রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
আবু হেনা মুক্তি : উপমহাদেশের প্রখ্যাত ওলি খানজাহান আলী (রহ:) এর পূর্ণ্যভ‚মী বাগেরহাট সদরে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয়ই এ আসনটি তাদের ঘরে নিতে মরিয়া। তবে বৃহৎ দু’দলেরই রয়েছে গ্রুপিং-দ্ব›দ্ব এবং পাল্টাপাল্টি অভ্যন্তরীণ বিষোদ্গার। জাতীয় পার্টির তেমন কোনো সংগঠন নেই। জামায়াতে ইসলামী এই মুহূর্তে নিশ্চুপ। বাগেরহাট শহর ও জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইতোমধ্যে শুরুও হয়েছে তোড়জোড়। গুরুত্ব বাড়তে শুরু করেছে তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের। আগাম প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর ঘর গোছানো ও জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে ব্যস্ত বিএনপি। নির্বাচনী মাঠে নেমেছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এ ছাড়া সব দলের সবুজ সঙ্কেত পেতে অব্যাহত চেষ্টা চলছে প্রার্থীদের। সঙ্গত কারণে একদিকে তারা যেমন কেন্দ্রের নেতাদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছেন, ঠিক তেমনি করেই তৃণমূল নেতাকর্মী থেকে শুরু করে আমজনতার সাথে মতবিনিময় করছেন। এমন কি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যক্তিগত রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা।
সূত্র মতে, বিএনপি প্রার্থী এম এ সালাম ২০০৮ সালের সাবেক প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সভাপতি। তিনি বিএনপিতে যোগদান না করেই এই আসনে প্রার্থী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন। এই আসনের সাবেক এমপি ছিলেন ধনকুবের এম এ এইচ সেলিম। যিনি সিলভার সেলিম হিসেবে এলাকায় পরিচিত। বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা সেলিম বা তার ভাই সালামের সাথে নেই। এম এ এইচ সেলিমের সহযোগী, যোগদানকারী ও স্বীকৃত দুর্নীতিবাজরা তার পক্ষে। অরাজনৈতিক ও অতিমাত্রায় চাটুকারনির্ভর হওয়ার কারণে জেলা বিএনপি দ্বিধা-বিভক্ত ও সঙ্ঘাতময় হয়েছে। এই আসনে তিনি প্রার্থী হলে বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা নিষ্ক্রীয় হয়ে যেতে পারে এবং নির্বাচিত হলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিএনপির নেতাকর্মীরা আবারো নির্যাতিত হবে বলে তারা মনে করে।
এই আসনের বিএনপির অপর শক্ত প্রার্থী মনিরুল ইসলাম খান। তিনি জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-দফতর সম্পাদক। ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সহকারী একান্ত সাচিব হিসেবে দীর্ঘ ৮-৯ বছর কাজ করার পাশাপাশি এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন এবং বহু বেকারকে কর্মসংস্থান করে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন। জেলা বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা তার পক্ষে সুদৃঢ় অবস্থান আছে। ১/১১-এর অসাংবিধানিক সরকারের প্রলোভন উপেক্ষা করায় নির্যাতনের শিকার হন। তিনি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার আসামি হওয়ায় এলাকাবাসী মনে করেন, এই আসনে তিনিই নমিনেশন পাবেন।
অপরদিকে, বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের জাতীয় সংসদ সদস্য মীর শওকত আলী বাদশা এবারো মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি এলাকায় জোরেশোরে কাজ করছেন। তিনি আগে থেকেই নির্বাচনী এলাকায় তোরণ নির্মাণ, প্যান, ফেস্টুন, ব্যানার ইত্যাদি দিয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগের সংগঠনকে তৃণমূলপর্যায়ে শক্তিশালী করেছেন তিনি। ১৫ আগস্ট শোক দিবস, বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তন দিবসসহ জাতীয় ও দলীয় সব কর্মকান্ডে তার পদক্ষেপ ছিল চোখে পড়ার মতো। সব ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডপর্যায়ে দলীয়ভাবে তিনি অত্যন্ত শক্তিশালী।
এ ছাড়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুজ্জামান টুকু এই আসনের শক্ত প্রার্থী। তিনি আওয়ামী লীগের একজন পরীক্ষিত নেতা। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকার সুবাদে বাগেরহাট সদর ও কচুয়া উপজেলায় রাস্তাঘাটসহ মসজিদ-মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামজিক সংগঠনের উন্নয়নে তার সম্পৃক্ততা চোখে পড়ার মতো। কেন্দ্রীয়ভাবেও তার লবিং বেশ জোরালো। এ ছাড়া নির্বাচনী দৌড়ে পিছিয়ে নেই পৌরমেয়র খান হাবিবুর রহমান। এখন থেকেই বেশ জোরেশোরে কাজ করে যাচ্ছেন নির্বাচনী মাঠে। বর্তমান এমপির বিরোধী গ্রæপের শক্ত প্রার্থী জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি পৌরসভার প্যানেল মেয়র তালুকদার আব্দুল বাকী মনোনয়নপ্রত্যাশী। তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের আর্শীবাদ পেতে দৌড়ঝাপ করছেন। তবে এ আসনে শেখ পরিবারের তরুণ প্রজন্ম প্রার্থী হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। দলীয় কোন্দল মেটাতে শীর্ষ নেতারা এই পথ বেছে নিতে পারেন। অপরদিকে, জাতীয় পার্টির থেকে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক মো. রুহুল আমিন আর জামায়াতে ইসলামীর তোড়জোড় লক্ষ করা যাচ্ছে না এই মুহূর্তে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।