পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : সব প্রস্তুতি শেষ। এবার নেতা আসবেন। প্রচারণা শুরু করবেন। শিকাগোর ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তখন সমর্থকদের মধ্যে মহাব্যস্ততা। কিন্তু হঠাৎই পরিস্থিতি বিগড়ে গেল। কানে ভেসে এলো একযোগে অনেক কণ্ঠের বিরোধী শ্লোগান। আর তারপরই সংঘর্ষ। দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ আহত হলেন বেশ কয়েকজন। ফলাফল, নিরাপত্তাজনিত কারণে সমাবেশটি বাতিল করতে বাধ্য হলেন নেতা। ঘটনাটি শুক্রবার (১১ মার্চ) শিকাগোতে ঘটেছে। আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলে প্রার্থিতার দৌড়ে থাকা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘিরেই এত কিছু ঘটে গেল সেদিন। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলে নিন্দার ঝড় উঠলেও এর জন্য ট্রাম্পকেই দায়ী করছেন অনেকে।
ট্রাম্পের নিজের দলেই এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মনোনয়নের দৌড়ে থাকা টেড ক্রুজ ও মার্কো রুবিও সংঘর্ষের ঘটনাটিকে ‘দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন। সেই সঙ্গে এর জন্য ট্রাম্পকে দায়ী করতে বিন্দুমাত্র ছাড়েননি।
রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন, এর কারণও আছে। তাদের মতে, কর্মী ভিসা, সামাজিক নিরাপত্তা, ইসলাম ও পররাষ্ট্রনীতিসহ নানা ইস্যুতে ট্রাম্পের হঠকারী মন্তব্যের কারণেই তার বিরুদ্ধে রাজপথে নেমেছেন বিক্ষুব্ধ আমেরিকানরা।
ট্রাম্প সর্বপ্রথম সমালোচনার জন্ম দেন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি সংস্কারের দাবি তুলে। এরপর ক্যালিফোর্নিয়ায় মুসলিম দম্পতির গুলির ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তিনি মুসলিম বিদ্বেষী মন্তব্য করে বসলেন। এতে সমালোচনার পারদ যেন আরো এক প্রস্থ বাড়ল। এর কিছুদিন পরই প্রতিবেশী মেক্সিকো বিরোধী মন্তব্য করেও দেশটির সঙ্গে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের দাবি তুলে স্বয়ং পোপের তোপের মুখে পড়লেন তিনি।
গত সপ্তাহেও ‘মুসলিম বিদ্বেষী’ মন্তব্য করে নতুন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন ট্রাম্প। সিএনএন সাংবাদিক অ্যান্ডারসর কুপারকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি সরাসরি বলেছেন, ‘ইসলাম আমাদের ঘৃণা করে’।
সৃষ্ট সমালোচনায় কোথায় নিজের বক্তব্য থেকে সরে আসবেন, তা না ১৫ মার্চের প্রাইমারির আগে রিপাবলিকান দলের সর্বশেষ বিতর্কে নিজের এ মন্তব্যকে আরো সমর্থন দিয়ে ক্ষোভের আগুনে যেন জ্বালানি যোগালেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) অনুষ্ঠিত ওই বিতর্কে সঞ্চালক জ্যাক ট্যাপার মন্তব্যের ব্যাখ্যা চাইলে ট্রাম্প সরাসরি বলেন, আমার ধারণা, মুসলিমদের অনেকেই আমাদের ঘৃণা করেন। এ সপ্তাহে সিএনএন সাংবাদিক অ্যান্ডারসর কুপারকে যা বলেছি, সে কথাতেই আমি থাকছি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এসব মন্তব্য তাকে জনপ্রিয় করে তোলার পরিবর্তে তার বিরুদ্ধে মানুষের মনে ঘৃণার জন্ম দিচ্ছে বেশি। আর তারই বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে শিকাগোর ইলিনেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, প্রচারণার শুরু থেকে ট্রাম্প মাঝে মধ্যেই বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। তবে এবারই প্রথম এতজন বিক্ষোভকারী একত্রে তার বিরুদ্ধে শ্লোগান দিল, তার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হল। এসময় সেখানে এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সমাবেশস্থলের বাইরেও হাজার হাজার লোক বিক্ষোভ করতে থাকে।
বিক্ষোভকারীদের অনেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বর্ণবাদের দায়ে অভিযুক্ত করেন।
মি. ট্রাম্প বলেন, তার বিরুদ্ধে এই ক্রোধে মার্কিন অর্থনীতির ব্যাপারে জনতার যে হতাশা - তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। তিনি আরো বলেন, এখানে তার স্বাধীনভাবে বক্তব্য দেবার অধিকার লংঘিত হয়েছে।
মি.ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী টেড ক্রুজ বিক্ষোভকারীদের নিন্দা করেছেন, তবে তার মতে মি. ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারাভিযান সহিংসতাকে উস্কে দিয়েছে।
ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন বলেছেন, সমাজে বিভাজন সৃষ্টিকারী এসব কথাবার্তা সব আমেরিকানের জন্যই উদ্বেগের বিষয়। সূত্র : বিবিসি, সিএনএন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।