পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারত থেকে প্রবল বেগে ধেয়ে আসা পানির চাপে গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা, যমুনা, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা, টঙ্গী খাল, ধলেশ্বরী ও কালীগঙ্গার পানি সর্বোচ্চ ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বেড়েছে। ঢাকায় বুড়িগঙ্গার বিপদসীমার ১৩৮ সেন্টিমিটার, বালুতে বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার, শীতলক্ষ্যা ৫০ সেন্টিমিটার, তুরাগ ৮৮ সেন্টিমিটার, টঙ্গী খাল ৬৮ সেন্টিমিটার, বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি সারিয়াকান্দি পয়েন্টে বিপদসীমার ১১৪ সেন্টিমিটার, নাটোরের আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার ৩১ সে:মি: গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১০৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে হচ্ছে। পানির চাপ বাড়তে থাকায় ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪০টি পয়েন্ট অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
নওগাঁর আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মান্দায় নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ৩০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার, গাইবান্ধায় ফুলছড়ি তিস্তামুখ ঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা শহর পয়েন্টে বিপদসীমার ৮২ সেন্টিমিটার এবং করতোয়া নদী বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
গতকাল বন্যার পানিতে ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। এতে উভয়পাশে নদী পারাপারের জন্য সহস্রাধিক যানবাহন অপেক্ষায় রয়েছে। বিশুদ্ধ পানি ও লেট্রিন সঙ্কটে এসব পরিবার রয়েছে চরম ভোগান্তিতে। আশপাশের এলাকা দুর্গন্ধে পরিণত হয়েছে। রাতে গাদাগাদি করে কোন রকমে রাত পার করছে লোকজন। চাল থাকলেও নেই জ¦ালানী। ফলে রান্না এক প্রকার বন্ধ। যাদের আছে তারা ক্ষুধার্ত মুখগুলোর দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারছে না। এদিকে পানিও থমকে আছে। ফলে বন্যায় জীবনযাত্রা অচল হয়ে পরেছে। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্য নিয়ে রিপোর্ট:
মহসিন রাজু , বগুড়া থেকে জানায়, ভারত থেকে প্রবল বেগে ধেয়ে আসা পানির চাপে যমুনা নদীর পানি সারিয়াকান্দি পয়েন্টে বিপদসীমার ১১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । এতে পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ।এদিকে যমুনার একদিকে বগুড়ার ধুনট উপজেলা অন্যদিকে সোনাতলা উপজেলার মাঝখানে সারিয়াকান্দিতে পানির চাপে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ যে কোন সময় ভেঙে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন যমুনা পাড়ের মানুষ। বন্যার কারণে সারিয়াকান্দিতে ৫৪টি, সোনাতলায় ১৪টি এবং ধুনটে ৫টি বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ৪হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে তলে গেছে । তীব্র খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে মানুষ মানবেতর জীবনযাপস করছে। এদিকে স্থানীয় সূত্রে পাওয়া খবরে জানাগেছে, সারিয়াকান্দি উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের গোদাখালি বাঁধ ভাঙনের উপক্রম হয়েছে।
দিনাজপুর অফিস জানায়, দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ধীর গতিতে জেলার ৮টি উপজেলায় বন্যার পানি নামছে। আশ্রয় কেন্দ্রে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রধান দুটি নদীর পানি কমলেও একটি নদীর পানি বিপদ সীমার সামান্য উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পানি প্রবেশ করায় ১৪ ঘন্টা শহরের অর্ধেক অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। ফলে মানুষের ভোগান্তি চরমে। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৫ বছর বয়েসী মোঃ সেরাজুল। পুণর্ভবা নদীর পানি গতকাল বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৩৩ দশমিক ৩৫ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। আত্রাই নদীর পানি বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময় নদীর পানি প্রবাহের হার ছিল ৩৮ দশমিক ৭৪ মিটার। জেলার আরেক প্রধান নদী ইছামতির পানি বিপদ সীমার শূন্য দশমিক ১৭ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেট অফিস জানায় , উজানের পাহাড়ি ঢলে সুরমা নদী সিলেট পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। সিলেট পয়েন্ট ছাড়াও এই নদী এবং কুশিয়ারা নদী সব কয়টি পয়েন্টে বিপদসীমার উপরে রয়েছে। ফলে নদীর পানি তীর উপচে পানি ঢুকে পড়েছে সিলেট নগরীতে। ফলে নগরীর কয়েকটি এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় বস্তির সংখ্যা বেশি এবং নিম্ন আয়ের মানুষরাই এসব বস্তিতে বসবাস করেন। ফলে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।
শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে জানায়, কুড়িগ্রামে গত সোমবার বিকেল পর্যন্ত ধরলা নদীর পানি ১১ সে.মিটার কমে গিয়ে ৮৯সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপূত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩৬ সে.মিটার কমে গিয়ে ১৪ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপূত্রের পানি এক সে.মিটার বৃদ্ধি পেয়ে ৮৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভেঙে পড়েছে অভ্যন্তরিণ রুটে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্ধ হয়ে গেছে রেল যোগাযোগ। পানিবন্দী এখনো ৪ লাখ মানুষ।৪২ হাজার ৩৫১ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হওয়ায় প্রায় ৩ লাখ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সাড়ে ১০ হাজার মানুষ। ভেসে গেছে ২৩টি ব্রীজ ও কার্লভার্ট। টানা চারদিন ধরে খোলা সড়কের ধারে বা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে হাজার হাজার পরিবার। বিশুদ্ধ পানি ও লেট্রিন সংকটে এসব পরিবার রয়েছে চরম ভোগান্তিতে। আশপাশের এলাকা দুর্গন্ধে পরিণত হয়েছে। রাতে ঘাদাগাদি করে কোন রকমে রাত পার করছে লোকজন। চাল থাকলেও নেই জ¦ালানী। ফলে রান্না এক প্রকার বন্ধ। যাদের আছে তারা ক্ষুধার্ত মুখগুলোর দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারছে না। এদিকে পানিও থমকে আছে। ফলে বন্যায় জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে।
নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, সৈয়দপুরে বন্যার পানিতে ডুবে আরিফ ও রতন নামে দুই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। গত সোমবার রাতে সৈয়দপুর উপজেলার পশ্চিম পাটোয়ারী পাড়াস্থ ধসে যাওয়া শহর রক্ষা বাঁধ এলাকা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শহর রক্ষা বাঁধে গোসল করতে গিয়ে পানির তীব্র স্রোতে ডুবে যায় আরিফ ও রতন। সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
চাঁদপুর জেলা সংবাদদাতা জানায়, চাঁদপুর শহরের অধিকাংশ রাস্তা-ঘাট এখন পানির নীচে। এতে করে সকল শ্রেনী পেশার মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শহরের প্রধান সড়ক গুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ন অধিকাংশ সড়ক ও রাস্তা-ঘাট অবিরাম বর্ষনে তলিয়ে গেছে,এতে করে শহরবাসী মারাত্বক দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানের মলমূত্র পানিতে ভেসে একাকার হয়ে গেছে। আটকাপড়া বিষাক্ত পানি মাড়িয়ে শহরবাসী চলাচল করতে গিয়ে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানি আটকা পড়ে এলাকাবাসী মারাত্বক দুর্ভোগে রয়েছে।
ইসলামপুর (জামালপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বাড়ছে পানি ডুবছে জনপথ। জামালপুরের ইসলামপুরে বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। পানির তোড়ে শতাধিক ঘর ভেসে গেছে। পানি ক্রনানুবর্তিত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পৌর এলাকার উপজেলা পরিষদ খাদ্য গুদাম, বিআরডিবি,জনস্বাস্থ্য কার্যালয়, বন্যার পানি ঢুকতে দেখাব গেছে। উপজেলার সাথে ৮টি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রেলপথে পানি উঠায় কতৃপক্ষ ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে।
ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে করে উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গতকাল মঙ্গলবার বেলা ৩টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় ফুলছড়ি তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১০৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে হচ্ছে। পানির চাপ বাড়তে থাকায় ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪০টি পয়েন্ট অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেনাবাহিনী তদারকিতে ঝুঁকিপূর্ণস্থানে সংস্কার কাজ অব্যাহত আছে। প্রবল পানির তোরে দক্ষিন খাটিয়ামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের মুখে পড়ায় উপজেলা শিক্ষা অফিস বিদ্যালয়টি নিলামে বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে পানিতে ডুবে দুই শিশুর পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে।
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা জানায়, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে পানি দ্রæত বৃদ্ধি পেয়ে আবারো বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। গত সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘন্টায় ৩৯ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ৫২ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।এ সব এলাকার মানুষ পানির ভয়াবহতা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, অস্বাভাবিক গতিতে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সোমবার সকাল ৯টায় গোয়ালন্দে পানি বিপদ সীমার ৫২ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বেলা ৩টার দিকে তা ৮৫ সে.মিটারে পৌছায়। এখানে পানির বিপদ সীমা ৮.৬৫ মিটার।
গোবিন্দগঞ্জ(গাইবান্ধা)উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ইতিমধ্যে গোবিন্দগঞ্জ-পলাশবাড়ী সীমান্তে কিসামত চেরেঙ্গা গ্রামে করতোয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে উভয় উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এলাকাবাসী অভিযোগে জানায় ১৯৮৭-৮৮ সালে করতোয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রনে এ বাঁধটি নির্মাণ করা হলেও তারপর থেকে বাঁধটি রক্ষণাবেক্ষনে কোন পদক্ষেপ নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার তালুককানুপুর ফকিরপাড়া গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে দেড় বছরের শিশু রিয়া মনি মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বন্যায় ৬হাজার ৫৫০ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে।
মো. হায়দার আলীগোদাগাড়ী (রাজশাহী) থেকে জানান, ভারত থেকে ধেয়ে আসছে বন্যা, গোদাগাড়ীসহ চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার লাখ লাখ মানুষ শঙ্কিত। হুমকির মুখে শহর রক্ষা বাঁধ। বন্যার সাথে স্তন করে দেখা দিচ্ছে ভাঙ্গন আতঙ্ক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ক্লাব, মসজিদ, মন্দির কোনটায় রক্ষা পাচ্ছে না সর্বনাশা ভাঙনের কবল থেকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ফারাক্কা বাঁধ দেয়ার পর থেকে পদ্মা নদী অব্যাহতভাবে ভাঙতে ভাঙতে প্রায় ১২ কিলোমিটার বাংলাদেশে ভিতর চলে এসেছে। বাড়ি ঘর শুন্য হয়ে এসব মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এম এ জলিল সরকার পার্বতীপুর(দিনাজপুর) থেকে জানান, পার্বতীপুরে বন্যার পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে আতাবুর (৫৫)নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে বাড়ী পাশর্^বর্তী তিলাই নদীতে জাল দিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। আতাবুর মাছ ধরার জন্য নদীতে জাল ফেলার সময় পড়ে গেলে নিজের জালে জড়িয়ে ডুবে যায়। এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় ল্যাম্ব হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। তার বাড়ী পৌর এলাকার নামাপাড়া মহল্লায়।
সিংড়া,(নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, নাটোরের আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার ৩১ সে:মি: উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সিংড়ায় বন্যার পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল।এতে করে পৌরসভার কয়েকটি মহল্লায় বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। মহেশচন্দ্রপুর মহল্লায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোন সময় ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আতাউর রহমান আজাদ, টাঙ্গাইল থেকে জানান, ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে। নিমজ্জিত হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন, বোনা আমন, আউশ,বীজতলা ও সবজি বাগান। বন্ধ হয়েগেছে অর্ধশতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । বন্যায় পানিতে বসতবাড়ী তলিয়ে যাওয়ায় অনেকেই ঘরের মধ্যে উচু বাঁশের মাচান পেতে পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পৌছেনি কোন সাহায্য। এছাড়া ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়ক ঝুঁকিতে রয়েছে।আর এ সড়ক ভেঙে গেলে উত্তর টাঙ্গাইলের চারটি উপজেলা নতুন করে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাবে।
ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ, পত্মীতলা (নওগঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁাঁ) থেকে জানায় : নওগাঁর পত্মীতলায় আত্রাই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে তিনটি ইউনিয়নের প্রায় কুড়িটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে এলাকার কৃষিজ ফসল ডুবে গেছে ও ঘর-বাড়ি গুলো পানিবন্দি হয়েছেন। সরেজমিন ঘুরে দেখে, গত ৫ দিন ধরে ভারত থেকে প্রবল বেগে আত্রাই নদী বেড়ে যায়। ফলে গত রোববার সন্ধায় উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া এলাকার নদী তীরবর্তী বাঁধ একটি ভাঙে। ওই রাতে কোন সময় এর আশে পাশের এলাকায় আরো ৪টি বাঁধ ভেঙে যায়। এতে ওই এলাকার বিষ্টপুর ও ডাঙ্গা পাড়াসহ কয়েকটি মাঠের কৃষিজ ফসল ডুবে যায়। এতে দিন মজুর ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি পেশার আয়ের পরিবার গুলোতে বর্তমানে খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।