পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়া থেকে রাশিয়া তার বাহিনী প্রত্যাহার শুরু করেছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের জঙ্গি বিমানসমূহের প্রথম গ্রুপটি গতকাল সকালে সিরিয়ার হেমেইমেন ঘাঁটি ত্যাগ করেছে।
রাশিয়া সোমবার এক আকস্মিক ঘোষণায় জানায়, তারা সংঘাত থেকে তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করে নেবে। ঠিক একই রকম এক আকস্মিক ঘোষণা দিয়ে সেপ্টেম্বরে সিরিয়ায় তারা বিমান আক্রমণ শুরু করেছিল। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন সোমবার বলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সশস্ত্র বাহিনীকে যে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল সামগ্রিকভাবে সেই লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে।
তবে সমালোচকরা বলছেন, রাশিয়ার ঘোষিত লক্ষ্য সিরিয়ায় আইএসের মতো সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকারের সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। তারা বেসামরিক এলাকাগুলোতে বোমাবর্ষণের ঘটনাগুলোর কথা উল্লেখ করেন। তাদের মতে, সিরিয়ায় রাশিয়ার বোমাবর্ষণের প্রধান উদ্দেশ্য তার মিত্র প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে তার বিরোধীদের নির্মূল করতে সাহায্য করা। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সিরীয় শান্তি আলোচনায় অংশগ্রহণরত সিরিয়ার প্রধান বিরোধী গ্রুপ দি হাই নেগোসিয়েশন কমিটি বলেছে, সিরিয়া থেকে রুশ বাহিনী প্রত্যাহারের এই উদ্যোগকে তারা স্বাগত জানায়। বিরোধী গ্রুপের মুখপাত্র সেলিম আল মুসলেত সাংবাদিকদের বলেন, সেখানে রুশ বাহিনীর উপস্থিতিতে এখন যদি আসাদকে ক্ষমতায় রাখা হয় তাহলে কেবল অপরাধকেই জিইয়ে রাখা হবে। তিনি বলেন, রাশিয়া প্রত্যাহারে আন্তরিক হলে সিরিয়ায় অপরাধের অবসান ঘটবে এবং সিরিয়া সংঘাত বন্ধে তা আমাদের সাহায্য করবে।
সিরিয়ার আসাদ সরকারকে রাশিয়ার সমর্থনের কারণ হচ্ছে অর্থনৈতিক ও আদর্শগত। যেখানে বিভিন্ন দেশ হাজার হাজার ভিন্নমতাবলম্বীকে হত্যা করার জন্য আসাদকে অভিযুক্ত করছে সেখানে রাশিয়া সক্রিয়ভাবে আসাদ সরকারকে সব ধরনের সমর্থন প্রদান করছে।
এদিকে রুশ বিমানবাহিনী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর আলকায়েদার সিরীয় শাখা আল-নুসরা ফ্রন্ট সেখানে নতুন করে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই জঙ্গি গ্রুপটির একজন কমান্ডার বার্তা সংস্থা এএফপিকে একথা বলেছেন।
রয়টার্স জানায়, এ অঞ্চলে আইএস ও অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে রাশিয়ার আক্রমণ অভিযান অব্যাহত থাকবে রুশ উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিকোলাই প্যানকভ এই ঘোষণা দেয়ার পর জঙ্গি গ্রুপটির পক্ষ থেকে এই বিবৃতি এলো।
নুসরা ফ্রন্টের এই কমান্ডার এএফপিকে বলেছেন, এটা পরিষ্কার যে, সিরিয়ায় রাশিয়া পরাজিত হয়েছে। তাদের গ্রুপটি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিরিয়ায় আক্রমণ চালাবে বলে কমান্ডার জানান। তিনি আরো বলেন, রাশিয়ার সমর্থন নিয়ে দখলকৃত ভূখ- ধরে রাখতে আসাদ সরকার সমর্থ নয় হয়তো এ কারণে রাশিয়া সেখান থেকে তার বাহিনী প্রত্যাহার করছে। রাশিয়ার যুদ্ধবিমানগুলো আসাদের সমর্থনে নির্বিচারে বোমাবর্ষণ না করলে লাতাকিয়া শহরটি এখন আমাদের হাতে থাকত। সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ভীরু ও কাপুরুষ তারা রাশিয়ার কাছে নিজেদের বিকিয়ে দিয়েছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গতকাল ঘোষণা করেছে যে, রুশ যুদ্ধবিমানগুলোর প্রথম গ্রুপটি রাশিয়ায় তাদের স্থায়ী ঘাঁটির উদ্দেশ্যে সিরিয়ার লাতাকিয়ায় হেমেইমিন ঘাঁটি ত্যাগ করেছে। সিরীয় সংঘাত অবসানে জাতিসংঘের উদ্যোগে চলমান সংলাপে নতুন দফা শান্তি আলোচনার জন্য এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে অনেকেই রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করছে। সোমবার টেলিভিশন ভাষণে প্রেসিডেন্ট পুতিন সিরিয়া থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার পর মস্কো কর্তৃপক্ষ এই উদ্যোগ নিলো।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, গ্রুপ ভিত্তিতে রুশ জঙ্গিবমানগুলো প্রত্যাহার করা হবে। এসব গ্রুপের মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক জঙ্গি ও বোমারু বিমান। মন্ত্রণালয় বলছে, এসব বিমান রাশিয়ার আকাশসীমায় প্রবেশ করার পর নিজ নিজ ঘাঁটিতে ফিরে যাবে। রুশ বার্তা সংস্থা তাস বলছে, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদ সিরিয়া থেকে রুশ যুদ্ধবিমান প্রত্যাহারে একমত হয়েছেন। কারণ তারা মনে করেন, তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব তারা সম্পন্ন করেছেন। অবশ্য সিরিয়ায় অস্ত্রবিরতি বজায় থাকছে কি না তা পর্যবেক্ষণের জন্য রাশিয়ার একটি এয়ার ফ্লাইট কন্ট্রোল সেখানে অবস্থান করবে।
রাশিয়া বলছে, তাদের যুদ্ধবিমান প্রত্যাহারের উদ্দেশ্য হচ্ছে সিরিয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শেষ হয়েছে যা গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছিল। কত বিমান ও সৈন্য সিরিয়া ত্যাগ করবে বা সেখানে কত সৈন্য ও বিমান মোতায়েন করা হয়েছিল সে সম্পর্কে পুতিন সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, সিরিয়ায় মোতায়েন রুশদের সংখ্যা তিন হাজার থেকে ৬ হাজারের মতো। বার্তা সংস্থা এপির হিসাব অনুযায়ী হেমেইমিন বিমান ঘাঁটিতে রাশিয়া ৫০টির বেশি যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছে।
রাশিয়ার পার্লামেন্টে উচ্চকক্ষের প্রতিরক্ষা কমিটির প্রধান ভিক্টর ওজেরভ গতকাল বলেন, সিরিয়ার দুইটি ঘাঁটিতে এক হাজারের মতো রাশিয়ার বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকজন থাকবে। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, দুইটি ঘাঁটির নিরাপত্তার জন্য ৮ শ’ জনের মতো দরকার হবে যাতে সিরিয়া আকাশসীমা পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখতে পারে। বিমানের কিছু ক্রুদেরও সেখানে থাকার দরকার আছে এবং কয়েকজন সামরিক বিশেষজ্ঞ থাকবেন যারা সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে পরামর্শ প্রদান করবেন। তিনি আরো বলেন, সিরিয়া সীমান্ত বরাবর একটি রুশ বেসামরিক বিমান তুরস্ক ভূপাতিত করার পর নভেম্বরে সিরিয়ায় মোতায়েন দূরপাল্লার এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়া রেখে দেবে। সূত্র : রয়টার্স, এএফপি, এপি, সিএনএন, নিউজ রিপাবলিক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।