পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ইনকিলাব ডেস্ক : ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় খাবারের গলাকাটা দাম নিলে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে অভিযোগ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ওই দোকানের যা জরিমানা হবে, তা ভোক্তা পেয়ে যাবেন তার চার ভাগের এক ভাগ। অধিদফতরের অস্থায়ী কার্যালয় মেলা প্রাঙ্গণে ভিআইপি গেটের পাশে এবং মেলার সচিবালয়ের সামনে অবস্থিত।
শুধু খাবারের ক্ষেত্রেই নয়, যেকোনো পণ্যের মান নিয়ে যদি ক্রেতা চ্যালেঞ্জ করতে পারেন এবং তা নিয়ে যদি জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে অভিযোগ করা হয়, তা প্রমাণ হলে আদায়কৃত জরিমানার ২৫ শতাংশ ক্রেতার হাতে তুলে দেবে অধিদফতর।
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর মাধ্যমে ভোক্তাদের এ ধরনের অধিকার সংরক্ষিত হয়েছে। এ আইনের আওতায় একজন ভোক্তা সারা বছরই সহায়তা পাওয়ার অধিকার রাখেন।
যেসব বিষয়ে ভোক্তা তার অধিকারের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করতে পারবেন- পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করা, মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করা, সেবার মূল্য তালিকা সংরক্ষণ ও প্রদর্শন না করা, ধার্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্য নেয়া, ওষুধ বা সেবা বিক্রয়, ভেজাল পণ্য বা ওষুধ বিক্রয়, খাদ্যপণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ, অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ, মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা প্রতারিত করা, প্রতিশ্রæত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা, ওজনে কারচুপি, বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রে কারচুপি, পরিমাপে কারচুপি, দৈর্ঘ্য পরিমাপকার্যে ব্যবহৃত পরিমাপক ফিতাতে কারচুপি, পণ্যের নকল প্রস্তুত বা উৎপাদন, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রয়, সেবাগ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্নকারী কাজ; অবহেলা ইত্যাদি দ্বারা সেবাগ্রহীতার অর্থ, স্বাস্থ্য, জীবনহানি ইত্যাদি ঘটানো; মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলা দায়ের, অপরাধ পুনঃসংঘটন ও বাজেয়াপ্তকরণ।ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইনের-২০০৯ আইনের ৩৭ থেকে ৫৬ ধারা পর্যন্ত এসব অপরাধে নির্ধারিত সর্বোচ্চ (তিন বছর) দরে দ্বিগুণ দামসহ মালামাল বাজেয়াপ্তকরণের বিধান রয়েছে। আইনের আওতায় অভিযোগ দায়ের করলে এবং তা কর্তৃপক্ষের তদন্তে প্রমাণিত ও জরিমানা আরোপ করা হলে আদায়কৃত জরিমানার ২৫ শতাংশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগকারীকে প্রদান করা হয়।মেলায় ও বছরের অন্য সময়ে প্রতারণা, দুই নম্বর পণ্য বা নির্ধারিত দামের বেশিতে খাদ্যপণ্য কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা।
মূলত ভোক্তা অধিকার আইন সম্পর্কে না জানার কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে দাবি করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এর ফলে ক্রেতারা নিয়মিত প্রতারিত হতে হচ্ছে। তবে বণিজ্যমেলায় ও বছরে অন্য সময়ে এ ধরনের সহায়তা পাওয়া যায়, এ বিষয় বেশির ভাগ মানুষ জানেন না। ভোক্তাদের অধিকারের সরকারের নির্ধারিত আইন রয়েছে, এ কথা জানেন না অনেকেই। মূলত আইনের ব্যবহার ও গণপ্রচারণা না থাকায় এর প্রয়োগ হচ্ছে না বলে মনে করা হচ্ছে। মেলার দর্শনার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোক্তা-অধিকারের অফিস অনেকেই চেনেন না। মেলা প্রাঙ্গণে অধিদফতরটির অস্থায়ী কার্যালয়টি ভিআইপি গেটের পাশে এবং মেলার সচিবালয়ের সামনে অবস্থিত।
যেখানে সাধারণ দর্শনার্থী প্রবেশ সংরক্ষিত। এ কারণে অফিসটি জনসাধারণের নজরে আসছে না। তবে মেলার মধ্যখানে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নের পাশে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্যাভিলিয়ন রয়েছে। তাতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
একইভাবে ভোক্তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অধিদফতরের কার্যালয়টি মেলার মাঝখানে স্থাপন করার অনুরোধ জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা। বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণে দেখা গেছে, মেলার শুরুতেই কর্তৃপক্ষ খাবারের দাম নির্ধারণ করে মূল্য তালিকা টানানোর নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু মেলায় সব খাবারের দোকানে নেই তালিকা। এজন্য খাওয়ার পর ভোক্তাদের চরম মূল্য দিতে হচ্ছে।
খাবারের স্টলগুলোতে নির্ধারিত দামের অতিরিক্ত দাম রাখছেন এমন অভিযোগ অধিকাংশ ক্রেতার। একই সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও পরিবেশন করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে। ভোক্তাদের অধিকার ও সহায়তার বিষয়ে কথা বলেছেন, অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভি। তিনি বলেন, প্রতিদিনই ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইনের আওতায় খাদ্য পণ্য, প্রসাধনী ও মিথ্যা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতারণার বিষয় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ ধরনের কোনো অপরাধ পরিলক্ষিত হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তায় অভিযান চালানো হচ্ছে। এ পর্যন্ত ভোক্তাদের অভিযোগ ও অধিদফতরের পর্যবেক্ষণে এক লাখ টাকার বেশি জরিমানা করা হয়েছে এবং কয়েক দফায় অভিযান চালানো হয়েছে।
আইনের বাধ্যবাধকতার ভিত্তিতে অভিযোগকারীকে জরিমানার ২৫ শতাংশ তাৎক্ষণিকভাবে প্রদান করা হচ্ছে। ভোক্তাদের এমন অধিকার রয়েছে, তা প্রচার-প্রচারণার অভাবে জানতে পারছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ ঠিক নয়। তবে আরো বেশি প্রচার হলে ভালো হতো।
এজন্য গণমাধ্যমের সহায়তা দরকার। গণমাধ্যম পারে ভোক্তাদের সচেতন করে তুলতে। তবে অধিদফতরের পক্ষ থেকে মেলার শুরু থেকে দর্শনার্থীদের হাতে লিফলেট দেয়া হচ্ছে। মেলার মাইকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ভোক্তা-অধিকারবিরোধী কার্য ও অপরাধ সম্পর্কে ইফতেখারুল আলম জানান, আইনের ৩৭ থেকে ৫৬ ধারা পর্যন্ত যেসব অপরাধের বিষয় উল্লেখ রয়েছে, তা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ (তিন বছর) দলের দ্বিগুণ দÐসহ মালামাল বাজেয়াপ্তকরণের শাস্তির বিধান রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।