Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেখ হাসিনাকে সরাতে চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে -মোহাম্মদ নাসিম

| প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দেশের সব ধরণের কর্মকান্ডে হাইকোর্ট জড়িয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, সরকারের এখন আর কিছু করতে হচ্ছে না, সব কাজ হাইকোর্ট করে দিচ্ছে। বাংলাদেশে উন্নয়ন ঠেকাতে আবার নতুন করে দেশবিরোধীরা চক্রান্ত শুরু করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজ আবার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করেছেন। শেখ হাসিনাকে ঠেকাতে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এই চক্রান্তকারীদের একটাই লক্ষ্য যে কোনভাবে শেখ হাসিনাকে ঠেকাতে হবে।
গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সতীর্থ-স্বজন আয়োজিত ‘তিনিই বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আজকে রায় বলেন, পর্যবেক্ষণ বলেন, এগুলো শুরু হয়ে গেছে। কারণ চক্রান্তের তো নানা পদ থাকে। নানা অলিগলি থাকে। এখন নতুন রূপে নতুনভাবে চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে। শেখ হাসিনাকে এখন ঠেকাতে হবে।
খাল খনন থেকে শুরু করে একজন দারোয়ান সরানো পর্যন্ত নির্দেশনা হাই কোর্ট দিচ্ছে এমন মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এতো কাজ করছে হাই কোর্ট, এখন দেখি সরকারের আর কোন কাজ করার দরকার পড়ে না। সবই হাইকোর্ট বলে দিচ্ছে। কালকেও একটা নির্দেশ দেখলাম কোথায় যেন কি হয়েছে হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়ে দিয়েছে। হজে যাওয়া নিয়েও নির্দেশ দিয়েছে।
নামিস বলেন, এমন আদালত কোথায় ছিল যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বিচার না করে ইনডেমনিটি আইন জারি করা হয়েছি। ২১টা বছর এই কালো আইনটি সংবিধানে ছিল। দুনিয়ার কোন সংবিধানে নাই হত্যার বিচার করা যাবে না। সংবিধান অনুযায়ী মানুষের বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। ২১টা বছরেরও বেশি বঙ্গবন্ধু কন্যা পিতা হত্যার বিচার পায়নি।
তিনি বলেন, কোথায় ছিল সে সময় আদালত। কেউ তো বলেনি আমি বিচারক, ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার সবার আছে। আমি নির্দেশ দিলাম এই কালো আইন বাতিল করে বিচার করা হোক। কোন আদালত নির্দেশ দেয়ার সাহস পয়নি।
বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদকে ভন্ড আখ্যা দিয়ে নাসিম বলেন, মওদুদের কথা শুনে এখন প্রেসক্লাব গরম হয়ে উঠে। কি আইনের কথা বলে এই লোকটি। এই ব্যক্তি যখন আইনমন্ত্রী ছিল ২০০১ সালের পরে কতো বার বলেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা যাচ্ছে না বিচারক পাওয়া যাচ্ছে না বলে।
তিনি বলেন, কতো বড় ভন্ড এই লোকটা দেখেন। রায় হওয়ার পরও প্রায় পাঁচ বছর দন্ড কার্যকর হয়নি খালি আপিল করা হয়নি বলে। সে বিচারক পরিবর্তন করে দিয়েছে রায় দেয়ার আগে। আজ এই ব্যক্তি বিচারকদের নিয়ে বড় বড় কথা বলে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এই সদস্য বলেন, খালেদা জিয়া শ্লোগান দিয়েছিল শেখ হাসিনাবিহীন নির্বাচন করতে হবে। এখন শেখ হাসিনা হচ্ছে টার্গেট। শেখ হাসিনা না থাকলে সব ঠিক আছে। শেখ হাসিনা না থাকলে ইচ্ছা মতো দেশ চালানো যাবে। ইচ্ছামতো রাজাকার দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে করে নাসিম আরও বলেন, যার জন্মদিন হয় কয়েকটা তার পিতাও কয়েকটা হবে। এদের পিতার ঠিক নাই।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি করছে। কিসের সহায়ক সরকার। বাংলাদেশের জনগণই সহায়ক সরকার। এসব কথা বলে লাভ নেই। সারা বিশে^র সংসদীয় গণতন্ত্রে যেভাবে নির্বাচন হয়ে বাংলাদেশেও সেভাবেই হবে। প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রায় নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা দ্রæত নিরসনের জন্যই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ। তিনি বলেন, আমাদের সাধারণ সম্পাদক প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করা নিয়ে অনেকে রাজনীতি করছেন। নানা কথা বলছেন। বিতর্ক করছেন। এ নিয়ে বিতর্ক করার কিছু নেই। যখন যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দীন কাদের চৌধুরীর পরিবার প্রধানবিচারপতির সঙ্গে দেখা করে, তখন তো কোন কথা বলেন না।
হানিফ বলেন, রায়ে আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে রায়ে বিতর্ক তৈরি করা হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস একটি মীমাংসিত বিষয়। এ নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি ও বিতর্ক দ্রæত নিরসনে ওবায়দুল কাদের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেছেন। অন্য কিছু নয়। কারণ আওয়ামী লীগ আইনের শাসন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে।
ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে হানিফ বলেন, এ রায় নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। এ রায় নিয়ে কিছু রাজনীতিক হঠাৎ করে খুশি হয়ে গেলো। যারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, তারা কি করে এ রায়ে খুশি হতে পারেন ! সংসদ সদস্যরা জনগনের ভোটে নির্বাচিত হন। সংসদ সদস্যদের হাত থেকে বিচারপতিদের অপসারনের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে জনগনের ক্ষমতাই কেড়ে নেয়া হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিরা যে সকল দেশে পালিয়ে আছে তাদের ফিরিয়ে দেয়ার আহŸান জানিয়ে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিরা যে দেশে পালিয়ে আছে, সেই সকল দেশ গুলির প্রতি ১৬ কোটি মানুষের পক্ষ্য থেকে অনুরোধ জানাবো আপনারা খুনিদের ফিরিয়ে দিন। তিনি বলেন, যে সমস্ত দেশ মানোবতার কথা বলে, তাদের বলবো খুনিদের ফিরিয়ে দিন। এরা আত্মস্বীকৃত খুনি। তাই তাদের প্রতি মানবতা দেখাবেন না।
সাংবাদিক রাহাত খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, শহীদ বুদ্ধিজীবী আলীম চৌধুরীর কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মোহাম্মদ নাসিম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ