পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বিকল্পধারা বাংলাদেশ ৯ম জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল নিয়ে নির্বাচনকালিন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে। সেই সাথে নির্বাচনের একমাস আগে সেনাবাহিনী মোতায়েনসহ নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ১৩ দফা লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির নিয়মিত সংলাপের অংশ নিয়ে মঙ্গলবার সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারার সঙ্গে ইসির সংলাপ হয়। এ সময় দলটির পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব দেয়া হয়।
নিম্ন বিকল্পধারার ১৩ দফা প্রস্তাব তুলে ধরা হলো-
১। নির্বাচন কমিশনকে জাতির পূর্ণ আস্থা অর্জন করা প্রয়োজন : একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পূর্বশর্তই হচ্ছে একটি নিরপেক্ষ রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাবমুক্ত একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। বিকল্পধারা বাংলাদেশ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের উপর এটুকু আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করতে চায় যে, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারগণ একটি সাংবিধানিক পদের মর্যাদাপূর্ণ আসনে আসীন থেকে অবশ্যই তাঁদের ওপর জাতির যে প্রত্যাশা তা পূরণে নিরপেক্ষ থাকবেন। এ ব্যাপারে তাদের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে এবং বিকল্পধারার পক্ষ থেকে তাদের প্রতি সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করছি।
কিন্তু একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনকে নিজস্ব লোকবলের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন থেকে লোকবল সংগ্রহ করে নির্বাচন পরিচালনা করতে হয়। সে সমস্ত লোকবল কতটুকু নিরপেক্ষ এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হবে- তা কমিশন কীভাবে নিশ্চিত করবেন? কারণ নির্বাচন শেষে নির্বাচনকালীন অনিয়মের সকল দায়-ভার কমিশনকেই গ্রহণ করতে হবে।
এ ব্যাপারে আমাদের প্রস্তাবনাসমূহ
(ক) প্রচলিত বিধানে জেলা প্রশাসকগণ পদাধিকার বলে স্ব স্ব জেলায় রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কিন্তু অধিকাংশ জেলা প্রশাসকই রাজনৈতিক বিবেচনায় নিযুক্ত হয়ে থাকেন এবং তারা রাজনৈতিক প্রভাব এর কারণে নিরপেক্ষ থাকতে পারেনা। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলোর আমলে জেলা প্রশাসকগণ নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে আসেন, তদ্রূপ জেলা প্রশাসকগণ নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচন কমিশনের অধীনে দায়িত্ব পালন করবেন।
(খ) প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিং অফিসারগণ যে জেলায় ভোটার হবেন তাকে সেই জেলার দায়িত্ব দেওয়া যাবে না।
২। ভোটার তালিকা : ভোটার তালিকা নির্ভুল এবং হালনাগাদ করতে হবে। প্রয়োজনে সামরিক বাহিনীর সাহায্য নিতে হবে।
৩। সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ : প্রতিবারই জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে কমিশন কর্তৃক কিছু কিছু সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এতে বিভিন্ন বিতর্ক এবং জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এ মুহূর্ত থেকে আর কোনো সীমানা পুনঃনির্ধারণের প্রয়োজন নেই। জনপ্রতিনিধিদের একটি নির্ধারিত এলাকায় বিশ্বস্ততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য এটা প্রয়োজন।
৪। প্রার্থীর যোগ্যতা/ বৈধতা : নমিনেশন পেপার যাচাই প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হতে হবে এবং প্রত্যেক প্রার্থীকেই সমান মাপকাঠিতে বিচার করতে হবে।
৫। নির্বাচনী প্রচারণা
(ক) সব প্রার্থীর সমান সুযোগ থাকতে হবে।
(খ) কোনো সরকারি এবং প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি কোনো প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ গ্রহণ করতে পারবেন না।
(গ) জনসভা, মিছিল ইত্যাদি সন্ত্রাসমুক্ত- এটা নিশ্চিত করার জন্য দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৬। ভোট কেন্দ্র
ক) আমরা মনে করি ভোট কেন্দ্র নির্ধারণ সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। এ প্রক্রিয়ায় কোনো দলীয় বা প্রশাসনিক বা প্রার্থীর প্রভাবমুক্ত থাকার জন্য নির্বাচন কমিশনের অবস্থান সুদৃঢ় হতে হবে।
পাতা : ২
(খ) নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের সাথে আলোচনা ক্রমে তা করতে হবে।
(গ) সুষ্ঠু ভোট দানের স্বার্থে প্রতিটি বুথে ভোটার-এর সংখ্যা ৩০০ হতে ৫০০ এর বেশি হতে পারবে না।
৭। সেনাবাহিনী : নির্বাচনের ১ মাস পূর্বে সেনাবাহিনীকে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত রাখতে হবে। সেনা বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনের দিন ভোটার ও প্রার্থীদের নিরাপত্তা বিধান করবে। ভোট শেষে ১৫ দিন পর্যন্ত শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত রাখতে হবে।
৮। ভোট গ্রহণের দিন
(ক) প্রতি ভোট কেন্দ্রের ভিতরে ৩-৫ জন পুলিশ ও সেনা বাহিনীর ৩-৫ জন সদস্যকে নিয়োজিত রাখতে হবে।
(খ) ভোটার কার্ড ব্যতীত অন্য কোনো পরিচিতিতে ভোটার ভোট প্রদান করতে পারবে না।
(গ) ভোট কেন্দ্রের ভিতর প্রার্থীর কোনো এজেন্ট বা প্রতিনিধি থাকার পদ্ধতি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করতে হবে।
(ঘ) ভোট কেন্দ্রের প্রাঙ্গণে কোনো প্রার্থী অফিস স্থাপন করতে পারবে না এবং প্রার্থীর ব্যাজ পরিহিত কোনো প্রতিনিধি থাকবে না।
(ঙ) প্রার্থীর প্রতিনিধিগণকে কেন্দ্র থেকে কমপক্ষে ২০০ গজ দূরে অবস্থান করার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৯। না ভোট : পূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকারের স্বার্থে ব্যালট পেপারে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নামের পরেও ‘না ভোট’- এর বিধান থাকতে হবে। সর্বোচ্চ ভোট প্রাপ্তির চেয়ে না ভোটের সংখ্যা বেশি হলে সেই ক্ষেত্রে সেই আসনে ৯০ দিনের মধ্যে পুনঃ: ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে।
১০। ভোট গণনা
(ক) ভোট প্রদান শেষ হওয়ার পর পরই সব প্রার্থীর প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ভোট গণনা শুরু করতে হবে।
(খ) ফলাফল গণনা এ সব প্রার্থীর প্রতিনিধির স্বাক্ষর থাকতে হবে।
(গ) ভোটের ফলাফল ভোটকেন্দ্রেই ঘোষণা দিতে হবে।
(ঘ) ফলাফল ঘোষণাপত্রে উপস্থিত পুলিশ, সেনা প্রতিনিধি ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকের স্বাক্ষর থাকতে হবে।
১১। অভিযোগের নিষ্পত্তি : নির্বাচনকালীন সময়ে কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ উত্থাপিত হলে স্ব স্ব সংসদীয় আসনেই কমিশন কর্তৃক “বিশেষ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল” এর মাধ্যমে নির্বাচনের অনূর্ধ্ব ৬ মাসের মধ্যে সে অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে হবে।
১২। নির্বাচনে যেকোনো পর্যায়ে যেকোনো নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা / কর্মচারী নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাঁধা প্রদান করলে অথবা নিরপেক্ষ নির্বাচন বিরুদ্ধ / বিতর্কিত কাজ করলে তার / তাদের বিরুদ্ধে একটি বিশেষ আদালতে / ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ আনা যাবে। যেহেতু এরূপ কর্মকাণ্ড একটি রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যায়, সেহেতু এটি একটি দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হোক। এর জন্য অবিলম্বে একটি অর্ডিন্যান্স প্রণয়ন করা হোক।
১৩। নির্বাচন অনুষ্ঠানে যারা বিভিন্ন পর্যায়ে পরিচালনা করবেন :
(ক) নির্বাচন কমিশন সদস্যবৃন্দ
(খ) জেলা প্রশাসক
(গ) জেলার প্রধান বিচারক
এবং প্রত্যেক নির্বাচনী কেন্দ্রে যারা দায়িত্ব পালন করবেন :
ক) ইউএনও
খ) ওসি
গ) প্রিসাইডিং অফিসারবৃন্দ
ঘ) দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ,
ঙ) সেনাবাহিনীর সদস্যবৃন্দ।
তারা জনসমক্ষে প্রকাশ্যে পবিত্র কোরআন/গীতা/বাইবেল ও ত্রিপিটক ছুঁয়ে নিরপেক্ষতা ও আন্তরিকতার শপথ নিবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।