পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মিজানুর রহমান তোতা : কোরবানির পশুর জন্য বাংলাদেশকে ভারত ও মিয়ানমারের মুখাপেক্ষী হওয়ার ন্যুনতম প্রয়োজন নেই। এমনিতেই ভারত ও মিয়ানমার থেকে কোরবানী উপলক্ষে পশু ঢুকতো একেবারেই কম। কিন্তু তাতে সর্বনাশ ঘটতো খামারী ও কৃষকের। ইতোমধ্যে পশুসম্পদে সমৃদ্ধ হয়েছে দেশ। কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে সোয়া কোটি গরু ও ছাগল। এই তথ্য প্রাণী সম্পদ অধিপ্তরের দায়িত্বশীল সুত্রের। সুত্র জানায়, দেশে মোট ২কোটি ৩৭লাখ ৭৮হাজার গরু, ২ কোটি ৫৮ লাখ ৪৫ হাজার ছাগল ও ১৪ লাখ ৫৬ হাজার মহিষ রয়েছে।
কোরবানির পশুর কোনরূপ সঙ্কট হবে না। কৃত্রিম সঙ্কটও কেউ সৃষ্টি করতে পারবে না। দামও তুলনামূলক কম হবে। সূত্রমতে, নিকট অতীতেও ভারত কিংবা মিয়ানমারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। ভারত থেকে গরু আমদানীর জন্য সীমান্তে করিডোর স্থাপন করা হয়। যা সীমান্তের ‘খাটাল’ হিসেবে পরিচিত। এখন করিডোরগুলো কার্যত খাঁ খাঁ করছে। অথচ প্রতিটি মৌসুমে কাথুলী, গুড়দহ, ভৈরবা, কার্পাসডাঙ্গা, নাভারণ, কুসুমপুর ও মহিষাকুন্ডুসহ দেশের বিভিন্ন সীমান্তের করিডোরে শত শত কোটি টাকার বাণিজ্য হতো। শুধু তাই নয়, সীমান্ত পার হয়ে এপারে গরু ঢুকলেই শুরু হত টাকার খেলা।
সীমান্তের গরু করিডোরগুলো নিয়ন্ত্রণ করতো ঘাট মালিক, ক্ষমতাসীন দলের রাঘব বোয়ালদের প্রতিনিধি, মাস্তান, গরু ব্যবসায়ী, চোরাচালানী ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার একশ্রেণীর সাদা পোশাকের ক্যাশিয়ার। এর কারণে গরুর দাম পড়ে যেত মাত্রাতিরিক্ত। তাছাড়া ভারতীয় গরুর কারণে দেশীয় খামারীরা লোকসানের পর লোকসান দিতে দিতে পঙ্গু হয়ে পড়ে। ভারতীয় গরুর আধিক্যে খামারী ও কৃষক উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। কিন্তু এখন খামারীদের মুখে হাসি ফুটেছে। তারা হচ্ছেন আর্থিকভাবে লাভবান। গত দু’টি কোরবানীর পশু বিক্রি করে তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। ছাগল ও গরু পালনে দারুণ উৎসাহ বেড়েছে। কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী জানান, ‘ভারত থেকে গরু আসলো কি আসলো না সেদিকে তাকানোর সময় নেই। দেশী গরু ও ছাগল রয়েছে পর্যাপ্ত। কোরবানীর পশুর ন্যুনতম কোন সঙ্কটের আশঙ্কা নেই।’ সূত্রমতে, গ্রামবাংলার বাড়ী বাড়ী গরু ও ছাগল লালন পালন বেড়েছে ব্যাপকভাবে। শুধু কোরবানী নয়, সারা বছরের গোশতের চাহিদা পূরণ হচ্ছে দেশে উৎপাদিত গরু ও ছাগলে। সূত্রমতে, সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর তৎপর হলে পশুসম্পদে আরো সমৃদ্ধ হওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল যথাযথভাবে কাজে লাগানো হয় না বলে অভিযোগ। যদি প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা যদি গ্রামে গ্রামে গিয়ে লোকজনকে উৎসাহিত করা, পশু রোগ নিয়ন্ত্রণে ভুমিকা রাখাসহ একটু বেশী নজর দিতেন তাহলে পশুসম্পদের আরো উন্নয়ন ঘটতো। একটি সূত্র জানায়, এটি হলে বিশাল জনগোষ্ঠীর আমিষের ঘাটতি পুরণ, বেকারত্ব ও দারিদ্র্যতা বিমোচন এবং জাতীয় অর্থনীতিতেও পশু সম্পদ বিরাট অবদান রাখতে সক্ষম হতো পশুসম্পদ।
প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর জানায়, বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে আমাদের পশুসম্পদে। ধীরে হলেও পশু সম্পদকে ঘিরেই গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি সৃষ্টি হচ্ছে। সব ধরণের পরিবেশ বিদ্যমান। দরকার শুধু সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো। বিশেষ করে কোরবানির পশু বিক্রি করেই কৃষক ও খামারীরা বেশী লাভবান হয়। তাই কোরবানীর পশুর বাজারে যাতে কোনরূপ বিশৃঙ্খলা না হয় সেদিকে নজর দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন সচেতন ও পর্যবেক্ষক মহল। সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে প্রায় অর্ধকোটি কৃষক পরিবার গরু পালন করছেন। মাঠপর্যায়ের প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার মতে, প্রাণীসম্পদ উন্নয়নে যেসব সমস্যা আছে, সেসব সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র খামারীদের সহজশর্তে ঋণের ব্যবস্থা নেওয়া হলে পশুসম্পদ উন্নয়নে আরো গতিশীলতা সৃষ্টি হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।