Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্কুলের লাইব্রেরিতে পরীক্ষা দিলো প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকার ছেলে

| প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা : মাদারীপুরে গত রোববার রাতে জেলার ঐতিহ্যবাহী ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভিতরে লাইব্রেরী খুলে পরীক্ষা দিলো প্রধান শিক্ষক-সহকারী শিক্ষিকার ছেলে। এ সময় ছাত্রদের হাতেনাতে ধরে ফেলে এলাকাবাসী। জানা গেছে, ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রদের টেস্ট পরীক্ষা চলছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলামের ছেলে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র জায়েদ, সহকারী শিক্ষিকা কবিতা রানী মালোর ছেলে অভ্র ও তাদের বন্ধু সাকিল বাসা থেকে চাবি এনে রাতে স্কুলের লাইব্রেরী খুলে নিজেরা প্রশ্ন ও খাতা বের করে লিখতেছিল। এসময় বিদ্যালয়ের নাইটগার্ড ও দপ্তরী বিষয়টি দেখেও প্রধান শিক্ষকের ছেলে বলে কিছুই বলেননি। পরে এলাকার লোকজন স্কুলে গিয়ে বিষয়টি দেখতে পেয়ে ঐ তিন ছাত্রকে খাতায় লেখা অবস্থায় হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এসে এলাকাবাসীর কাছ থেকে ছাত্রদের নিয়ে যায়। স্কুলের প্রতিবেশি সাবেক ছাত্র ও জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জাহিদ গৌড়া বলেন, আমরা কয়েকজন বন্ধু স্কুলের পাশেই ছিলাম। পরবর্তীতে শুনতে পেলাম লাইব্রেরী খুলে ছাত্ররা পরীক্ষা দিচ্ছে। এসে দেখলাম প্রধান শিক্ষকের ছেলে ও অন্য আরেক শিক্ষিকার ছেলে ও তাদের এক বন্ধু লাইব্রেরীতে বসে সকালের পরীক্ষা রাতে দিচ্ছে। আমরা তাদেরকে হাতেনাতে ধরে ফেললাম। পরে শিক্ষকরা এসে ছাত্রদের নিয়ে যায়। আমি এঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এ সব কলঙ্কিত ছাত্রদের শাস্তির দাবি জানাই। স্কুলের সাবেক ছাত্র ও জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক সাজ্জাত হোসেন কাওসার বলেন, এঘটনা শুনে এসে দেখলাম তিন ছাত্রের মহাকান্ড। আমরা এই স্কুলে পড়ালেখা করেছি। জেলার মধ্যে এই স্কুলের অনেক সুনাম রয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকার ছেলেরা এ রকম ঘটনা ঘটাতে পারে তা বিশ^াস করতে পারছি না। এ ঘটার সময় দিনের বেলায় যে দপ্তরী ঢিউটি করে সে স্কুলে উপস্থিত ছিলো। তারতো রাতে স্কুলে উপস্থতি থাকার কথা নয়। আমার কাছে মনে হয় এ ঘটানার সাথে ঐ দপ্তরী জড়িত আছে। এ ঘটানার সাথে ছাত্র, শিক্ষক, নাইট গার্ড, দপ্তরীসহ যারাই জড়িত থাকুক তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।
স্কুলের এক ছাত্রের অভিভাবক বলেন, আমি স্কুলের পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছিলাম। তখন স্কুলের ভিতরে ছাত্রদের কথার আওয়াজ শুনে ভিতরে গিয়ে দেখি প্রধান শিক্ষকের ছেলেসহ তিন জন এলাকার কয়েকজন যুবক পরীক্ষার খাতা ও প্রশ্নসহ হাতে নাতে ধরে। বিষয়টি দেখে আমি আশ্চার্য হয়ে গেলাম। রাতে যেখানে স্কুল বন্ধ সেখানে ছাত্ররা গিয়ে লাইব্রেরী খুলে পরীক্ষা দিচ্ছে এটা কেমন বিষয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলামের বলেন, আমি রোববার ছুটিতে ছিলাম। রাতের এঘটনা শুনেছি। আমার ছেলে ও অন্য এক শিক্ষিকার ছেলেসহ আরেক ছাত্র ছিল। গত সোমবার আমি স্কুলে এসে ছাত্র হিসেবে তাদের শাস্তি দিয়েছি। তিন ছাত্রের রোববারের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে ও গত সোমবারের পরীক্ষা দিতে দেইনি। পরীক্ষা দেয়া থেকে তাদের বিরত রাখা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ