Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হবে-প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে বলেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। এর পাশাপাশি তিনি শরণার্থী রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল বুধবার শারদীয় দুর্গাপূজা পরিদর্শনে গিয়ে রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনে পূজার এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ বলেন, রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও তাদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে বিশ্বের সকল দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকেও এগিয়ে আসতে হবে। মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের স্বদেশে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করতে হবে। মিয়ানমার থেকে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মুসলিম রোহিঙ্গাদের সঙ্গে অনেক হিন্দুরও বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার কথা বলেন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, তাদের প্রতিও আমাদের সহমর্মিতা থাকতে হবে। তাদের দুঃখের দিনে পাশে দাঁড়াতে হবে, সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে।
বন্যার কারণে হাওরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হিন্দু স¤প্রদায়ের অনেকের আনন্দের সঙ্গে দুর্গোৎসব উদযাপন করতে না পারার কথা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, কেউ যাতে উৎসবের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয় সে লক্ষ্যে আপনারা দুর্গোৎসবের আনন্দকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হবেন।
ধর্মে ধর্মে বিভেদকে দূরে রাখার আহ্বান জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, আজ বিশ্বজুড়ে হিংসা, বিদ্বেষ আর ধ্বংস আমাদের সামনে এক ভয়াবহ অশনি সঙ্কেত হয়ে দেখা দিয়েছে। এ হত্যা আর ধ্বংস প্রতিরোধে আমাদেরকে ধর্মের অহিংস ও শান্তির অমিয় বাণী বিশ্ব জনতার কাছে তুলে ধরতে হবে।
প্রেসিডেন্ট রামকৃষ্ণ মিশনে পৌঁছালে তাকে অভ্যর্থনা জানান মঠের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রæবেশানন্দ মহারাজ। স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
রামকৃষ্ণ মিশনের আগে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ঐতিহ্যবাহী ঢাকেশ্বরী মন্দিরের দুর্গাপূজা পরিদর্শন করেন। মন্দিরে পৌঁছালে নারী ও শিশুরা তাকে ফুল ছিটিয়ে অভ্যর্থনা জানান।
সেখানে অনুষ্ঠানে আবদুল হামিদ শারদীয় দুর্গোৎসবের সার্বজনীনতার কথা তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে হিন্দু স¤প্রদায়ের উপর হামলা ঠেকাতে নিজের সরাসরি অংশ নেয়ার কথাও বলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর বাংলাদেশের হিন্দু স¤প্রদায়ের কেন্দ্রীয় মন্দির ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আক্রমণ হয়েছিল। আক্রান্ত হয়েছিল নব্বইয়ের সা¤প্রদায়িক হামলার সময়েও। আমি সেসময় এই মন্দিরে এসেছি। আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। সে সময় বাংলাদেশের মানুষ আসুরিক শক্তিকে পরাজিত করতে এক হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশ রক্ষায় সবাইকে সক্রিয় থাকার আহ্বান জানান তিনি। দুর্গাপূজার আয়োজন ধর্মান্ধতা ও জঙ্গিবাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে জাতীয় ঐক্য ও সংহতিকে আরও দৃঢ় করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি ডিএন চ্যাটার্জি বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেণ শিকদার, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজি সেলিম, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত সেন দীপু।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ