পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। বগুড়ায় আ’লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আ’লীগ প্রার্থীর ভাগ্নে নিহত হয়েছে। এছাড়া পৃথক ঘটনায় খুলনা, ভোলা, নোয়াখালী ও পটুয়াখালীতে বিদ্রোহী প্রার্থী ও প্রতিপক্ষের সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ার শিবগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় মাহাতাব আলী (৫৫) নামে আওয়ামী লীগের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার জের ধরে আওয়ামী লীগ কর্মীরা বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচনী অফিসে আগুন দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নে জামতলা বাজারে। সহিংসতায় নিহত মাহাতাব আলী বুড়িগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আব্দুল গফুর ম-লের ভাগিনা এবং পলী বিদ্যুৎ সমিতির স্থানীয় পরিচালক। তিনি একই ইউনিয়নের খাদইল গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ এই ঘটনায় ১০ হামলাকারীকে আটক করেছে । শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, রাতে জামতলা বাজারে মাহাতাব আলী তার মামা আব্দুল গফুরের পক্ষে নির্বাচনী কাজ করছিলেন। এ সময় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ওবায়দুর রহমানের সমর্থকদের মুখোমুখি হলে এক পর্যায়ে বিএনপি প্রার্থীর কর্মীরা মাহাতাব আলীকে মারপিট শুরু করে এবং তার ডান হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপ দিলে হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। মাহাতাব আলীকে উদ্ধার করতে গেলে আওয়ামী লীগের আরো দুই কর্মী আহত হয়। পরে স্থানীয় লোকজন মাহাতাব আলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয় তার।
এদিকে মাহাতাব আলীর মৃত্যুর খবর পেয়ে খাদইল ও জামতলা গ্রামে আওয়ামী লীগ কর্মীরা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সহিংসতা এড়াতে জামতলা ও খাদুলী গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিএনপির ১০ কর্মীকে আটক করা হয়েছে।এদিকে গতকাল বিকেলে নিহত মাহতাবের নামাজে জানাজা শান্তিপুর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর ওপর হামলা
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনার কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয় কুমার সরদার ও তার লোকজনের উপর হামলা করা হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৯ জন আহত হয়েছে। ওই ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার লোকজন এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। গত সোমবার দিবাগত রাতে ইউনিয়নের বানিয়াখালি খেয়াঘাটে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সোমবার রাতে বিজয় সরদার গনসংযোগ করে ফেরার পথে বানিয়াখালি খেয়া ঘাটে পৌছালে সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকা নৌকা মার্কার প্রার্থী ও তার লোকজনের সঙ্গে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে নৌকা মার্কার প্রার্থী এসএম ইব্রাহিমের উপস্থিতিতে তার লোকজন বিজয় সরদারকে মারপিট করতে থাকে। এ সময় তার লোকজন প্রতিহত করার চেষ্টা করলে তাদেরকেও বেধড়ক মারপিট করা হয়। অতর্কিত আক্রমন থেকে রেহাই পেতে তিনি প্রথমে একটি বাড়ির গোয়ালঘরে আশ্রয় নেন। সেখানেও তাকে আরেক দফা মারপিট করা হলে তিনি আত্মরক্ষার্থে একটি পুকুরে ঝাপিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় গ্রামবাসি ও পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন।
বর্তমান ইউপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার সরদার অভিযোগ করেন, পুর্ব পরিকল্পিতভাবে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী নিজেই লোকজন নিয়ে তার উপর হামলা চালিয়েছে। এতে তিনি সহ তার ৪ জন লোক আহত হয়েছে। তারা সকলেই স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন।
চরফ্যাশনে আহত ৯
চরফ্যাশন উপজেলা সংবাদদাতা জানান, চরফ্যাশন উপজেলার হাজারীগঞ্জ ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের মধ্যে নির্বাচনী সহিংসতায় ৯জন আহত হয়েছে। তাদেরকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় হাজারীগঞ্জ ৭নং ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচারনা নিয়ে ইউপি সদস্য প্রার্থী জালাল মোল্লা মোরগ প্রতীকের কর্মী বাহিনী হামলা চালিয়েছে ফুটবল প্রতীকের আলমগীর কোম্পানীর কর্মীদের উপর। এতে ফুটবল মার্কার শাহীন (২২), কামাল (২৫), জাফর (৪০), শরীফ (২২), আলাউদ্দিন (২৩) শহীদ (১৮) প্রতিপক্ষ রফিক (২০) আহত হয়। তাদেরকে কয়েকজনকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করে বাকীদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
পুলিশ ও র্যাবের ভয়ে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা পালিয়েছেন
কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ৮টি ইউনিয়ন নির্বাচনে আ:লীগ প্রার্থীর সাথে ৯জন বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনের প্রতিনিন্দ্বতা করছেন। এই নির্বাচনে আ’লীগ প্রার্থীরা জনসমর্থন ছাড়া মাঠে সরগরম রয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীরা ব্যাপক জনসমর্থন থাকার পরেও পুলিশ ও র্যাবএর ভয়ে পালিয়ে ভেড়াচ্ছে। চরএলাহী ইউনিয়ন বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ মাইন উদ্দিন ইকবালের চান্ডু মার্কেটের নির্বাচনী অফিসে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয় এবং চরএলাহী ইউনিয়নে বিভিন্ন স্থানে মোঃ ইকবালের পোষ্টার ছিড়ে ফেলা হয়। ইকবাল নিজে জানিয়েছেন সে পুলিশ ও র্যাবএর ভয়ে পালিয়েছেন। চরকাঁকড়া ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থী ফখরুল ইসলাম সবুজ ও চরহাজারী বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুজ্জামান স্বপন তারা নিজ ইউনিয়ন ছাড়িয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। গত রবিবার রাত ৮টায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ের সংগঠনটির এক বিশেষ জরুরি সভায় অনুষ্ঠিত হয়। কার্যকারী কমিটির সর্বসম্মতি ক্রমে ৯জন বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীদেরকে দলীয় শৃংখলাভঙ্গ করার দায়ে স্থায়ী ভাবে দল থেকে বহিস্কার করা হয়।
বহিষ্কৃত নেতারা হলেন Ñ সিরাজপুর ইউনিয়ন আ:লীগের সভাপতি মাষ্টার জামাল উদ্দিন, উপজেলা আ’লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নুরুজ্জামান স্বপন, চরহাজারী ইউনিয়ন যুবলীগের সম্পাদক গোলাম হোসেন চেীধুরী রাফেল, চরকাঁকড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সদস্য ফখরুল ইসলাম সবুজ, রামপুর ইউনিয়ন আ:লীগের সহসভাপতি মোঃ আলাউদ্দিন, রামপুর আ:লীগের নেতা শরিফ উদ্দিন, রামপুর আ:লীগের নেতা দেলোয়ার হোসেন, চরএলাহী ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আবদুল গণি ও চরএলাহী ইউনিয়ন আ’লীগ নেতা মোঃ মাঈন উদ্দিন ইকবাল।
বাউফল উপজেলা সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নওমালা ইউনিয়নে সোমবার রাতে নজরুল ইসলাম প্যাদা নামে একনৌকা মার্কা সমর্থকের বাড়িতে হামলার অভিযোগ পাওয়াগেছে। এসময় হামলাকারীরা ওই সমর্থকের বসত ঘড়ের ভাঙচুর করে লুটপাট করেছে বলে জানাগেছে। লুটপাটের সময় মরিয়ম বেগম নামের এক গৃহবধু বাধাঁ দিতে গেলে তাকে বেধরক মারধর করা হয়।
অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌর্কামার্কার নওমালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী এ্যাডভোকেট কামাল বিশ্বাসের সমর্থন করায় সোমবার রাত ১১টার দিকে ওই ইউনিয়নের আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাদা হাওলাদারের সমর্থক স্থানীয় ওয়ালী চৌকিদারের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল ঘোড়া মার্কার শ্লোগান দিয়ে তার বসতঘরে রামদা, লোহার রড ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।