Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সিদ্দিকুরের ওপর হামলাকারি পুলিশকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে -মানবাধিকার চেয়ারম্যান

| প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : কলেজ ছাত্র সিদ্দিকুরের ওপর টিয়ার সেল নিক্ষেপকারী পুলিশ সদস্যকে শাস্তির আওতায় আনাতে হবে।জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক এ দাবী জানিয়েছেন। পুলিশের অতি উৎসাহী আচরণের কারণে সিদ্দিকুরের এই অবস্থা বলে জানান তিনি। টিভিএনএ’র সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন রিয়াজুল হক।
মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, সে দিন ছাত্রদের আন্দোলনে এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি যেখানে এতো কাছের থেকে টিয়ার সেল নিক্ষেপ করতে হবে। এই ঘটনায় জড়িতদের তদন্ত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরণের কোনো ঘটনা না ঘটে তার দিকে খেয়াল রাখা দায়িত্ব পুলিশ কর্মকর্তাদের। সিদ্দিকুরের উপর তার পরিবার নির্ভর করছিলো, এ কারণে সিদ্দিকুর এবং তার পরিবারের সব দায়-দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে বলে যোগ করেন রিয়াজুল হক।
তিনি বলেন, ১২’শ ছাত্রের বিরুদ্ধে যে মামলা দেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত অন্যায়। পুলিশের হামলায় ছাত্রদের একজন সহপাঠি আহত হলো আবার পুলিশ ঐ ছাত্রদের বিরুদ্ধেই মামলা করলো। এটা কোনভাবেই গ্রহণ করা যায় না। এ ধরনের মামলার নামে ছাত্রদের যাতে হয়রানি করা না হয়। সে দিকে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
এ দিকে ঐ ঘটনায় পুলিশের দু’টি তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছেন। ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামন মিয়া চীন সফর শেষে দেশে ফিরে আসার পর তার কাছে প্রতিবেদন দেয়া হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, ডিএমপি’র ডিসি (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান।
ভারতের চেন্নাই শহরে শংকর নেত্রালয়ে চিকিৎসাধীন কলেজছাত্র সিদ্দিকুরের চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত চলে অস্ত্রোপচার চলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিদ্দিকুরের বন্ধু শেখ ফরিদ। তিনি জানান, সিদ্দিকুরের সঙ্গে যাওয়া জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জাহিদুল এহসান মেনন অস্ত্রোপচারের খবরটি তাদের দেন।
সিদ্দিকুরের অপেক্ষা আরও ৪-৬ সপ্তাহের
তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান বাঁ চোখে আদৌ দেখবেন কি না বা কতটুকু দেখবেন, তা নিশ্চিত হতে আরও চার থেকে ছয় সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। ভারতের চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয়ে গতকাল শুক্রবার অস্ত্রোপচার শেষে গতকাল শনিবার তাঁর চোখের ব্যান্ডেজ খোলা হয়। এরপর চিকিৎসক এই কথা জানান।
সিদ্দিকুরের বন্ধু ও সহপাঠী শেখ ফরিদ বলেন, সিদ্দিকুরের সঙ্গে থাকা জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক জাহিদ আহসান জানিয়েছেন যে দেশে অপারেশনের পর সিদ্দিকুর বাঁ চোখের এক পাশ দিয়ে আলোর উপস্থিতি টের পাচ্ছেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু চেন্নাই যাওয়ার পর সেই আলো আর দেখছিলেন না। গতকালের অস্ত্রোপচারের পর এখন আবার পাশ দিয়ে কিছু আলো দেখছেন বলে বলছেন। তিনি কতটুকু দেখবেন বা আদৌ দেখবেন কি না, তা জানতে আরও চার থেকে ছয় সপ্তাহ সময় অপেক্ষা করতে হবে।
শেখ ফরিদ বলেন, সিদ্দিকুর, তাঁর সঙ্গে থাকা বড় ভাই নায়েব আলী ও চিকিৎসক জাহিদ আহসান ১১ আগস্ট ফিরে আসতে পারেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের পরীক্ষার তারিখ ও সময়সূচি ঘোষণার দাবিতে গত ২০ জুলাই শাহবাগে আন্দোলনে গিয়ে ‘পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেলের’ আঘাতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সিদ্দিকুরের দুই চোখ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ওই দিনই তাঁকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর দুই চোখে অস্ত্রোপচার শেষে চিকিৎসকেরা বলেন, সিদ্দিকুরের ডান চোখের দৃষ্টি নেই। বাঁ চোখে এক দিক থেকে আলো ফেললে আলোর উপস্থিতি টের পাচ্ছেন। দৃষ্টি ফেরার ‘ক্ষীণ’ আশা আছে।
২৭ জুলাই স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সিদ্দিকুরকে চেন্নাইয়ে পাঠানো হয়। পরের দিন সেখানকার চিকিৎসক ধনশ্রী রাত্রা সিদ্দিকুরের চোখ পরীক্ষা করে বলেন, চোখের ভেতরের আঘাত গুরুতর। অস্ত্রোপচারে যাওয়া ঠিক হবে কি না, এ জন্য তিনি দ্বিতীয় মতামতের জন্য চিকিৎসক লিংগম গোপালের কাছে রেফার করেছিলেন। লিংগম গোপাল মতামতে বলেন, অস্ত্রোপচারেও সিদ্দিকুরের চোখের দৃষ্টি ফিরবে না। তবে সিদ্দিকুরের সম্মতি থাকায় শেষ চেষ্টা হিসেবে অস্ত্রোপচার করা হয়। ###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ