পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইরাক, সিরিয়া, উত্তর কোরিয়া ইস্যু কিংবা স্বাধীন কুর্দিস্থান প্রশ্নে গণভোট ইস্যুর চেয়ে মিডিয়া জগতে রোহিঙ্গা ইস্যু স্থান পেয়েছে অধিক। বিশ্ববাসীর দৃষ্টি এখন রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাংলাদেশের ভাষান চর-এর উপর। ইতোমধ্যে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত দশ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা মুসলমান শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক বিবেচনায় আশ্রয়, খাবার ও চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। একই সাথে রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাষান চরে (ঠেঙ্গারচর) পুনর্বাসনের নীতিগত সিদ্বান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। আমেরিকা সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের সূ-স্পষ্ট অবস্থান ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যতদিন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া না হয়, ততদিন তাদের অস্থায়ীভাবে থাকার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে সব রোহিঙ্গাকে পরিচয়পত্র দেয়া হচ্ছে। তাদের আমরা তালিকাভুক্ত করে রাখছি। তিনি আরো বলেন, ওই দ্বীপে (ভাষান চরে) ৫-১০ লাখ লোক রাখা যাবে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাষান চরে (ঠেঙ্গার চর) রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের কথা উল্লেখ করে উক্ত চরটিকে ‘ভাষান চর’ নাম রাখার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষৎকারের পরপরই ‘ভাষান চর’ এখন আন্তর্জাাতিক অঙ্গনে পরিচিতি লাভ করে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ফলে সরকার রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী পুনর্ববাসনের লক্ষ্যে হাতিয়ার ভাষান চরকে চিহ্নিত করে। এর ধারাবাহিকতায় সরকারের সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তারা ভাষান চর পরিদর্শন অব্যাহত রেখেছেন। ৩৩০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ভাষান চরে বর্তমানে নৌ বাহিনীর একটি ক্যাম্প রয়েছে। এছাড়া একটি হেলিপ্যাড, অভ্যর্থনা কেন্দ্র এবং হেলিপ্যাডে চলাচলের জন্য সড়ক পাকা করা হয়েছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং নৌবাহিনী প্রধান হেলিকপ্টার যোগে ভাষানচর পরিদর্শন করেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর চট্রগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশের ডিআইজি, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও হাতিয়া ইউএনও ভাষান চর পরিদর্শন করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বিবি, পিএসসি ভাষন চর পরিদর্শন করেন । এসময় সামরিক সচিবের সাথে হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, হাতিয়া পৌর মেয়র, ইউএনও ও ওসি ছিলেন। এক কথায় মেঘনা বুক চিরে জেগে ওঠা ভাষান চর এখন দেশ বিদেশের আলোচিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, ইতঃপূর্বে মেঘনার তীরবর্তী স্বর্ণদ্বীপে সেনা বাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে ওঠে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ভাষান চরে বেড়ীবাঁধসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ভাষান চরে রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হবে। এছাড়া সাইক্লোন শেল্টার, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ সুবিধা থাকবে ।
ভাষান চরে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন প্রসঙ্গে হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী বলেন, ভাষান চরে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের সিদ্বান্ত গ্রহণ করায় আমি দেশনেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। এ লক্ষ্যে আমরা সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানে প্রস্তুত। তিনি আরো বলেন, ২০১৩ সালে স্বর্ণদ্বীপে সেনা বাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় আমরা হতিয়াবাসী যেভাবে সরকারকে সহযোগিতা করেছি, তেমনিভাবে ভাষান চরে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। হাতিয়া আসনের এমপি আয়েশা ফেরদৌস বলেন, রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। ভাষান চরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে আমি হাতিয়াবাসীকে সাথে নিয়ে সরকারের উদ্যোগকে সহযোগিতায় প্রস্তুত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।