Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পেপারলেস ট্রেডে সক্ষমতা অর্জন কোরিয়ায় আসেম মিটিংয়ে -বাণিজ্যমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়ের আহমেদ বলেছেন, দক্ষতার সাথে বিশ^বাণিজ্যে অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশ এখন প্রস্তুত। ডবিøউটিও-এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাংলাদেশ ইউএনএ্যাস্কাপের অধীন ফ্রেম ওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট অন ফেসিলিটেশন অফ ক্রোস বর্ডার পেপারলেস ট্রেড ইন এশিয়া এন্ড দি প্যাসিফিক-এ গত ২৯ আগষ্ট প্রথম দেশ হিসেবে স্বাক্ষর করেছে। বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। এ সময় দেশের রপ্তানি হবে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন। বর্তমানে দেশের রপ্তানি প্রায় ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ জন্য বাংলাদেশ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে সফল ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় তথ্য প্রযুক্তিসহ বেশ কিছু খাতকে অগ্রাধীকার দিয়ে রপ্তানি পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি এবং রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আধুনিক ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহার করে ই-কানেকটিভিটি স্থাপনে বাংলাদেশ সক্ষম। অতিসম্প্রতি বাংরাদেশ দ্বিতীয় সাইবার ক্যাবলে যুক্ত হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে দেশে ফোর-জি চালু হবে। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহনের জন্য সরকার দেশব্যাপী পাঁচ হাজারেরও বেশি ডিজিটাল সেন্টার চালু করা হয়েছে। দেশের মানুষ এ সুবিধা ভোগ করছে। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ১৩ কোটি ৩২ লাখ মানুষ মোবাইল ফোন, প্রায় ৭ কোটি মানুষ ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছে। দেশে প্রায় পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠান এ সেক্টরকে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দেশে তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি তৈরী হচ্ছে এবং এ খাত দ্রæত এগিয়ে যাচ্ছে।
বানিজ্যমন্ত্রী গতকাল শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অনুষ্ঠিত এশিয়া ইউরোপ মিটিং(আসেম)-এর সপ্তম ইকোনমিক মিনিস্টার্স মিটিং(ইএমএম)-এর দ্বিতীয় প্লিনারি সেশনে স্ট্র্যাংদেনিং ইকোনমিক কানেকটিভিটি বিষয়ের উপর গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি ইউরো-এশিয়া কানেকটিভিটি ঃ ই-কমার্স এবং ডিজিটাল ট্রেডের উপর বেশি গুরুত্ব দেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ অঞ্চলে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক যোগাযোগ কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হলে সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে। বাণিজ্য জটিলতা হ্রাস, জা¦ালানীর সহজ প্রাপ্তি, তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞান অর্জন এবং মানুষে মানুষে যাতায়াত সহজ করতে হবে। এ সম্মেলনের মাধ্যমে এশিয়া-ইউরোপের সদস্যদেশগুলো উপকৃত হবে। ভবিষ্যতে বাণিজ্য সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক যোগাযোগ বাড়বে এবং টেকসই উন্নয়ন ঘটবে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিশ^ব্যাপী দ্রæত ই-কমার্স জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরিন বাণিজ্যে প্রায় ৮০ ভাগ এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে ২০ ভাগ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের অবকাঠামো প্রস্তুত করা হচ্ছে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে। বাংলাদেশের সেবা খাতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার এখন বেশ জনপ্রিয়। দেশের মানুষ অন-লাইনে বেশিরভাগ সেবা গ্রহণ করছেন। বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য ক্ষেত্রে সেবা প্রদানকারী অফিসগুলোকে অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে। অভ্যন্তরিন বাণিজ্যের মেশিরভাগ ক্ষেত্রে কার্যক্রম অন-লাইনে পরিচালিত হচ্ছে। এতে করে বাণিজ্য ক্ষেত্রে খরচ, সময় এবং আনুষ্ঠানিকতা অনেক কমে এসেছে। সরকারি দপ্তর গুলোকে ই-গভর্নেন্সের আওতায় এনে পেপারলেস করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের সকল ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতি চালুর কাজ দ্রæত এগিয়ে চলছে।
কোরিয়ার ট্রেড, ইন্ডাস্ট্রি এন্ড এনারর্জি বিষয়কমন্ত্রী উংউ পেইক-এর সভাপতিত্বে প্লানারি সেশন-২ এ চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এন্ড ইন্ডাস্ট্রি মিনিস্টার কা চুয়ান অং, অন্যান্য আলোচকদের মধ্যে ছিলেন সুইডেনের মিনিস্টার অফ ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন এফেয়ার্স এন্ড ট্রেড এ্যাট দি মিনিস্ট্রি ফর ফরেন এফেয়ার্স এ্যান লিনডি, বেলজিয়ামের ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার এবং ইমপ্লইমেন্ট, ইকোনমি, কনজিউমার রাইটস, ফরেন ট্রেড বিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস পিটার্স, নরওয়ের স্টেট সেক্রেটারি অফ দি মিনিস্ট্রি অফ ট্রেড, ইন্ডাস্ট্রি এন্ড ফিসারিজ, স্পেইনের ইকোনমি মিনিস্ট্রির মহাপরিচালক জোসে লুইস কাইসার মোরেইরাস, সুইজারল্যান্ডের ইকোনমিক এফেয়ার্সের স্টেট সেক্রেটারি মারকুইস শিলাজেনহোফ এবং সিঙ্গাপুরের ট্রেড এন্ড ইন্ডাস্ট্রি বিষয়ক সিনিয়র স্টেট মিনিস্টার ফোহ কন কো।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী লি নাক-ইয়েন এবং মিটিং-এ অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ে মতবিনিময় করেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মো. জুলফিকার রহমান বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। উল্লেখ্য, এশিয়া এবং ইউরোপের দেশ সমুহের মধ্যে সেতু বন্ধন স্থাপনের লক্ষ্যে এ দু‘অঞ্চলের ২৬টি দেশের সমন্বয়ে ১৯৯৬ সালে এশিয়া ইউরোপ মিটিং(আসেম) নামক জোট গঠিত হয়। এ জোট এশিয়া এবং ইউরোপের দেশ সমুহের মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে এ জোটের সদস্য সংখ্যা ৫৩।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাণিজ্যমন্ত্রী

২৩ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ