পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের বাইরে বিএনপিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ধরণের বক্তব্য দিচ্ছেন তা দেশ-জাতিকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, তার বক্তব্যে বোঝা যায় তারা ২০১৪ সালের মতো ফের গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার ষড়যন্ত্র করছে। একইসাথে রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় বিএনপির জাতীয় ঐক্যের আহ্বান প্রত্যাখান করে প্রধানমন্ত্রী ‘দলীয় রাজনীতি’ করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘বিচার বিভাগ, সরকার বাহাস: বাংলাদেশে আইনের শাসনের ভবিষ্যৎ’ শিরোনামে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পলিটিক্যাল স্টাডিজ’। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ইনস্টিটিউট অব পলিটিক্যাল স্টাডিজের সভাপতি ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা।
ড. মোশাররফ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে এই ধরনের কথা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বিএনপি বর্তমানে সবচাইতে জনপ্রিয় দল, সবচাইতে বৃহৎ দল। এ দলকে বিদেশে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখে সন্ত্রাসী বলা, জঙ্গি বলা- এটার নিন্দা করার ভাষা আমাদের নেই। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। রোহিঙ্গা সঙ্কটের মতো ইস্যুতে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির আহŸান তিনি প্রত্যাখান করে দলীয় রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন। আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশের জনগণ তাদের এই ধরণের পদক্ষেপ সমর্থন করবে না। নিউ ইয়র্কে শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “বিএনপির মতো একটি সন্ত্রাসী দল, জঙ্গিবাদী দল-তাদের সাথে বসতে হবে। তাদের সাথে বসে সমাধান করতে হবে- এই কথাটা আর কেউ বলবেন না, যেটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য না।”
বিএনপিকে ‘গণতান্ত্রিক দল’ হিসেবে অভিহিত করে দলটির নেতা খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিএনপি শহীদ জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল, একটি গণতান্ত্রিক মধ্যপন্থি দল, নির্বাচনমুখী দল। এই দল পাঁচবার দেশ পরিচালনা করার সুযোগ পেয়েছে জনগণের নির্বাচনের মাধ্যমে। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নির্বাচিত হয়েছে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে, প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুস সাত্তার নির্বাচিত হয়েছেন এদেশে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন এদেশের মানুষের ভোটের মাধ্যমে। বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল বলে আওয়ামী লীগ ‘ফের গায়ের জোরে’ ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য খন্দকার মোশাররফের।
রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় সরকার কূটনীতিকভাবে ‘সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ’ উল্লেখ করে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, যখন চীনের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে এসেছিলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন বাংলাদেশ-চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক আকাশচুম্বি। ভারত থেকে ফিরে এসে বললেন, বাংলাদেশ-ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক হিমালয়ের পরিমাণ উচ্চতায়। আজকে আমরা দেখতে পারছি, রোহিঙ্গা সমস্যা যখন হল আমরা যখন সঙ্কটে, এই রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে, তখন দেখছি আমাদের পাশে না থেকে- চীনও মিয়ানমারের পাশে, ভারতও মিয়ানমার পাশে। মিয়ানমারে দমন-পীড়ন শুরুর সময়ই বাংলাদেশ সরকার তা বন্ধে কূটনৈতিক ব্যবস্থা নিলে বাংলাদেশে এত রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে পালিয়ে আসতে বাধ্য হত না।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা পীড়নে ঘটনায় ভারতের ভূমিকার সমালোচনা করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ভারত জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। মিয়ানমারের কাছে তারা অস্ত্র বিক্রি করছে। তারা নির্দেশ দিয়েছে কোনো রকম রোহিঙ্গা শরনার্থী ভারতে ঢুকতে পারবে না। তাদের বিএসএফকে বিভিন্ন রকমের পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই ইস্যুতে আমাদের সরকার সম্পূর্ণভাবে কূটনৈতিক তৎপরতায় ব্যর্থতা হয়েছে। আমি বলব, এখন সময় এসেছে সরকারের সব বিভেদ ভুলে গিয়ে বিরোধী দলকে সঙ্গে নিয়ে বেইজিং (চীন) যাওয়া, মস্কো (রাশিয়া) যাওয়া, দিল্লী (ভারত) যাওয়ার। একলা নয়। তাদেরকে দেখানো সমগ্র জাতিসত্তা আমরা একত্রিত। দেশের অর্ধেক লোক বাদ দিয়ে এটা সম্ভব হবে না। ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, শওকত মাহমুদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন, সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের প্রফেসর দিলারা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর হাসান তালুকদার, এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসা এবং মো. সালাহউদ্দিন খান বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।