Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গভর্নরের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অর্থমন্ত্রীর অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) রিজার্ভ চুরির ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিবি গভর্নরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঘটনাটি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকায় গভর্নরের ওপর ক্ষোভও প্রকাশ করেন তিনি। তবে বিবি গভর্নর ড. আতিউর রহমানের নাম উল্লেখ করেননি অর্থমন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক মন্ত্রী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মন্ত্রী জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতেই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে উচ্চস্বরে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, বিষয়টি আমাকেও জানানো হয়নি। এমনকি গত ৭ মার্চের বৈঠকেও (কী বৈঠক তা জানা যায়নি) আমাকে কিছু বলা হয়নি। এত বড় ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীকে না জানিয়ে থাকে কীভাবে? ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এমএ মুহিত।
এ সময় পাশ থেকে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অর্থমন্ত্রীর পাঞ্জাবির প্রশংসা করলে প্রসঙ্গটি নিয়ে আর কোনো কথা হয়নি। ক্ষুব্ধ অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ এই পাঞ্জাবিতে আপনাকে খুবই সুন্দর লাগছে। তার সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদও অর্থমন্ত্রীর পাঞ্জাবির প্রশংসা করেন। এরপর ক্ষুব্ধ অর্থমন্ত্রী সহাস্যে তাদের ধন্যবাদ জানান। বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে গভর্নরের বিরুদ্ধে অভিযোগটি প্রধানমন্ত্রী শুনেছেন, তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা আইনের খসড়া অনুমোদন মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) আইন-২০১৬ খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। জাতীয় সংবাদ সংস্থাটির বিদ্যমান ১৯৭৯ সালের আইন অনুসরণে এটি প্রণীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিসভায় নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৭৯ সালে সামরিক শাসনামলের অধ্যাদেশের ভিত্তিতে বর্তমানে বাসস পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এক আদেশে ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালে ৯ এপ্রিল এবং ১৯৮২ সালে ২৪ মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালে ১০ নভেম্বরের মধ্যে জারিকৃত সকল সামরিক অধ্যাদেশ অবৈধ হিসেবে ঘোষণা করে।
এই রায়ের অনুসরণে সরকার এসব অধ্যাদেশ পুনঃস্থাপন ও তা বাংলায় রূপান্তরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রস্তাবিত আইনটি উত্থাপিত হয়। এতে ১৯৭৯ সালের অধ্যাদেশের বড় কোনো পরিবর্তন হয়নি এবং এ অধ্যাদেশটি কম-বেশি অনুসরণ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রস্তাবিত আইনের ৭ ধারা অনুসারে বাসস ১১ সদস্যের একটি পরিচালনার পরিষদের (বোর্ড অব ডাইরেক্টস) মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এই বোর্ডে সরকার মনোনীত একজন চেয়ারম্যান ও ১০ জন সদস্য থাকবেন। বোর্ডের মেয়াদকাল হবে ৩ বছর।
চেয়ারম্যান যে কোনো সময় বোর্ডের সভা আহ্বান করতে পারবেন। চেয়ারম্যানসহ কমপক্ষে ৭ জন সদস্যের উপস্থিতিতে বৈঠকে কোরাম হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। কোনো বিতর্ক দেখা দিলে চেয়ারম্যান কাস্টিং ভোটের মাধ্যমে তার সমাধান করবেন।
শফিউল আলম বলেন, সরকার কর্তৃক নিয়োজিত একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগ করা হবে। তিনি সংবাদ সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী হিসেবে দৈনন্দিন কর্মকা- পরিচালনা করবেন। এ পদে নিয়োগের যোগ্যতা হচ্ছে সাংবাদিকতায় ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা।
পিআইবি আইন অনুমোদন মন্ত্রিসভায়
বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) আইন-২০১৬-এর নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা মন্ত্রিপরিষদ। সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, নতুন পিআইবি আইনের খসড়ায় সাংবাদিকদের পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের বিষয়টি চিন্তা করে প্রশিক্ষণকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, প্রশিক্ষণের বিষয়টি মাথায় রেখে নতুন আইনটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চল্লিশ বছর ধরে রেজুলেশনের মাধ্যমে চলছে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি)। তাই আইনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। আইনে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের দায়িত্বে ও কর্তব্যে বলা হয়, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অধীনে কর্মরত সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ সুবিধা প্রদান করতে হবে। সাংবাদিকতা বিষয়ে একাডেমিক শিক্ষা প্রদান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাংবাদিকতা, যোগাযোগ, গণমাধ্যম সম্পর্কিত গবেষণা কার্যক্রম এবং এ সম্পর্কিত উপাত্ত, তথ্য ও প্রতিবেদন তৈরি, গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক সেবা প্রদান করবে প্রেস ইনস্টিটিউট। এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে বোর্ড গঠন করা হবে। এ বোর্ড পরিচালনা করবেন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান। দুই বছর মেয়াদি চেয়ারম্যান নিয়োগ দেবে সরকার। বাংলাদেশ সম্পাদক পরিষদ মনোনীত দু’জন সম্পাদকসহ আরো ১৬ জন বোর্ডের সদস্য হবেন। চেয়ারম্যান ছাড়াও এ ইনস্টিটিউটে একজন মহাপরিচালক থাকবেন। মহাপরিচালক ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
কবি রাধারমন দত্তের স্মরণে ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ডাকঘর মরমী কবি রাধারমন দত্তের ১০০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট, একটি উদ্বোধনী খাম ও একটি ডাটা কার্ড অবমুক্ত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে ১০ টাকা মূল্যের একটি স্মারক ডাকটিকিট, ১০ টাকা মূল্যের একটি উদ্বোধনী খাম ও ৫ টাকা মূল্যের একটি ডাটা কার্ড আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করেন। এ উপলক্ষে একটি বিশেষ সিলমোহর ব্যবহার করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ ডাকঘরের মহাপরিচালক প্রবাস চন্দ্র সাহা ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • জাফর আলম ১৫ মার্চ, ২০১৬, ১০:৫০ এএম says : 0
    কাকে বিশ্বাস করবেন। সুযোগ পেলে আপনার কাছের কেউ আপনার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Roton M Hossain ১৫ মার্চ, ২০১৬, ১০:৫১ এএম says : 0
    Churi korlo k r nam porlo kar! Bolir patha hoben governor?
    Total Reply(0) Reply
  • Titu ১৫ মার্চ, ২০১৬, ১০:৫২ এএম says : 0
    চাকরিটা এবার বুঝি গেলো।।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গভর্নরের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অর্থমন্ত্রীর অভিযোগ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ