দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
উত্তর : আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র ক্রুআনে ঘোষনা করেছেন- “হে নবী আপনি আপনার স্ত্রী কন্যা ও মুমিন নারীদেরকে বলুন তারা যেন তাদের দেহের উপর বড় চাদর দিয়ে ঢেকে নেয় (সূরা আহযাব, আয়াত-৫৯)।” আল্লাহ পাক আরো বলেছেন- “হে নবী আপনি মুমিন নারীদেরকে বলুন দৃষ্টি নি¤œগামী রাখতে, লজ্জাস্থান হেফাজত করতে এবং তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করতে (সূরা নুর, আয়াত- ৩১)।” রাসুল (সঃ) বলেছেন- চোখ সমুহের ব্যভিচার হল বেগানার দিকে দেখা, কান সমুহের ব্যভিচার হল বেগানার কথা শুনা, জিহŸার ব্যভিচার হল বেগানার সাথে কথা বলা, পায়ের ব্যভিচার হল বেগানার উদ্দেশ্যে হাটা, হাতের ব্যভিচার হল বেগানাকে স্পর্শ করা, মনের ব্যভিচার হল অবৈধ কিছু কামনা করা ও কল্পনা করা, লজ্জা স্থান ব্যভিচারকে চূড়ান্ত রূপ দেয় বা তা থেকে বিরত রাখে (বুখারি, মুসলিম)। নবী (সঃ) আরো বলেছেন- যে কোন বেগানার দিকে কামনার দৃষ্টিতে তাকায় হাশরের দিন সীসা গরম করে গলিয়ে তার দু’চোখে ঢেলে দেয়া হবে (হেদায়া-কিতাবুল কারাহিয়া)। যা সরাসরি দেখা বৈধ নয় তা ছবিতে দেখা ও বৈধ নয়। কিন্তু আমাদের দেশে নাটক সিনেমায় ও দেশি বিদেশি চ্যানেল গুলো যে সকল দৃশ্য প্রচার করে তা উল্লেখিত আয়াত ও হাদিসের বিপরীত। সম্প্রতি সরকার সিনেমায় ধর্ষণ দৃশ্য সরাসরি প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা মূলক আইন করেছে। নাটক সিনেমা উঠতি তরুণ তরুণীদের খুব আকৃষ্ট করে। নায়ক নায়িকারা যে ধরণের পোষাক পরে, যে ধরণের আচরণ করে স্বভাবত তারা তার অনুসরণ করে। নায়ক সালমান শাহ এর মৃত্যু শোকে কয়েক জন তরুণ তরুণীর আত্মহত্যা, পাখি জামা কিনে না দেয়ায় একাধিক আত্মহত্যার ঘটনা তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমার শিশুপুত্র সহ যাচ্ছিলাম এক আত্মীয়ের বাসায়। হঠাৎ অবুঝ শিশুটি প্রশ্ন করলো- বাবা এই মেয়েরা টয়লেটে বসার ছবি উঠালো কেন? তাকিয়ে দেখলাম সিনেমার একটি পোষ্টার। পোষ্টারের ছবিতে নায়িকাদের দেহে পোষাক নেই বললেই চলে। এমন ভঙ্গিতে বসেছে তা দেখে শিশুটি মনে করেছে হয়ত টয়লেটে বসেছে। কারণ টয়লেটে ছাড়া এ ধরণের উলঙ্গ হওয়ার সাথে সে এখনো পরিচিত হয়নি। এই সকল নায়িকারা আমাদের দেশের কারো না কারো মেয়ে, কারো না কারো বোন। তাদের রুচির এত পরিবর্তন হয়েছে কয়টা টাকার জন্য এ জাতীয় দৃশ্যে অভিনয় করছে। তারা ও তাদের পিতা-মাতা এ উলঙ্গপনায় লজ্জাবোধ করেনা। একজন ধুমপায়ী ধীরে ধীরে ধুম পানে আসক্ত হয়। আসক্ত হওয়ার পর যতই ধুমপানের ক্ষতি সম্পর্কে বুঝানো হয়, প্যাকেটের গায়ে বিভৎস ক্যান্সারের চিত্র দেওয়া হয়, মদের ক্ষতির কথা যত বোঝানো হয় মাদকাসক্ত তা ছাড়তে চায় না। একজন অধুমপায়ী ব্যক্তির নিকট ধুমপায়ীর পোষাকের গন্ধ, নিশ্বাস, কাঁথা-কম্বল-বালিশের গন্ধ অসহ্য কিন্তু ধুমপায়ীর নিকট তাই প্রিয়। এভাবে ধুমপায়ী ও মদ পায়ীর রুচি বোধের পরিবর্তন হয়ে যায়। ঠিক বেহায়াপনা ও উলঙ্গপনা এভাবে ¯েøা পয়জনের মত মানুষের মধ্যে কাজ করে। এক পর্যায়ে মানুষ তার বিবেক ও লজ্জাবোধ হারিয়ে ফেলে। রুচি বোধ এমন বিষয় যা নি¤œগামী হতে থাকলে মানুষকে কোথায় নিয়ে যায় ইউরোপের অনেক দেশের সমকামী বিয়ে তার অন্যতম উদাহরণ। সিনেমার ধুমপান, মদপান দৃশ্য দেশে ধুমপান ও মদপানের বিস্তৃতির অন্যতম কারণ। নাটক সিনেমার সহিংস দৃশ্য শিশুদের মনে প্রভাব ফেলে যা ভবিষ্যতে তাদের কে সহিংস করে তোলে। তাই নাটক সিনেমার উলঙ্গপনা, মদপান, ধুমপান দৃশ্য ও বিদেশী চ্যানেল বন্ধ না করলে দেশ দিন দিন একটি সামাজিক বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হবে যা দেশ জাতি, সমাজ কারো জন্য কল্যাণকর নয়। ইসলাম কল্যাণকামীতার ধর্ম। সকলের কল্যাণের জন্য এ সকল দৃশ্য নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।
উত্তর দিচ্ছেন : অধ্যক্ষ ইয়াছিন মজুমদার
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।