পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : নিরাপত্তা সংক্রান্ত যুক্তরাজ্যের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব দিতে যাচ্ছে এক ব্রিটিশ কোম্পানিকে। আগামী ২০ মার্চ ব্রিটিশ সার্ভিস কন্ট্রাক্টর নামের এই কোম্পানিকে এ দায়িত্ব দেয়া হবে। তাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো।
গতকাল সচিবালয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, বিমানবন্দরের নিরাপত্তার অজুহাতে যুক্তরাজ্য কার্গো বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় সরকার উদ্বিগ্ন। ব্যবসায়ীরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সরকার এ ব্যাপারে আন্তরিক। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কিভাবে আরো জোরদার করা যায় এ ব্যাপারে গতকাল ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এখন ব্রিটিশ কোম্পানিকে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। আশা করি এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের আর কোনো উদ্বেগ থাকবে না।
এদিকে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত সকল সমস্যা এ মাসের মধ্যেই সমাধান হবে। এছাড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানের করার জন্য বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং উন্নয়নে ছয় মাসের জন্য বিদেশি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। তিনি সচিবালয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তার জন্য নতুন জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। নিয়োগকৃত ২৫০ জনের এই জনবলে পুলিশ, আনসার, এয়ারফোর্সের লোক আছে। এছাড়া নতুন স্ক্যানার মেশিন আনা হয়েছে। বিমানবন্দরের জন্য ৯০ কোটি টাকার ইক্যুইপমেন্ট আনা হচ্ছে। তিনি বলেন, চলতি মাসের মধ্যেই বিমানবন্দরে সন্তোষজনক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিরাপত্তার জন্য যা যা প্রয়োজন সবধরনের পদক্ষেপই নেয়া হচ্ছে। বিমানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্যের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে আপাতত ৬ মাসের জন্যই তাদের নিয়োগ দেয়া হতে পারে। প্রয়োজনে তা বাড়তে পারে। মূলত তারা প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে আমাদের সহায়তা করবে।
রাশেদ খান মেনন বলেন, বিমানবন্দরের নিরাপত্তার জন্য সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। বিদেশিরাও এতে সন্তুষ্ট ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ঢাকা থেকে কার্গো বিমানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ঘটনায় আমরা অবাক হয়েছি।
মন্ত্রী জানান, যাত্রীদের নিরাপত্তা দেখতে গিয়ে কার্গো বিমানে মনোযোগ কম হবে সেজন্য আমরা কার্গো বন্ধ রেখেছি। বিদেশি পরামর্শকের কাজের বিবরণ দিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বিদেশি কোম্পানি প্রথম দিন থেকে ট্রেনিং শুরু করবে এবং কাজের তদারকি করবে। ওয়ার্কারদের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং করবে। বিদেশি পরামর্শকের হাতে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলে দিচ্ছি না। আমরা আপাতত তাদের সার্ভিস নেব।
প্রসঙ্গত, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন ও তদারকির জন্য বিমানমন্ত্রীকে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সভা শেষে এই কমিটি গঠন করা হয়।
বিমানমন্ত্রী ছাড়াও কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, বিমান সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ সাত সদস্য রয়েছেন।
বিমানমন্ত্রী বলেন, এই কমিটি প্রতিদিন বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নজর রাখছে। আমি নিজেও সেখানে অফিস করছি।
এদিকে বিমানবন্দর থেকে সরাসরি পণ্য পরিবহণে যুক্তরাজ্য সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষস্থানীয় সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। ঢাকা চেম্বার মনে করে, এর ফলে বিদেশে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হবে। সংগঠনটি বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদারের জন্য বিমান কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা যুক্তরাজ্য সরকারকে অবহিত করতে আহ্বান জানিয়েছে। পাশপাশি দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ডিসিসিআই।
ব্রিটিশ হাইকমিশনের সাথে বৈঠকের পর তোফায়েল আহমেদ আরো বলেন, দ্বিপাক্ষিক এই বৈঠকে ব্রিটিশ বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের জন্য সরকার আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দ দেবে বলেও জানানো হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, যুক্তরাজ্যের ভিসা প্রসেসিংয়ের ব্যাপারে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আগে এই ভিসা প্রসেসিং হতো ঢাকা থেকে। গত ১৮ মাস আগে তা দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়েছে। যাতে আবারও এই ভিসা প্রসেসিং ঢাকায় নিয়ে আসা হয় এ ব্যাপারে হাইকমিশনারকে অনুরোধ করা হয়েছে।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের বিমানবন্দরের নিরাপত্তা আন্তর্জাতিকমানের নয়। এ ব্যাপারে মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে সবধরনের সহায়তা দিতে আশ্বাস দিয়েছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।