পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাদ দেয়ার জন্য হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদের দাবি এবং এ বিষয়ে খারিজ করা রিট নবায়ন করার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর ও ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, নিয়ম বহির্ভূতভাবে দায়ের করা রিট অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। এ বিষয়ে চক্রান্ত বন্ধ না করলে যেকোনো পরিস্থিতির দায় সরকার এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদকে নিতে হবে। তা এ সাম্প্রদায়িক সংগঠনকে নিষিদ্ধের দাবি করেছেন।
হেফাজত ঢাকা মহানগর
বিগত ২৮ বছর পূর্বে খারিজ হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বিষয়ক রিটটি পুনঃসচল করে বিরাজমান রাজনৈতিক অচলাবস্থায় আবার আগুনে তৈল ঢালা হচ্ছে। অথচ মুসলিম সংখ্যাঘরিষ্ট এদেশে সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হলেও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা ধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে। গতকাল হেফজাতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর অস্থায়ী কার্যালয় জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মিলনায়তনে মহানগরীর এক জরুরি সভায় সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমী একথা বলেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাতিলের দাবি, স্বাধীন দেশের সংবিধানের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং সাম্প্রদায়িক হানাহানী সৃষ্টির উস্কানি। সভায় বক্তাগণ বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের ক্ষেত্রে কোনো আত্মঘাতি পদক্ষেপ নেয়ার চক্রান্ত করা হলে এদেশের স্বাধীনচেতা, ঈমানদীপ্ত নওজোয়ানরা জীবন বাজি রেখে হলেও ঈমান ও ইসলাম রক্ষায় সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে ইনশাল্লাহ।
উক্ত জরুরি সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- মাওলানা আবুল কালাম, মাও. মোস্তফা আযাদ, মাও. আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাও. মাহফুজুল হক, মাও. আব্দুর রব ইউসূফী, হাকীম আব্দুল করীম খান, মাও. ইমদাদুল ইসলাম, মাও. জুনায়েদ আল হাবীব, মাও. ফজলুল করীম কাসেমী, মাও. মঞ্জুরুল ইসলাম, মাও. শফীকুদ্দীন, শেখ গোলাম আছগর, মাও. সাখাওয়াত হুসাইন, মাও. আহমদ আলী কাসেমী, মাও. বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাও. মুজিবুর রহমান হামিদী, মাও. মুফতি মাসউদুল করীম প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে নাস্তিক মুরতাদ ও অধিকাংশ অমুসলিম লেখকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিশু-কিশোরদের পাঠ্যপুস্তকে ইসলামী পরিভাষা বাদ দিয়ে রাম দাদাদের আজগুবি কিচ্ছা-কাহিনী রচনা করা হচ্ছে। ভারতীয় অশ্লীল টিবি চ্যানেলের মাধ্যমে যুব সমাজের চরিত্র বিনাশ করা হচ্ছে। ব্রাহ্মন্নবাদীদের নীলনকশা বাস্তবায়নের লক্ষে দেশ ও ধর্মদ্রোহী পদক্ষেপ নেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। কিন্তু সকল চক্রান্ত প্রতিহত করা হবে। বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ছিল, আছে, থাকবে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রক্ষায় এদেশের ঈমানিদীপ্ত কোটি কোটি মুসলমান রাজপথে নেমে আসবে ষড়যন্ত্রকারী নাস্তিক ও হিন্দু চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে খাঁটি মুসলিম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে।
ইসলামী আন্দোলন
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাতিলের চক্রান্ত করলে ধর্মপ্রাণ জনতা নীরবে বসে থাকবে না। সর্বত্র আন্দোলনের দাবানল জ্বলে উঠবে বলে হুঁশিয়ারী দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। তিনি বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম আছে, থাকবে, রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে চক্রান্তকারীদের চক্রান্ত বন্ধ না করলে সারাদেশে ঈমানদার জনতা গর্জে উঠলে সরকারের জন্য কল্যাণকর হবে না। তিনি রাষ্ট্রধর্মের বিরুদ্ধে রিট অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী ‘হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ’কে নিষিদ্ধ করতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেবার আবেদন করে হাইকোর্টে দায়ের করা রিটটি সংশ্লিষ্টদের অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি করেন। পীর সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, আমাদের জানামতে কোনো মুসলমান কর্তৃক হিন্দু ধর্ম, খ্রিষ্ট ধর্ম বা অন্যান্য ধর্মকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেয়ার নজির নেই। তারপরও উগ্র হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্যপরিষদ বারবার ইসলাম ও মুসলমানদের কটাক্ষ করছে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নিয়ে কথা বলছে। তাদের চক্রান্ত বন্ধ না করলে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হলে তার দায়ভার ‘হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্যপরিষদকে নিতে হবে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের চক্রান্তের প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে আজ বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ হাউজ বিল্ডিং চত্বরে সমাবেশ করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।