পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জার্মান নির্বাচনে পপুলিস্ট অরটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) দলের শক্ত অবস্থান আফগান ও অন্য মুসলিম অভিবাসীদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে - যাদের ভয়, এএফডি’র অভিবাসনবিরোধী কর্মকান্ড তাদের জীবনকে কঠিন করে তুলতে পারে। জার্মান পার্লামেন্ট বুন্দেসট্যাগ-এ এএফডির প্রবেশ বহু জার্মানকে হতাশ করেছে, কিন্তু অভিবাসনরিরোধীদের উত্থান জার্মানিতে মুসলমান অভিবাসীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতায় ফেলেছে।
গত রোববারের সংসদ নির্বাচনে এএফডি প্রায় ১৩ শতাংশ ভোট পেয়ে চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা ম্যার্কেল-এর ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) এবং মার্টিন শুলজের সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসপিডি)-এর পরে বুন্দেসট্যাগের তৃতীয় বৃহত্তম দল হয়ে উঠেছে। অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে এই প্রথমবারের মত একটি উগ্র ডানপন্থী দল জাতীয় সংসদে তার অবস্থান তৈরি করল।
ইউরোপের অভূতপূর্ব শরণার্থী সঙ্কটে এএফডি জার্মানিতে অভিবাসনবিরোধী মনোভাবকে পুঁজি করতে পেরেছে। দলটি ম্যার্কেল সমর্থিত শরণার্থী নীতির জোরালো বিরোধিতা করে - যে নীতি গত দুই বছরে মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার দেশ থেকে দশ লাখ শরণার্থীকে জার্মানিতে এনে জড়ো করেছে।
দলটি শরণার্থী বিরোধী সেøাগান দিয়ে জার্মানিতে তাদের ভাষায় ‘ইসলামীকরণ’-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়।
তার বিজয় ভাষণে ম্যার্কেল বলেছিলেন, তিনি জার্মান চ্যান্সেলর হিসেবে আগামী চার বছরে ডানপন্থী ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করবেন। এএফডি’র সাফল্য মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের অভিবাসন সংক্রান্ত অবস্থান পরিবর্তন এবং বিষয়টিকে রাজনৈতিক অধিকারের দিকে পরিচালনায় বাধ্য করতে যাচ্ছে যা আশ্রয়প্রার্থীদের দেশ থেকে বের করে দেয়া এবং আশ্রয় গ্রহণ পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলতে পারে।
ফ্রাঙ্কফুর্ট ভিত্তিক আশ্রয়প্রার্থী কবীর উসমানী ডিডবিøউকে বলেন, ‘নির্বাচনের ফল আসার পর থেকে রাতে আমার ঘুম নেই। আমার আশঙ্কা, সরকার আমাকে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠাতে পারে’।
তিন বছর ধরে জার্মানিতে বসবাসকারী উসমানী আরো বলেন, ‘আমি আফগানিস্তান ছেড়ে চলে এসেছি, কারণ আমি আমার জীবন নিয়ে শঙ্কিত ছিলাম, কিন্তু এখনও আমি ভয় পাচ্ছি - নির্বাসনের ভয়’। উসমানির শরণার্থী আবেদন কর্তৃপক্ষ প্রত্যাখ্যান করেছে, কিন্তু তিনি এখনও দীর্ঘ মেয়াদে দেশে থাকার আশা করছেন।
২০১৩ সালের নির্বাচনের তুলনায় আট শতাংশের বেশি ভোট হারানোর পরেও জার্মান চ্যান্সেলর ম্যার্কেল সাহসের সাথে তার শরণার্থী নীতি সমর্থন করে বলেছেন যে, ২০১৫ সালে সিরিয়া, ইরান ও আফগানিস্তান থেকে প্রধানত শরণার্থী গ্রহণে তার সিদ্ধান্ত ছিল সঠিক। কিন্তু অনেকেরই, এমনকি তার নিজের দলের মধ্যে চ্যান্সেলরের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি সন্দেহ রয়েছে।
অ্যাঞ্জেলা ম্যার্কেলের আলোকোজ্জ্বল দিনের পরিসমাপ্তি
প্রধান উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, ডানপন্থী সমর্থকদেরকে বিজয়ে ম্যার্কেল তার শরণার্থী নীতি আরো কঠোর করতে বাধ্য হতে পারেন।
কোলনের কাছাকাছি একটি গ্রামে বসবাসকারী আফগান শরণার্থী ওয়াফা খান ওয়াফা বলেন, ‘ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। আমি ভয় পাচ্ছি, ডানপন্থীদের উত্থানে জার্মানির রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের প্রতি তাদের অবস্থানকে আরও কঠোর করে তুলবে’।
বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে, সরকার ইতোমধ্যে শরণার্থীদের প্রতি একটি কঠিন মনোভাব গ্রহণ করেছে। জুন মাসে কাবুলে জার্মান দূতাবাসের কাছাকাছি একটি মারাত্মক আত্মঘাতী হামলার পর জার্মান কর্তৃপক্ষ আফগানিস্তানে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বন্ধ রেখেছিল যা আবারও চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আফগানিস্তানে জার্মান অভিবাসনের অবস্থা কী?
তবে কিছু অভিবাসী আশাবাদী যে, অ্যাঞ্জেলা ম্যার্কেল সমাজের রক্ষণশীলদের অনুপযুক্ত অংশকে সন্তুষ্ট করতে খুব বেশি দূরে যাবেন না। তারা বলছেন, এএফডি জার্মানিতে ধর্মনিরপেক্ষ শাসনের ভিত্তি দুর্বল করতে পারবে না।
বন-ভিত্তিক পাকিস্তানী গবেষক নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘নির্বাচনোত্তর বিদেশীদের প্রতি আচরণ কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে, যেমনটা ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘটেছে। তবে যতদিন মার্কেল এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাজনীতিবিদরা থাকবেন ততদিন পদ্ধতিটি বজায় থাকবে।
আফগান শরণার্থী ওয়াফা বলেছেন, ‘নতুন পরিস্থিতি দাবি করে যে, আশ্রয়প্রার্থীদের নিজেদের অবশ্যই জার্মান সমাজে সম্পূর্ণভাবে সংহত করতে হবে।
‘শরণার্থীদের জার্মান সমাজে একত্রিত করা এবং আইন-শৃঙ্খলা মান্যকারী ব্যক্তি হিসাবে তাদের দায়িত্ব পালন করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হল এটি খেয়াল রাখা যেন জনগণের মতামত তাদের বিরুদ্ধে না যায়, -বলেছেন তিনি। সূত্র : ডয়েচে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।