পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নেছারাবাদ সংবাদদাতা : আমীরে হিযবুলাহ, মুজাদ্দিদে যামান ছারছীনা শরীফের পীর ছাহেব আলহাজ্ব মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ (মা.জি.আ.) বলেছেন- আমাদের ভারতবর্ষে কোন নবীর আগমন ঘটেনি। বণিক ও মুবাল্লিগ বেশে কতিপয় সাহাবায়ে কেরাম এদেশে এসেছেন। তবে উল্লেখযোগ্য হারে যারা এসেছেন তারা হচ্ছেন নায়েবে নবী তথা হক্কানী আউলিয়ায়ে কেরাম। এ দেশের মুসলিম শাসন আউলিয়ায় কেরামের আগমনের পথ সুগম করেছে মাত্র। এদেশের কোন বিধর্মীকে জোরপূর্বক ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হয়েছে মর্মে ইতিহাসে কোনো প্রমাণ নেই। বরং আউলিয়ায়ে কেরামের চরিত্র-মাধুর্য এবং তাছাররুফের বদৌলতে সাগর পাড়ের এ বঙ্গদেশটি মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। “আমরা তাদের উত্তরসূরী” একথাটি আমাদের মনে রাখতে হবে। তবে শয়তান বসে নেই, সে নিত্য নতুন সুরাতে নানা বেশে মানুষের দ্বারে হাজির হয় তার গোমরাহীর পসরা সাজিয়ে। বেএলেম, মূর্খ, হাক্বীকতে দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ লোকদের মুখেও এটা কিতাবে নেই, ওটা হাদীসে নেই, এটা বিদআত, ওটা সুন্নাতের খেলাফ, এটা যঈফ অথবা জাল হাদীস ইত্যাদি বক্তব্য বেশ শোনা যাচ্ছে। আমরা হানাফী মাযহাবের অনুসারী। হানাফী মাযহাব যে হাদীসের নির্যাস থেকে উৎসারিত তা সহীহ হাদীস দ্বারা আল্লামা ইমাম ত্বহাবী (রহ.) প্রমাণ করে গেছেন। ওলামায়ে কেরামের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একথার উপরে যে, কেবল মাত্র চার মাযহাবের অনুসারীগণই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অনুসারী। আর কেবলমাত্র তারাই নাযী বা পরিত্রাণ প্রাপ্ত দল। যাদের শানে প্রিয়নবী (স.) এরশাদ করেছেন- যে মত ও পথের উপর আমি ও আমার সাহাবীগণ আছে। কিন্তু বর্তমানে বিদেশী মদদে একদল মুসলমান নামধারী লোক ইসলামের নামে উদ্ভট বক্তব্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
গতকাল শনিবার পিরোজপুর জেলার নেছারবাদ উপজেলার সন্ধ্যা নদীর তীরে অবস্থিত ছারছীনা দরবার শরীফে তিনদিনব্যাপী ১২৬ তম বার্ষিক ঈছালে ছওয়াব মাহফিলের শেষ দিন বাদ জোহর আখেরী মুনাজাতপূর্ব ভাষণে লাখো লাখো ভক্ত মুরীদান এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের উদ্দেশ্যে হযরত পীর ছাহেব কেবলা একথা বলেন।
মাহফিলের শেষ দিন বিশেষ মেহমানের বক্তব্য রাখেন- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পটুয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আ. খ. ম. জাহাঙ্গির হোসাইন, পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এ.কে.এম.এ. আউয়াল, আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এ. এম. এনামুল হক, পিরোজপুর জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম শেখ, পুলিশ সুপার ওয়ালিদ হোসাইন, বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাঈদুর রহমান রিন্টু, পৌর মেয়র গোলাম কবীর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ৫৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিশিষ্ট শিল্পপতি হাজী মোঃ মাসুদ প্রমুখ।
মাহফিলের শেষ দিন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন- ছারছীনার পীর ছাহেব কেবলার বড় জামাতা আলহাজ্ব মাওলানা মির্জা নূরুর রহমান বেগ, ড. মাওলানা কাফিল উদ্দিন সরকার সালেহী, মাওলানা মুহা. রুহুল আমিন ছালেহী, মাওলানা মুফতী মুহা. শাহআলম, মাওলানা মুহা. ওসমান গণি ছালেহী প্রমুখ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন- আমি বাংলাদেশের বহু দরবারে গিয়েছি কিন্তু ছারছীনায় এসে আমার ভুল ভেঙ্গেছে। আমার স্পষ্ট ধারণা হয়েছে অন্যান্য দরবারের চেয়ে এ দরবার সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। ছারছীনা আদর্শভিত্তিক একটি হক্কানী দরবার। এ দরবার ইসলামের সঠিক প্রচার ও প্রসারে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ দরবারে এসে আমি সত্যি অভিভূত, বিস্মিত এবং দারূণ পুলকিত। এজন্য আমি মহান আল্লাহর দরবারে লাখো লাখো শুকরিয়া আদায় করছি। বঙ্গবন্ধু এ দরবারকে ভালবাসতেন। মরহুম পীর শাহ্ সূফী আবু জাফর (রহ.) এর সাথে তার গভীর সম্পর্ক ছিল।
সবশেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সুখ- শান্তি ও সার্বিক কল্যাণ কামনা করে পীর ছাহেব কেবলা আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।