পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সুযোগ থাকছে নতুন অপারেটরের : তরঙ্গ ফি ২৭ ও ৩০ মিলিয়ন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় চলতি বছরেই ফোরজি চালু : তারানা হালিম
নতুন একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের আসার সুযোগ রেখেই ফোরজি নীতিমালা অনুমোদন করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। নীতিমালায় ফোরজির লাইসেন্স ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ কোটি টাকা। মোবাইল ফোন অপারেটরদের আপত্তি এবং দাবির মুখে ফোরজি’র রেভিনিউ শেয়ারিংয়েও পরিবর্তন এনেছে সরকার। এর আগে খসড়া নীতিমালায় নির্ধারিত ১৫ শতাংশ পরিবর্তন করে চুড়ান্ত নীতিমালায় টুজি এবং থ্রিজি’র মতো ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ারিং (অর্জিত আয়ের সরকারি ভাগ) নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসাথে স্পেকট্রাম (তরঙ্গ) নিলামের জন্য ফিও নির্ধারণ করেছে মন্ত্রণালয়। ২১০০ মেগাহার্টজে ২৭ মিলিয়ন এবং ১৮০০ ও ৯০০ মেগাহার্টজে ৩০ মিলিয়ন করে নিলামের ভিত্তিমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ফোরজি লাইসেন্সিং গাইডলাইনের অনুমোদন দেয়। এর মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ খাতে নতুন মাত্রা যুক্ত হলো বলে মন্তব্য করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং তার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুসারে চলতি বছরেই ফোরজি চালু করার লক্ষ্যে কাজ করছে মন্ত্রণালয়। মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোও ফোরজি চালুর জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এর মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ খাতে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরেই দেশে চতুর্থ প্রজন্মের (ফোরজি) টেলিযোগাযোগ সেবা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য ফোরজি নীতিমালা চুড়ান্ত করে অনুমোদন দিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। নীতিমালায় ফোরজির লাইসেন্স ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ কোটি টাকা, বার্ষিক লাইসেন্স ফি ৫ কোটি, লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারী মোবাইল ফোন অপারেটরকে ব্যাংক গ্যারান্টি হিসেবে দিতে হবে ১৫০ কোটি টাকা, আবেদন ফি ৫ লাখ টাকা। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (বিটিআরসি) চুড়ান্ত নীতিমালায় রেভিনিউ শেয়ারিং ফি ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও অপারেটরগুলোর আপত্তির মুখে তা সংশোধন করে টুজি ও থ্রিজির মতো ৫ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। মন্ত্রণালয়ের চুড়ান্ত অনুমোদিত নীতিমালায়ও রেভিনিউ শেয়ারিং নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এর সাথে সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের জন্য নির্ধারিত হয়েছে ১ শতাংশ।
ফোরজির ছাড়াও তরঙ্গ নিলামের ফি চুড়ান্ত করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। নীতিমালায় ২১০০ ব্যান্ডের প্রতি মেগাহার্জ তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ই-জিএসএম ৯০০ ও ১৮০০ ব্যান্ডের প্রতি মেগাহার্জ তরঙ্গ ৩০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারিত হয়েছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, তরঙ্গ নিলামে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিটি ব্যান্ডের জন্য বিড আর্নেস্ট মানি হিসেবে পৃথকভাবে ১৫০০ মিলিয়ন টাকা জামা দিতে হবে এবং নিলামে অংশগ্রহণের আবেদন ফি ৫ লাখ টাকা। এছাড়া নিলামের মাধ্যমে তরঙ্গ বরাদ্দ পেলে তরঙ্গ ফি’র ৬০ শতাংশ ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। বাকী ৪০ শতাংশ চারটি সমান কিস্তিতে পরবর্তী চার বছরের মধ্যে পরিশোধ করার সুযোগ রাখা হয়েছে। আর বার্ষিক লাইসেন্স ফি টুজি ও থ্রিজির মতো একইভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
অপারেটরদের দাবির মুখে বাড়তি টুজি ও থ্রিজি তরঙ্গ বরাদ্দের জন্য নিলামের সময় পরপর দুইবার পিছিয়ে ২০১৫ সালের মে মাসে নিলামের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ায় বিটিআরসি। তরঙ্গ নিলামে ভিত্তিমূল্য ও শর্ত চূড়ান্ত না করায় নিলাম প্রায় দুই বছর ধরে ঝুলে থাকে। সে সময় নিলাম অনুষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী, ১৮০০ মেগাহার্টজের ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছিল তিন কোটি ডলার বা ২৩২ কোটি টাকা। আর ২১০০ মেগাহার্টজে প্রতি মেগাহার্টজের ভিত্তিমূল্য দুই কোটি ২০ লাখ ডলার বা প্রায় ১৭০ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল ওই নীতিমালায়।
নিলামযোগ্য তরঙ্গ: নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে কমিশনের কাছে নিলামযোগ্য ৪৬.৪ মেগাহার্জ তরঙ্গ রয়েছে। এর মধ্যে ই-জিএসএম ব্যান্ডের ৩.৪, ১৮০০ ব্যান্ডের ১৮ এবং ২১০০ ব্যান্ডের ২৫ মেগাহার্জ তরঙ্গ নিলামের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা যে কোন মূল্যে ২০১৭ সালের মধ্যে ফোরজি সেবা চালুর নির্দেশনা দিয়েছেন। সে আলোকেই কাজ করছে মন্ত্রণালয়। অপারেটরগুলোও ফোরজি সেবা চালু করতে প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া তরঙ্গ নিলামের বিষয়ে তিনি বলেন, ফোরজি লাইসেন্স প্রদানের পাশাপাশি দ্রুততার সঙ্গে আমাদের তরঙ্গ নিলামের আয়োজন করতে হবে। নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে দুটি সুবিধা পাওয়া যাবে উল্লেখ করে তারানা বলেন, প্রথমত ফোরজি সুবিধা চালু এবং দ্বিতীয়টি অপাটেররা পর্যাপ্ত তরঙ্গ নেওয়ার ফলে কোয়ালিট অব সার্ভিস (সেবার গুণগত মান) এর মান বাড়বে। কারণ বর্তমান সময় তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে তরঙ্গ স্পেকট্রাম না থাকায় কল ড্রপ সংক্রান্ত গ্রাহকের কাছ থেকে অনেক বেশি অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা আশা করছি তরঙ্গ নিলামের মাধ্যমে কোয়ালিটি অব সার্ভিস এর মান বাড়বে।
গত ফেব্রুয়ারিতেই ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে এক সভায় যে কোনো মূল্যে ২০১৭ সালের মধ্যেই ফোরজি চালু করতে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। বাংলাদেশে ১৯৯৩ সালে সিটিসেলের মাধ্যমে প্রথম টুজি প্রযুক্তির মুঠোফোন সেবা চালু হয়। এরপর ২০১২ সালে সরকারি মালিকানাধীন অপারেটর টেলিটক থ্রিজি প্রযুক্তির সেবা চালু করে। ২০১৩ সালের অক্টোবরে অপর চার অপারেটর থ্রিজি চালু করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।