন এসব হলের অধিকাংশই বেদখল হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে প্রতিষ্ঠার পর শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলের জন্য একাধিকবার আন্দোলন করে। ২০১৩ সালে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ছাত্রীদের জন্য এক হাজার আসন বিশিষ্ট ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ হলের ভিত্তি প্রস্তর করেন। বর্তমানে ১৬ তলা বিশিষ্ট হলটির নবম তলার ছাদ ঢালাইয়ের পাশাপাশি হলের রুম নির্মাণ ও ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। এছাড়া এ বছরের ১১ জুলাই একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আবাসিক সমস্যাসহ সব সমস্যা সমাধানে কেরানীগঞ্জে প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করে একটি সমন্বিত প্রকল্প প্রস্তাবনার পরামর্শ দেন। অতি দ্রæত জমি অধিগ্রহণ ও প্রকল্প বাস্তবায়নে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য নসরুল হামিদ বিপুকে দায়িত্ব দেন।
গত ১৩ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রনালয় কেরানীগঞ্জের টেগারিয়া ইউনিয়নের পশ্চিমদা মৌজায় দাগ নম্বর উল্লেখ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ২০০ একর জমি অধিগ্রহন করার অনুমোদন দেয়। রাজউক ও ভূমি মন্ত্রনালয়ের অনুমোদনের পর জেলা প্রশাসক এ বছরের শেষের দিকে জমিটি অধিগ্রহণ করবেন। এ প্রকল্পের অধীনে কেরাণীগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল, শিক্ষকদের আবাসিক ভবন, ভিসি ভবন, টিএসসি, লাইব্রেরি, গবেষনাগার, মেডিকেল সেন্টার, খেলার মাঠ, পুকুর, ক্যাফেটেরিয়া, অডিটোরিয়াম, জিমনেশিয়াম, সুইমিং পুলসহ পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সবই নির্মাণ করা হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়। এ বিষয়ে জবি ভিসি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি নানা প্রতিকুলতা পেরিয়ে জ্ঞান অর্জন এবং বিতরণের ক্ষেত্রে অগ্রগামি ভুমিকা রাখছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পুর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাস প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। একাডেমিক ক্ষেত্রে স্বল্প সময়ের মধ্যে ইর্ষণীয় সাফল্য এসেছে। সব ক্ষেত্রেই দ্রæত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।