পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার : লামিয়ার সাথে অনৈতিক সম্পর্কে বাঁধাপ্রাপ্ত হয়েই ৫ খুনের ঘটনা ঘটায় ভাগ্নে মাহফুজ। শিল (পুতা) দিয়ে থেতলে দেয় মাথা এরপর শ্বাসরোধ করে একের পর এক হত্যা করা হয় ৫ জনকে। হত্যার পর নির্বিঘেœ ঘরে তালা লাগিয়ে বের হয়ে যায় সে।
নারায়ণগঞ্জ আদলতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুজ্জামান শরীফের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানান মাহফুজ। পরে ৫ খুনের রহস্য জানাতে পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন প্রেস বিফ্রিং করেন।
জবানবন্দিতে ঘাতক মাহফুজ অবলীলায় খুনের বিবরণ দিয়ে জানায়, ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাসায় ঢুকে লামিয়ার খাটের নিচে লুকিয়ে থাকে মাহফুজ। ধারণা ছিল ওই রাতে লামিয়া একাই বাসায় ঘুমাবে। স্বামী শরীফুল রাতে বাসায় না থাকার সুযোগে সে লামিয়ার সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়বে। ঘাতক মাহফুজ তার যৌন লালসা মেটাতে ব্যর্থ হয়। কারণ ঐ রাতে লামিয়ার সাথে ঘুমায় জা তাসলিমা এবং তার মেয়ে সুমাইয়া। লামিয়ার সাথে যৌন লালসা মেটাতে ব্যর্থ হয়ে ৫ খুনের ঘটনা ঘটায় মাহফুজ।
প্রেস ব্রেফিং-এ না’গঞ্জ পুলিশ সুপার
দুপুর দেড়টায় আদালত সংলগ্ন নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘নিহত তাসলিমার স্বামী শফিকুল ইসলাম ও লামিয়ার স্বামী শরীফুল ইসলাম সাধারণত শুক্রবার বাসায় থাকে। কিন্তু শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) এ দুইজন বাসায় ছিল না। সেটা নিশ্চিত হয়েই ওইদিন মাগরিবের নামাজের আগে খুব সম্ভবত বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে দরজা খোলা থাকায় বাসায় প্রবেশ করে মাহফুজ। ফ্ল্যাট বাসার একটি রুমে লামিয়া ও শরীফ এবং অপর রুমে তাসলিমা ও শফিকুল বসবাস করতো। কিন্তু শরীফ ও শফিকুল বাসায় না থাকায় সেদিন তাসলিমার ভাই মোর্শেদুল মোশাররফ বাসায় ছিল। মাগরিবের নামাজের পর ঘরে ঢুকে লামিয়ার ঘরের খাটের নিচে ফ্যানের পাশে অবস্থান করে মাহফুজ। কিন্তু ওই ঘরে লামিয়া না ঘুমিয়ে রাতে টিভি দেখে পাশের ঘরে তাসলিমার ঘরে গিয়ে দুই সন্তানের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ে। আর রাতে লামিয়ার ঘরের বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ে মোর্শেদুল মোশাররফ।’
পুলিশ সুপার আরো জানান, দিনগত রাত আড়াইটার দিকে মোর্শেদুল মোশাররফ বাথরুমে যাওয়ার সময়ে ঘরে শব্দ পেয়ে মাহফুজের উপস্থিতি টের পেয়ে যায়। এরপর অনেক কিছু ঘটে ও জানাজানি হয়ে যায়। পরে মোর্শেদুল মোশাররফ ঘুমিয়ে পড়লে ৩টা কিংবা সোয়া ৩টার দিকে রান্নাঘর থেকে শিল (পুতা) এনে মোর্শেদুল মোশাররফকে ঘুমন্ত অবস্থায় মাথায় আঘাত করে হত্যা করে। সকাল ৭টার দিকে শান্তকে স্কুলে পাঠানোর পর তাসলিমা পাশের ঘরে মোর্শেদুলকে খুঁজতে গেলে বিছানায় রক্তমাখা লাশ দেখতে পায়। তখন তাসলিমা জানতে চাইলে তাকেও মাথায় শিল পাটার শিল দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। হত্যার পর তাসলিমার লাশ মোর্শেদুলের রুমে নিয়ে রাখা হয়। এর কিছুক্ষণ পর লামিয়া এগিয়ে আসলে তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি ঘটে। তখন লামিয়াকে হত্যার চেষ্টা করলে সে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। ওই সময়ে মাহফুজ একটি কাপড় দিয়ে লামিয়াকে শ্বাসরোধ করার চেষ্টার সময়ে পাশে থাকা শিল-পাটার পাটা (পুতা) হাতে নিয়ে মাহফুজকে আঘাত করার জন্য নিক্ষেপ (থ্রো) করে লামিয়া। কিন্তু সেটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে শিশু সুমাইয়ার শরীরে পড়লে সে মারা যায়। তবে আঘাতের পর অনেক সময় বেঁচে ছিল লামিয়া।’
পুলিশ সুপার আরো জানান, ৪ খুনের পর শান্ত স্কুলে চলে যায়। সকাল সোয়া ৭টার দিকে সে আবারও বাসায় প্রবেশ করে। তখন রক্ত দেখে চিৎকার করতে থাকলে তাকে প্রথমে দেয়ালে আঘাত ও পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। হত্যাকা-ের পর টিভির সামনে থাকা তালাচাবি নিয়ে বাইরে থেকে তালা মেরে পালিয়ে যায় মাহফুজ। আর চাবিটি ফেলে দেয় বাড়ির রিজার্ভ ট্যাংকে। ওই চাবিটি ও শিলপাটা ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। সকাল সোয়া ৭টা কিংবা ৭টা ২০ মিনিটেই পালায় মাহফুজ। এসপি আরো জানান, আমরা তদন্ত একেবারেই শেষ করে এনেছি। অচিরেই আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে। উল্লেখ্য, গত ১৬ জানুয়ারি রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের ২নং বাবুরাইল খানকা মোড় এলাকার একটি ফ্ল্যাট বাসায় একই পরিবারের পাঁচজনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহতরা হলেন-গৃহবধূ তাসলিমা (৩৫), তার ছেলে শান্ত (১০) ও মেয়ে সুমাইয়া (৫), ছোট ভাই মোর্শেদুল (২২) ও তাসলিমার জা লামিয়া (২৫)। এ ঘটনায় পরে দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।