Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

দুর্নীতিবাজ সহকারী প্রকৌশলীকে এক বছরে দুই বার বদলী দুই বারই আদেশ রহিত

নরসিংদীর পাউবো অফিসে ভজকট

| প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী থেকে : অনিয়ম, দুর্নীতির জনক হিসেবে পরিচিত পানি উন্নয়ন বোর্ড, নরসিংদীর সহকারী প্রকৌশলী মোঃ দ্বীন ইসলামের তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ আবারো রহিত করা হয়েছে। গত ১২ অক্টোবর তাকে নরসিংদী থেকে তাৎক্ষনিক বদলীর আদেশ জারী করার ৫ দিনের মাথায় গত মঙ্গলবার তার বদলীর আদেশ স্থগিত করা হয়েছে। এ নিয়ে গত ১ বছরে তাকে দুই বার বদলীর আদেশ জারী করা হয় এবং রহস্যজনক কারণে দুই বারই বদলীর আদেশ রহিত করা হয়। এর আগে ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে তাকে তাৎক্ষণিক বদলী করা হয়। আবার মাত্র ৪৮ ঘন্টার সময়ের মধ্যে তার বদলীর আদেশ বাতিল করা হয়। সহকারী প্রকৌশলী দ্বীন ইসলামের দ্বিতীয় দফা বদলীর আদেশ রদের ঘটনায় পানি উন্নয়ন বোর্ড’র কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ঠিকাদারদের মধ্যে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়। তোলপাড় শুরু হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে। এই মুহূর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডে আলোচনা সমালোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয়েছেন দ্বীন ইসলাম। জানা গেছে, সহকারী প্রকৌশলী দ্বীন ইসলাম সিলেটের সুনামগঞ্জে উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেন। সেখান থেকে বদলী হয়ে নরসিংদীতে যোগদান করে কয়েক বছর উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে কাজ করেন। স্বল্প বেতনভোগী একজন কর্মচারী হয়েও তিনি তখনই বাড়ী গাড়ীর মালিক হয়ে যান। নরসিংদীতে চাকুরীকালে রাজনৈতিক মহলের আশির্বাদপুস্ট হয়ে হঠাৎ সহকারী প্রকৌশলী বলে পদোন্নতী লাভ করে। তিনি শুক্র ও শনিবার সহ সপ্তাহের বেশীরভাগ দিনই উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীল গাড়ীটি (ঢাকা-মেট্রো গ-১২১২) তার ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতে শুরু করেন। বছরে গাড়ীর জন্য ৭৫ হাজার টাকা ব্যয় বরাদ্দ থাকলেও তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায় করছেন গাড়ীর নামে। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে গাড়ী মেরামত দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার পদ মর্যাদার জন্য এয়ারকুলার বরাদ্দ না থাকলেও তিনি অফিসের দুতলার এক কক্ষে এয়ারকুলার লাগিয়ে ব্যবহার করছেন। তিনি স্থানীয় একটি রাজনৈতিক মহলের দোহাই দিয়ে প্রকল্পের টাকা কোটেশন ও ভাউচারে ব্যয় করছে। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ডিপিএম ও কোটেশন পদ্ধতিতে ভূয়া কাজ দেখিয়ে ৬৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে। নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী, করিমপুর ও শিবপুরে জরুরী মেরামতের নামে তার পছন্দের ঠিকাদারদের নাম দিয়ে ডিপিএম পদ্ধতিতে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার কাজ শুরু করেছেন। এসব জরুরী কাজ না করেই টাকা আত্মসাতের সকল পথ উন্মুক্ত করেছেন। ঠিকাদারদের অভিযোগ সহকারী প্রকৌশলী দ্বীন ইসলাম নিজেই বেনামে কোটি কোটি টাকার কাজ করছেন। উপ-সহকারী ও সহকারী পদে চাকুরী করে ঢাকার উত্তরায় ২টি আলিশান বাড়ী, গাড়ী, ঢাকার মৌচাক মার্কেটে আত্মীয়-স্বজনের নামে দোকানসহ প্রচুর সম্পদ রয়েছে। দ্বীন ইসলাম মুন্সীগঞ্জের মাওয়া রোর্ডের পাউবো’র জায়গা লিজ নিয়ে গরুর খামার প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই গরুর খামারে প্রতি সপ্তাহেই গরুর খাবার পৌছানো হয়। এ ধরনের বহুবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে তাকে তাৎক্ষনিকভাবে বদলী করা হয়। আবার ৪৮ ঘন্টার ব্যবধানে একই ব্যক্তির আদেশে তা বাতিল করা হয়। ব্যপক দুর্নীতি ও পাউবো’র কর্মকর্তা কর্মচারী ও ঠিকাদারদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে তাৎক্ষনিকভাবে বদলী করা হয়। কিন্তু মাত্র ৫ দিনের মাথায় তার দ্বিতীয় বদলীর আদেশও রহিত করা হয়। আর এ নিয়ে ঠিকাদার মহলসহ পাউবো’র কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ