Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ ও ভারত সরকার যৌথভাবে সুন্দরবন ধ্বংস করছে -আনু মুহাম্মদ

প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ‘ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসি ভারতের পরিবেশ নীতিমালা ভঙ্গ করে বাংলাদেশে সুন্দরবন বিধ্বংসী প্রকল্প পরিচালনা করছে। কার্যত কর্পোরেট স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের সরকার যৌথভাবে সুন্দরবন ধ্বংসে লিপ্ত হয়েছে। কিন্তু এই সুন্দরবন বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের জন্যই বড় আশ্রয়। সেই জন্য দুই দেশের মানুষকে যৌথভাবেই আন্দোলন ও সংহতির মাধ্যমে সুন্দরবনকে রক্ষা করতে হবে।’
সংগঠনের সুন্দরবন অভিমুখী জনযাত্রা গতকাল (শনিবার) যশোর থেকে নওয়াপাড়া, ফুলতলা ও দৌলতপুর হয়ে খুলনায় অবস্থান করে। জনযাত্রা খুলনায় পৌঁছানোর পর বিকালে হাদিস পার্কে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সুন্দরবন রক্ষায় রামপাল ও ওরিয়ন বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল এবং জাতীয় কমিটি ঘোষিত সাত দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ঢাকাসহ সারা দেশ থেকে সুন্দরবন অভিমুখী জনযাত্রার গতকাল তৃতীয় দিন। পথে পথে চলতে থাকে জনসংযোগ, প্রচারপত্র বিলি, পরিবেশিত হচ্ছে সুন্দরবন রক্ষার গান।
সুন্দরবন জনযাত্রা গতকাল সকাল ৯টায় মিছিলসহ যশোরের বিভিন্ন পথ প্রদক্ষিণ করে। এরপর সকাল ১০ টায় যশোর থেকে রওনা করে। যশোরের নওয়াপাড়ায় জনযাত্রা মিছিল সহকারে প্রবেশ করে। নওয়াপাড়ায় বেঙ্গল টেক্সটাইলের সামনে নুরুজ্জামান সর্দারের সভাপতিত্বে ও চিন্ময় সরকারের পরিচালনায় এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর জনযাত্রা ফুলতলায় পৌঁছে সেখানে জাতীয় কমিটির খুলনা জেলার নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় অসংখ্য মানুষ জনযাত্রাকে স্বাগত জানিয়ে জনযাত্রায় যোগ দেন। এর পর ফুলতলা স্বাধীনতা চত্বরে গাজি নওশেরের সভাপতিত্বে ও আবদুল মালেকের পরিচালনায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ফুলতলা থেকে জনযাত্রা দুপুর দেড়টায় দৌলতপুর পৌঁছে। দৌলতপুরে পুর্ণেন্দু দে’র সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিভিন্ন সভায় নেতৃবৃন্দ যশোরের জনসভার অনুমোদন বাতিল ও বিকালে সমাবেশ মিছিল প্রতিবন্ধকতা তৈরীর তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, কোন দমন পীড়ন সুন্দরবন তথা সম্পদ রক্ষার আন্দোলন থেকে জনগণকে বিরত করতে পারবে না। বক্তারা এ ধরনের দমন পীড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জবাব দেয়ার আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, সুন্দরবনের আন্দোলনে বিজয়ী না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বনা।
সমাবেশে আনু মুহাম্মদ বলেন, কোন কোন মন্ত্রী নির্বোধের মতো বলেন, মানুষ আগে, পশু-পাখি-গাছপালা-পরিবেশ পরে। যে পরিবেশে গাছপালা-পশু-পাখি-মাছ-প্রাণ বাঁচে না সেই পরিবেশে যে মানুষও বাঁচতে পারে না, তা বুঝতে কা-জ্ঞানই যথেষ্ট। কিন্তু মুনাফার লোভে এদের কা-জ্ঞানও বিলুপ্ত হয়েছে। বিদ্যুতের কথা বলে দেশী বিদেশী কিছু ব্যবসায়ীর হাতে বিদ্যুৎ খাতসহ গোটা দেশকেই তুলে দেয়া হচ্ছে। এই ধারাতেই এখন সবচেয়ে বড় সর্বনাশের শিকার হতে যাচ্ছে সুন্দরবন।
উল্লেখ্য যে, সুন্দরবন জনযাত্রার প্রতি সংহতি জানিয়ে ভারত থেকে ১২ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল ১০ মার্চ থেকে জনযাত্রায় অংশ নিচ্ছেন। প্রতিনিধি দলে আছেন পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, গুজরাট, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও দিল্লীর বিজ্ঞানী, লেখক, সাংবাদিক, পরিবেশ সংগঠক, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা, বন অধিকার সংগঠক। তাছাড়া জনযাত্রার প্রতি সংহতি জানিয়ে গতকাল ১১ মার্চ লন্ডনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং গতকাল ১২ মার্চ সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় নেদারল্যান্ডে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ ও ভারত সরকার যৌথভাবে সুন্দরবন ধ্বংস করছে -আনু মুহাম্মদ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ