Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চালের দামে বৈরী আবহাওয়াও দায়ী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বন্যায় ফসল নষ্ট, রাস্তাঘাট ভাঙ্গাচোরা হওয়ায় পরিবহন খরচ বৃদ্ধি এবং চালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাজারে চালের দাম বাড়ছে তো বাড়ছেই। চালের দাম নিয়ন্ত্রণে বিদেশ থেকে চাল আমদানীর পাশাপাশি রাস্তা সংস্কার করে পরিবহন ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা, বন্যার পানি চলে যাওয়ার পর কৃষকদের ধানের চারা সরবরাহ নিশ্চিত করে আগামীতে পর্যাপ্ত ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা সৃষ্টি করা অপরিহার্য। হঠাৎ বন্যা, অতিবৃষ্টিতে রাস্তা নষ্ট, বন্যার পানি দীঘস্থায়ী, রোহিঙ্গা প্রবেশের খাদ্যের বাড়তি চাহিদা এসব বৈরি পরিবেশই মূলত চালের মূল্য বদ্ধির জন্য দায়ী।
চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে মূলত বছরের শুরু থেকেই। হাওড়ে হঠাৎ বন্যায় লাখ লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।
উত্তরাঞ্চলে বন্যায় কৃষকের ধানের বীজ এবং রোপন করা ধানের চারাগাছ নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যার পানি চলে যাওয়ায় নতুন করে ধানের চারা রোপন শুরু হলেও লাখ লাখ হেক্টর জমি চারার অভাবে অনাবাদী থেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবার সড়ক-মহাসড়কগুলো খানাখন্দ হওয়ায় পরিবহন ভাড়া বেড়ে গেছে অস্বাভাবিক হারে। এর উপর লাখ লাখ রোহিঙ্গা দেশে ঢুকে পড়ায় তাদের বাড়তি খাদ্য চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে। এসব কারণেই মূলত চালের দাম উর্ধ্বমুখী। যদিও বাণিজ্যমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ব্যবসায়ীরা চালের মূল্য কমানোর অঙ্গিকার করেছে; কিন্তু পরিবহন ভাড়া কমানো এবং সামনের ধানের বাম্পার ফলনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করা না গেলে চালের বাজারে অস্থিরতা কমানো কঠিন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ বছর এপ্রিলে দেশে ৩৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। মার্চের শেষের দিকে হয়েছে প্রবল ভারি বর্ষণ। অতিবৃষ্টির সঙ্গে যোগ হয় হঠাৎ পাহাড়ি ঢলে হাওরাঞ্চলে আগাম বন্যা। বন্যায় হাওরাঞ্চলে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা গত ৪০ বছরেও হয়নি। এ ছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যায় ১০টি জেলায় ফসলডুবি ঘটেছে। বন্যায় ফসলহানি ও ধানের চারায় বøাস্ট রোগের কারণে এবার দেশে ধানের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে তিন লাখ টনের নিচে নেমে আসে সরকারি চালের মজুদ।
চালের বাজারের যখন এই অবস্থা তখন নতুন করে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম জীবন বাঁচাতে শরণার্থী হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তাদের খাদ্য সরবরাহের অর্থের যোগান যারাই দিক স্থানীয় বাজার থেকেই তা সংগ্রহ করা হয়। ফলে চালের ওপর পড়েছে বাড়তি চাপ। বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ, রংপুর, শেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহসহ দেশের বিভিন্ন চাল উৎপাদনকারী জেলায় মিল মালিকদের মতে চাতালে ধান শুকিয়ে তা ভাঙিয়ে চাল করার উপযোগী করতে তিন দিন সময় লাগত। ঘন ঘন বৃষ্টি হওয়ায় রোদের দেখা না পাওয়ায় এখন লাগছে ছয় থেকে সাত দিন। এর ফলে শ্রমিকদের মজুরি বেশি দিতে হচ্ছে। আবার অনেক জেলায় চাতাল বন্ধ রাখতে হচ্ছে। ফলে বাজারে চালের সরবরাহ কমে গিয়ে দাম বাড়ছে। আবার বন্যায় কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, শেরপুর জেলায় বিস্তীর্ণ এলাকায় দীর্ঘ দিন পানি থাকায় কৃষকের গোলার ধান নষ্ট হয়ে গেছে। যা ধানের বাড়তি চাহিদার সৃষ্টি করেছে। এ ছাড়া রাস্তা খারাপ হওয়ায় সময় বেশি ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়া চালের দামে প্রভাব ফেলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাল

১১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ