Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রবীণ নয়, নবীনদের নিয়ে কমিটি করুন

খালেদা জিয়াকে ডা. জাফরুল্লাহর পরামর্শ

প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন কাউন্সিলে প্রবীণদের বাদ দিয়ে নবীনদের নিয়ে দলের কমিটি গঠনের জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। গতকাল শনিবার বিকালে এক আলোচনা সভায় তিনি এই পরামর্শ দেন। বর্তমানে দেশ তিনটি ঠেঙ্গারি বাহিনী দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দলের স্ট্যান্ডিং কমিটি, জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টা কাউন্সিলের সংখ্যা বাড়িয়ে ঘর ভর্তি করে লাভ হবে না। আমার মতো লোককে কোনো জায়গা নিয়ে তো লাভ নেই, হাঁটতে পারি না, দৌড়াতে পারি না। নিতে হবে নবীনদেরকে, যারা সাহস করে রাস্তার সামনে দাঁড়াতে পারবে। আর প্রবীণরা পেছনে থাকবেন। উনাদের সংখ্যা আর বাড়িয়ে লাভ নেই। খালেদা জিয়াকে এই সহজ জিনিটা বুঝতে হবে। শত শত উপদেষ্টা আর বেশি বয়োবৃদ্ধ দিয়ে গুলশান অফিসে ভরপুর করলে দেশের পরিবর্তন হবে না।
ডা. জাফরুল্লাহর এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বি-মত পোষণ করে দলের যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, জাফরুল্লাহ ভাই বলেছেন তরুণরাই শক্তি, তাদেরকে সামনে আনতে হবে। এটা আমরাও বিশ্বাস করি। তবে এক্ষেত্রে প্রবীণদের দিকনির্দেশনাও অপরিহার্য। নবীনদের শক্তি আর প্রবীণদের দিক নির্দেশনার সমন্বয় ঘটিয়ে আমাদের লক্ষ্য সফল করতে হবে।
বিএনপির সমালোচনা আমরা করি, কর্মীরাও করেন, আমাদের বুদ্ধিজীবীরাও করেন। তবে আমি গ্রামে গিয়ে দেখিছি সাধারণ মানুষ বিএনপিকে নিয়ে এতো সমালোচনা করেন না। এ সময়ে প্রধান অতিথির আসনে বসা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে মোহাম্মদ শাহজাহানের বক্তব্য সমর্থন করে করতালি দিতেও দেখা গেছে। তবে শাহজাহানের বক্তব্যের সময়ে জাফরুল্লাহ ছিলেন না। তিনি বক্তব্য দিয়ে কিছুক্ষণ পর অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী দেশের বর্তমান সংকটের নানা দিক তুলে ধরে বলেন, দেশে এখন উন্নয়নের নামে গণতন্ত্রের কবর হয়েছে। এখানে স্বৈরাচার আছে, বাকশাল আছে, দুর্নীতির চরম শিকার। গত কয়েকদিন যাবত দেখছেন, সরকারি হাজার হাজার কোটি সরকারি ব্যাংক থেকে লোপাট হয়ে যায়। কি করে একমাস আগে ঘটনা ধরা পড়ার পরও বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর কী করে নিশ্চুপ বসে থাকতে পারেন। অর্থমন্ত্রী কী করে চুপ করে বসে থাকতে পারেন। অন্য যে কোনো দেশ হলে ন্যূনতম যে কাজটি করতেন, দুইজনই স্বউদ্যোগে পদত্যাগ করতেন। কারো বলার অপেক্ষায় থাকতেন না।
এতো প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হলেও আর কতদিন ভালো সুযোগের অপেক্ষায় বিরোধী দল নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকবেন-আমি জানি না।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে মশিয়ুর রহমান যাদু মিয়ার ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মশিয়ুর রহমান জাতীয় স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়।
বিএনপির সমর্থক বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত গণস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, বতর্মানে দেশ পরিচালিত হচ্ছে তিনটি ঠেঙ্গারি বাহিনী দ্বারা। এরা হচ্ছে- পুলিশ বাহিনী, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও দুর্নীতি দমন কমিশন। তারা হাইকোর্টকেও দখল করার জন্য সম্প্রতিককালে যে ঘটনা ঘটিয়েছে, তা উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই।
পুলিশ ঠেঙ্গারি বাহিনী হলে কী হয়? পাওনা টাকা চাইতে গেছে, সরকারি পিস্তল দিয়ে এএসআই গুলি করে দিয়েছেন ঢাকার বুকে।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধার নামে কী হচ্ছে। চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব খান এসেছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কিছু সাহায্য-সহযোগিতার জন্য। মন্ত্রণালয়ে সচিব কী সাহস তাকে রুম থেকে অপমান করে বের করে দিয়েছিলেন। সেই দুঃখে আইয়ুব খান আত্মহত্যা করেছিলেন। এখন শুনছি, সেই সচিব সাহেব নাকী মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন না। শুধু তাই নয়, সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল হারুনও নাকী মুক্তিযোদ্ধা না। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি ছিলেন- মহিউদ্দিন আহমেদ সাহেব যিনি বাংলাদেশের প্রথম ফরেন অফিসার উনিই প্রথম বিলাতে হাইকমিশন ত্যাগ করে আমাদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। ৯ মাস যাবত উনি নিজের নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তি করাতে পারেননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রবীণ নয়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ