পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় স্টিলের লাল-সবুজ কোচ। ২০টি কোচ অপেক্ষা করছে দর্শনা সীমান্তের কাছাকাছি ভারতের রানা ঘাটে। আগামী ২২ মার্চ এগুলো দর্শনা হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে বলে রেল সূত্রে জানা গেছে। অত্যাধুনিক ও বিলাসবহুল কোচগুলো রেলওয়ের ব্রডগেজের জন্য তৈরী। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় চেক আপের পর এগুলো পরীক্ষামূলকভাবে আন্তঃনগর ট্রেনের সাথে যুক্ত করা হবে। রেল সূত্র জানায়, এভাবে পর্যায়ক্রমে ভারত থেকে মোট ১২০টি কোচ আসবে ব্রডগেজের জন্য। মিটার গেজের একশ’টি কোচ আসবে ইন্দোনেশিয়া থেকে। ভারতের পাঞ্জাবের কাপুরথালা কারখানায় তৈরী হচ্ছে কোচগুলো। অস্ট্রিয়ান টেকনোলজিতে তৈরী বিলাসবহুল এই কোচগুলো লিঙ্ক হোপম্যান বুশ (এলএইচবি) ব্রান্ডের। ভারতের বিলাসবহুল ‘রাজধানী এক্সপ্রেস’ ও ‘শতাব্দী এক্সপ্রেস’ ট্রেনে এই কোচগুলো ব্যবহার করা হয়। এলএইচবি কোচের চেয়ার ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরা অত্যন্ত বিলাসবহুল। এ ছাড়া এবারই প্রথম শোভন চেয়ার শ্রেণিতে থাকছে খাবার মজুদের (প্যানট্রিকার) স্থান এবং নামাজের জায়গা। এতে করে যাত্রীরা খাবারের অর্ডার দেয়ার সাথে সাথে খাবার সরবরাহ করা সম্ভব হবে। খাবারের কোচের (বুফে কার) জন্য দূরে যেতে হবে না। থাকছে নামাজের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা। যেখানে যাত্রীরা নামাজ পড়ার সুযোগ পাবেন। সূত্র জানায়, ব্রডগেজের জন্য তৈরী ১২০টি কোচের মধ্যে শোভন চেয়ার শ্রেণির ৩৪টি কোচ থাকছে। এর ৩৪টির মধ্যে ১৭টি কোচে খাবার মজুদের স্থান (প্যানট্রিকার) থাকবে। বাকী ১৭টিতে থাকবে নামাজের জায়গা। অর্থাৎ যে কোচে খাবার মজুদের ব্যবস্থা থাকবে সেখানে নামাজের জায়গা থাকবে না। যাত্রীদের সুবিধার্থে এই দুই ধরনের কোচ পর পর সংযোজন করা হবে। যাতে দুই ধরনেরই সুবিধা পায় যাত্রীরা। সূত্র জানায়, যাত্রীদের বিলাসবহুল সেবা প্রদানের জন্য ট্রেনে বিদ্যুৎ সরবরাহ নির্বিঘœ করা জরুরী। বিষয়টা মাথায় রেখে লাল-সবুজ স্টিল কোচের বহর সাজানো হয়েছে। তাতে প্রতিটি ট্রেনের সামনে এবং পেছনে দুটি করে পাওয়ার কার থাকবে। বর্তমানে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে একটাই পাওয়ার কার ট্রেনের মাঝখানের অংশে থাকে। অন্যদিকে, এসি বার্থ এবং এসি চেয়ার শ্রেণিগুলো হবে অত্যন্ত বিলাসবহুল আরামদায়ক। বার্থগুলোর সেবার মান হবে অনেকটা তিন তারকা হোটেলের মতো। খাবারের পাশাপাশি বই পড়ার ব্যবস্থাও থাকবে। এসির পাশাপাশি ননএসি বার্থ এবং প্রথমশ্রেণিও থাকবে। এসি-ননএসি চেয়ারেও যাত্রীরা আরাম করে ঘুমাতে পারবেন।
রেল সূত্র জানায়, এ বছরের মধ্যে রেলের বহরে যোগ হচ্ছে বিলাসবহুল ২৭০টি কোচ। বাংলাদেশের পতাকার সঙ্গে মিল রেখে স্টেইনলেস স্টিলের কোচগুলোর রঙ নির্ধারণ করা হয়েছে লাল-সবুজ। ২৭০টি কোচের মধ্যে ১৫০টি কোচ আনা হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া এবং ১২০টি আসছে ভারত থেকে। মিটার গেজের জন্য একশ’টি এবং ব্রডগেজের জন্য ৫০টি কোচ আসবে ইন্দোনেশিয়া থেকে। ভারত থেকে ১২০টি কোচ সবগুলোই ব্রডগেজের জন্য। বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে দুটি দেশের কোচই স্টেইনলেস স্টিলের তৈরী। বিলাসবহুল, আরামদায়ক, টেকসই এবং রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম। ওজনে অপেক্ষাকৃত হালকা বলে গতিবেগও বেশি। কোচগুলো রেলের বহরে যুক্ত হলে ট্রেনের গতি ও যাত্রীসেবার মান দুটোই বাড়বে।
সূত্র জানায়, রেলওয়ের যাত্রীসেবার মান আধুনিকায়ন, নিরাপদ ও আরামদায়ক করার লক্ষ্যে ২৭০টি নতুন যাত্রীবাহী কোচ ও ১০টি ইঞ্জিন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গত বছরের নভেম্বর মাসে পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এজন্য পৃথক দুই প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। অনুমোদিত প্রকল্প দুটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ১শ’ আট কোটি টাকা। এ ব্যয়ের মধ্যে সরকারের ৫৭৪ কোটি টাকা। বাকি ১ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রকল্প সাহায্য হিসেবে দেবে। প্রকল্প দুটির মধ্যে ১ হজার ৩৭৪ কোটি টাকা বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য মিটারগেজ এবং ব্রডগেজ ‘প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ’ নামক প্রকল্পের আওতায় ২৭০টি কোচ কেনার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া কোচগুলো ধুয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ২টি ট্রেন ওয়াশিং প্ল্যান্ট এ প্রকল্পের আওতায় কেনার পরিকল্পনা নেয়া হয়। একনেকের ওই সভায় ৭৩৪ কোটি টাকার বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য লোকোমোটিভ রিলিফ ক্রেন এবং লোকোমোটিভ সিমুলেটর সংগ্রহ নামক অপর একটি প্রকল্পের আওতায় ১০টি ইঞ্জিন, ৪টি অ্যাকসিডেন্ট রিলিফ ক্রেন এবং একটি লোকোমোটিভ সিমুলেটর কেনার সিদ্ধান্ত হয়।
সূত্র জানায়, ইন্দোনেশিয়ার কোচগুলো বিলাসবহুল এবং এগুলোর হুইল (চাকা) সিয়াট কোম্পানীর। স্টেইনলেস স্টিলের তৈরী কোচগুলো অপেক্ষাকৃত হালকা। চলাচলের সময় এগুলো কোনো শব্দ করবে না। ওজন কম হওয়ায় এগুলো টানতে ইঞ্জিনের শক্তি কম লাগবে। এতে করে এগুলোর গতিবেগ হবে ঘন্টায় ১৬০ কিলোমিটার। দীর্ঘস্থায়ী কোচগুলো রক্ষণাবেক্ষণের খরচও খুব কম। জানা গেছে, রেলওয়ের মিটার গেজে বর্তমানে চলার উপযোগী ১ হাজার ১৬৫টি যাত্রীবাহী কোচ আছে। এর মধ্যে ৫৯১টির অবস্থা ভালো নয়। এ কারণে বাংলাদেশ রেলওয়ে আরামদায়ক ও নিরাপদ যাত্রীসেবা দিতে পারছে না। সে কারণে মিটার গেজের জন্য বেশি কোচ আনা হচ্ছে। অন্যদিকে, ব্রড গেজে চলার জন্য রেলওয়ের ৩২৪টি কোচ রয়েছে, যার মধ্যে ৭৮টির অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।