Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিচার বিভাগকে ধ্বংস করতেই প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ চাওয়া হচ্ছে-ড.খন্দকার মোশাররফ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ চাওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বাতিলকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীনদের ‘বাড়াবাড়ির’ তাদের চরম খেসারত দিতে হবে। গতকাল (শনিবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী নাগরিক দল আয়োজিত বিএনপি ৩৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বীর উত্তর শহীদ জিয়াউর রহমান’শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। খন্দকার মোশাররফ বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। কিন্তু সরকারের হাত থেকে বিচার বিভাগের ক্ষমতা ছুটে যাওয়ায় তা মানতে পারছে না। এ কারণে মন্ত্রীদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এখন তারা রাস্তায় নেমে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি তুলেছেন। আমরা দেখছি যে, রাস্তায় মানববন্ধন করা হচ্ছে। দাবি কী? প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে হবে। যদি প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে হয়, তাহলে বিচার বিভাগ ধ্বংস হয়ে যাবে। দেশও ধ্বংস হয়ে যাবে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, সরকারের চাপে কিংবা একটি দলের চাপে পড়ে যদি প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে হয়, তাহলে রাষ্ট্রের যে তৃতীয় স্তম্ভ অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য স্তম্ভ- এই বিচার বিভাগ ধ্বংস হয়ে যাবে। তিনি বলেন, সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংসের চেষ্টা করছে। দেশের মানুষ এ অন্যায় মেনে নেবে না। সরকারের স্বৈরাচারী কর্মকান্ডের ফলে তাদের পতনের আন্দোলন শুরু হতে আর বেশি সময় নাই।’
বাড়াবাড়ির জন্য আওয়ামী লীগকে খেসারত দিতে হবে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগকে ভবিষ্যতে এর জন্য খেসারত দিতে হবে। ভুল করলে আল্লাহ মাফ করে। কিন্তু রাজনীতেতে ভুল করলে খেসারত দিতে হয়। অতীতে তা প্রমাণ হয়েছে। কারণ রাজনীতিতে মাফ বলে কিছু নেই। তিনি বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর বাতিলের পর বিচার বিভাগ এবং নির্বাহী বিভাগের মধ্যে মুখোমুখি অবস্থান তৈরি করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীও এ সংশোধনীর উপর বক্তব্য দিয়ে বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগকে মুখোমুখি করে দিয়েছে যা দেশের জন্য মঙ্গল হতে পারে না।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি যে, বিচারালয়কে স্বাধীন রেখে দেশকে অগ্রসর করতে হবে। তা না হলে সাধারণ মানুষের শেষ আশা ভরসার স্থল বিচার বিভাগ সেটিও সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। সরকারকে বলব, আজকে রাস্তায় আপনারা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ চাচ্ছেন। সময় বেশি দূরে নয়, এদেশের জনগণ আপনাদেরই পদত্যাগ চাইবে। সেই সংগ্রাম, সেই আন্দোলন বেশি দূরে নয়। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কথা বলে সরকার ‘আদালত অবমাননা’ করছে দাবি করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের কোনো রায়ের বিরুদ্ধে কথা বললে বলা হয় আদালত অবমাননা। আজকে সরকার আদালত অবমাননা করছে, সাবেক প্রধান বিচারপতি বিচারপতি খায়রুল হক করছেন, মন্ত্রীরা করছেন। রাস্তায় মানুষ নামিয়ে দিয়ে তারা আদালত অবমাননা করছে। এটা কখনো কেনো দেশের জন্য কাক্সিক্ষত নয়, এটা অশনি সংকেত। যেভাবে আজকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দিয়ে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের মুখোমুখি করে দিয়েছেন, এটা কখনো দেশের জন্য মঙ্গলজনক হতে পারে না। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের প্রতি অশ্রদ্ধার জন্য একদিন আওয়ামী লীগকে জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, রায়ে যে অবজারভেশন দেওয়া হয়েছে, এগুলো মানা এই সরকারের নৈতিক দায়িত্ব; যা আপনারা এখন পর্যন্ত অমান্য করছেন। আমি বিশ্বাস করি, এই অন্যায় করার জন্য, সংবিধানকে অশ্রদ্ধা করার জন্য, গণতন্ত্রকে অশ্রদ্ধা করার জন্য, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগকের রায়কে অশ্রদ্ধা করার জন্য জনগণের আদালতের একদিন আপনাদের বিচার হবে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা গণতন্ত্র আজ আওয়ামী লীগের বাক্সে বন্দি। এই গণতন্ত্রকে অতীতে বাকশাল সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ হত্যা করেছিল। এই গণতন্ত্রকে হত্যা করার জন্য এখন তারা ষড়যন্ত্র করছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আগামী নির্বাচনেও একটা নাটক করে ভোট বিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে আবার তারা ক্ষমতায় যাওয়ার পায়তারা করছে। আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন আর হবে না, হতে দেওয়া হবে না।
জাতীয়তাবাদী নাগরিক দলের সভাপতি সৈয়দ মো. ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে ও মঞ্জুর হোসেন ঈসার পরিচালনায় আলোচনায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সুকোমল বড়ুয়া প্রমুখ। ####



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ