Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

রাজকোষ কেলেঙ্কারিতে তোলপাড়

অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন না গভর্নর বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা গোয়েন্দা নজরদারিতে আজকের বোর্ড সভা স্থগিত

প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৭ পিএম, ১৪ মার্চ, ২০১৬

হাসান সোহেল : কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভকে ধরা হয় রাজকোষ হিসেবে। সবচেয়ে নিরাপদ সেই রাজকোষ কেলেঙ্কারি নিয়ে এখন তোলপাড় চলছে সারা দুনিয়ায়। দেশের অভ্যন্তরেও একই বিষয় নিয়ে চলছে বিতর্ক। বাংলাদেশ ব্যাংকের আটশ’ কোটি টাকা লোপাটের কাহিনী দেশের মিডিয়ার পাশাপাশি শিরোনাম হচ্ছে বিদেশের মিডিয়ায়। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এই অর্থ চুরি হলেও পুরো বিষয়টি চোরদের (হ্যাকার) নজরদারিতে ছিল আরও আগ থেকেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ সব বিষয় ছিল তাদের নখদর্পণে। আইটি বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বিষয়টি হ্যাকিং বলে মানতে নারাজ। তারা পুরো বিষয়টিকে বলছেন চুরি বা লুট। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পরই তারা ওই অর্থ ছাড় দেন। আর বাংলাদেশ ব্যাংকও এটা কবুল করেছে যে, তারা ক্লিয়ারেন্স দিয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞরা এক বাক্যে বলছেন, হাই সিকিউরিটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভেতর থেকে কেউ না কেউ এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত। অভ্যন্তরীণ সহযোগিতা ছাড়া এ ধরনের হ্যাকিং সম্ভব নয়। ইতিহাসের অন্যতম বড় ব্যাংকিং কেলেঙ্কারি সংঘটনের কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক জিএমের পদত্যাগ করতে চাওয়া তাই নতুন প্রশ্নেরই জন্ম দিয়েছে। এতো বড় ঘটনা চাপিয়ে রেখে গভর্নর ভারত সফরে যান। গতকাল তিনি দেশে ফিরলেও দিনভর তার জন্য অপেক্ষারত অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। এ রিপোর্ট লেখার সময় খবর রটে তিনি গণভবনে যাবেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। দায়িত্বে অবহেলার জন্য তাকে সরিয়ে দেয়ার হবে বলেও গুঞ্জন রয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা তৎপরতা চালাচ্ছে।
বিশ্বের দেশে দেশে ব্যাংকের টাকা চুরির যেসব ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারী হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির ঘটনা। ঘটনার পর কর্তৃপক্ষের রহস্যজনকভাবে তা গোপন রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সর্বত্র। তাহলে কি শর্ষের ভিতরেই রয়েছে ভূত! অবশ্য এরই মধ্যে ৮জনের নাম এ ঘটনায় সন্দেহের তালিকায় নেয়া হয়েছে। গ্রামের চায়ের দোকান থেকে সচিবালয় প্রতিটি স্থানেই আলোচনার ঝড় বইছে এই চুরি নিয়ে। বিদেশী পত্রিকায় ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর অর্থমন্ত্রী বিক্ষুব্ধ। মন্ত্রণালয়ে চরম অস্থিরতা। অথচ গভর্নর যেন নির্বিকার। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন গভর্নর এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেয়েছিলেন কার স্বার্থে? কেনই বা অর্থমন্ত্রী ও সচিবকে বিষয়টি জানাননি। আবার কেউ কেউ বলছেন, অর্থমন্ত্রী এবং সরকারকে অবজ্ঞা করায় পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে গভর্নর ড. আতিউর রহমানকে। তবে সবারই একবাক্যে বলছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহেলায় রিজার্ভের টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে। আর এ ঘটনার দায় নিয়ে গভর্নর ড. আতিউর রহমানের পদত্যাগ এবং বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। দেশের অর্থনীতিবিদ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নররাও মনে করছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা চুরির ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তি হওয়া উচিত। এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আজকের নির্ধারিত জরুরী সভা স্থগিত করা হয়েছে। নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভংকর সাহা জানান, আজ (মঙ্গলবার) পরিচালনা পরিষদের যে সভা ডাকা হয়েছিল তা স্থগিত করা হয়েছে। পরিষদের সদস্যরা নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত থাকতে পারছে না বলে এ সভা স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত গতকাল দিনভর অস্থির সময় অতিবাহিত করেছেন। মন্ত্রণালয়ের অধঃস্তন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সিদ্ধান্ত আসছে। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীও ইতিবাচক মত দিয়েছেন। একই সঙ্গে গভর্নর ভারত থেকে ফিরে আসলেই সিদ্ধান্ত। এ জন্য জরুরী তলবও করেছেন অর্থমন্ত্রী। গভর্নরের জন্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সচিবালয়ে অপেক্ষাও করছিলেন। কিন্তু গভর্নর গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টায় ভারত থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌছে সচিবালয়ে না এসে বাসায় চলে যান।
সূত্র জানিয়েছে, গভর্নর ফোনে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে গভর্নর না আসায় সন্ধ্যায় সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানিয়ে দেয়া হয়, আজ মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় সাংবাদিক সম্মেলন করবেন অর্থমন্ত্রী। এ সময় অর্থমন্ত্রীর কক্ষে অর্থসচিব মাহবুবুর রহমান, ব্যাংকিং সচিব এম আসলাম আলম, ব্যাংকিংয়ের অতিরিক্ত সচিব গোকুল চাঁদ দাস উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র মতে, বিশ্বে প্রথম বারের মতো রিজার্ভ থেকে টাকা চুরির ঘটনা ঘটে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর দেশে এবং দেশের বাইরে তোলপাড় হলেও গভর্নর বিষয়টি এড়িয়ে ভারতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের একটি সম্মেলনে অংশ নিতে গত ১০ মার্চ ভারতে যান। অর্থমন্ত্রী ও সরকারের মন্ত্রীরা গতকাল মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকেও এতো বড়ো একটি বিষয়কে সরকারকে না জানানোর জন্য গভর্নরের সমালোচনা করেন। বৈঠকে উপস্থিত একজন মন্ত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বৈঠকের শুরুতে অর্থমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে রিজার্ভের অর্থ চুরির বিষয়টি উত্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি (অর্থমন্ত্রী) বলেন, অর্থ চুরির বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউ আমাকে জানায়নি। এর মধ্যে তাদের (বাংলাদেশ ব্যাংক) সঙ্গে আমার মিটিং হয়েছে। তারপরও তারা আমাকে কিছুই বলেনি। অর্থমন্ত্রীকে এ সময় বেশ রাগান্বিত দেখায়। তবে অর্থমন্ত্রীর নালিশের জবাবে প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেননি বলে তথ্য দেওয়া ওই মন্ত্রী জানিয়েছেন। ধারনা করা হচ্ছে, ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন বলতে প্রতিষ্ঠানটির সর্বোচ্চ কর্মকর্তা গভর্নর ড. আতিউর রহমানকেই বোঝানো হয়ে থাকতে পারে।
এদিকে গভর্নর ড. আতিউর রহমান থাকছেন নাকি অন্য কেউ আসছেন বিষয়টি নিয়ে সরকারের অভ্যন্তরে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। আওয়ামী লীগ নেতা নূহ উল আলম লেনিন বলেছেন, আত্মসম্মান থাকলে গভর্নরের পদ থেকে আতিউর রহমানের পদত্যাগ করা উচিত। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে গভর্নরের পদত্যাগ বা অপসারণ বিষয়ে কিছু বলা না হলেও সেখানে এখন জোর গুঞ্জন চলছে পরের গভর্নর হচ্ছেন কে? গতকাল দিনভর বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে দেখা গেছে, গুঞ্জন চলছে পরের গভর্নর কে হবেন। আতিউর রহমানের স্থলাভিসিক্ত হচ্ছেন এমন কয়েক জনের নামও শোনা যাচ্ছে। তবে সাবেক অর্থসচিব ড. তারেকের নামটাই শোনা যাচ্ছে বেশি। এ বিষয়ে গতকালই অর্থমন্ত্রীর সাথে তার দেখা করার কথাও শোনা গেছে। এছাড়াও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সচিব আসলাম আলম এর নামও শোনা যাচ্ছে। জানা গেছে, নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থ চুরির ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে অর্থ মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্টদেরও জানায়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। আর তাতেই চটেছেন মুহিত। একই সঙ্গে গভর্নরের অন্যান্য দুর্বলতাগুলো সরকারের শীর্ষ মহলে আলোচনা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ড. আতিউর রহমান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে যোগদানের পর থেকে ব্যাংক খাতে সুশাসনের অভাব প্রবল আকার ধারণ করার বিষয়টি উঠে এসেছে। তার দায়িত্বকালীন শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারী, হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারি, বিসমিল্লাহ গ্রুপের ঋণ কেলেঙ্কারি, বেসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারি, যুবক, ডেসটিনিসহসহ নানা ধরনের কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে। শেয়ার বাজারের কয়েক লাখ বিনিয়োগকারীও মনে করেন, ড. আতিউর রহমানের কারণে শেয়ারবাজার আজ ধ্বংসের মুখে। গভর্নরের পদত্যাগের গুঞ্জনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে বলে শেয়ারবাজার সূত্রে জানা গেছে।
গত রোববার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, রিজার্ভ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে অর্থ মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্টদের না জানিয়ে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমন দৃষ্টতা দেখানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানকে পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে বলে দিনভর গুঞ্জন ছিল মতিঝিলের ব্যাংক পাড়ায়ও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাজেও অনেকটা স্থবিরতা লক্ষ্য করা গেছে। সবাই নিজ নিজ কক্ষে বসে ছিলেন দিনভর। যাতে কারো কাছে কোন ধরণের প্রশ্নে সম্মুখী হতে না হয় সে জন্য। কর্মকর্তাদের ধারণা, কোন কথা থেকে কোন কথা বলে আবার বিপদের সম্মুখীন হই। তবে আতিউর রহমান গভর্নর থাকছেন কিনা সে প্রশ্নে একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কিছু বলা যাচ্ছে না, উপরের মর্জি। এ বিষয়ে আমাদের বলার ক্ষমতা নেই।
রিজার্ভের টাকা চুরি ঘটনার তদন্তে নিয়োজিত একটি সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কর্মকর্তাসহ ১৫ জনকে নজরদাড়িতে রেখেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এদের মধ্যে ৩ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিও জড়িত বলে জানা গেছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে ৮ কর্মকর্তা এই চুরির সাথে জড়িত তা গোয়েন্দারা প্রায় নিশ্চিত। শীর্ষ মহলের নির্দেশনা পেলেই আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্পর্শকাতর এ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্ট পরিচালিত হচ্ছে একজন অস্থায়ী মহাব্যবস্থাপক (চুক্তিভিত্তিক) দিয়ে। রিজার্ভ ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ এ বিভাগে মহাব্যবস্থাপক পদে বদরুল হক খানকে ২০১৪ সালের ৬ জুন তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ পদের জন্য স্থায়ী একাধিক যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মকর্তা থাকা সত্ত্বেও কেন একজন অস্থায়ী কর্মকর্তাকে দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ এন্ড ট্রেজারী ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দুর্বলতাকেও এ ঘটনার জন্য দায়ী করছেন অনেকে। ওই শাখার দায়িত্বে থাকা মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের অভিযোগ তিনি বিদেশ পাগল। দেশে থাকলে বিভিন্ন তদবিরে ব্যস্ত থাকেন। বিভাগের কাজে তার তদারকির অভাবকেও দায়ি করেছেন অনেকে। একই সঙ্গে এই শাখার গোপনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের জরুরি সভা হবে। সভায় রিজার্ভ থেকে টাকা চুরির বিষয়ে তদন্ত দল তাদের সর্বশেষ অবস্থান তুলে ধরবেন। একই সঙ্গে টাকা চুরির বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকও তার অবস্থান পরিষ্কার করবে। যদিও রাতে সাড়ে ৮টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা জানিয়েছেন, আজকের নির্ধারিত বোর্ড সভা হচ্ছে না। কারণ হিসেবে তিনি জানান, এতো কম সময়ে পরিষদের সদস্যরা আসতে পারছেন না বলে সভা করা সম্ভব হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি হয় ৫ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সাইবার আক্রমণে ৩৫টি ভুয়া পরিশোধ নির্দেশের মাধ্যমে ৯৫ কোটি ১০ মার্কিন ডলার বা প্রায় ৭ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা স্থানান্তরের প্রস্তাব পাঠানো হয়। তার মধ্যে ৩০টি নির্দেশ আটকানো সম্ভব হয়। তাতে ৮৫ কোটি ডলার বেহাত হওয়া প্রতিহত করা গেছে। তবে পাঁচটি পরিশোধ নির্দেশের বিপরীতে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার বা প্রায় ৮০৮ কোটি টাকা ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কায় চলে যায়। তার মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে ২ কোটি ডলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে। ফিলিপাইনে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার বা প্রায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা থেকে মাত্র ৬৮ হাজার ডলার বা ৫৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা ফেরত এসেছে। বাকী টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। কারণ ওই টাকা ব্যাংকিং চ্যানেলে নেই বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাজকোষ কেলেঙ্কারিতে তোলপাড়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ