পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা, যশোর : উৎপাদন খরচ না উঠায় যশ্রো অঞ্চলের কৃষকরা বোরো আবাদে আগ্রহ হারাচ্ছেন। গতবারের চেয়ে এবার কম জমিতে বোরো আবাদ হতে পারে। কৃষি বিভাগও সেই আশংকা করছে। তাদের কথা, কৃষকরা ধানের দাম না পাওয়ায় গতবারের চেয়ে এবার কম জমিতে বোরো আবাদ হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। কৃষকরা বলেছেন, অতিরিক্ত পরিশ্রম আর বাড়তি খরচ করে যদি লাভ না হয় তাহলে আবাদ করবো কেন, যে ফসলে লাভ হয় সেদিকে দৃষ্টি দেবো। অবশ্য কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মকর্তারাও বিভিন্ন মাঠে বোরো আবাদের বাইরে থাকা জমিতে ডাল জাতীয় ফসল চাষের জন্য এখন থেকেই কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
কৃষকরা জানান, এক সময় বোরো ধান লাভজনক হওয়ায় তারা সাধ্যমত জমিতে এ ধানের চাষ করতেন। কিন্তু আস্তে আস্তে বোরো চাষ অনেক ব্যয়বহুল হয়ে যাচ্ছে। অথচ ধানের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় লাভতো দুরের কথা অনেক ক্ষেত্রে খরচও ওঠে না। এ জন্য তারা এ ধান চাষের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন। যশোর জেলার বাঘারপাড়ার শেখের বাতান গ্রামের কৃষক আবু বকর বিশ্বাস জানান, এবার বোরো চাষে খরচ বেশি। তাই ভাবছেন গতবারের চেয়ে কম জমিতে চাষ করবেন। সদর উপজেলার নোঙরপুর এলাকার কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, গত বছর তিনি বোরো মৌসুমে ৫ বিঘা জমিতে চাষ করেছিলেন। ফলনও ভালো হয়েছিল। তবে সেভাবে দাম পাননি। তাই বোরো চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন তিনি। তিনি জানান, এবার বাজারে ধানের দাম কম। অথচ খরচ বেশি। তাই এবার তিনি মাত্র আড়াই বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করবেন। তিনি বলেন, যখন বোরো ধান উঠবে তখন প্রতিমন ধান বিক্রি হবে বড়জোর ৫শ থেকে ৬শ টাকা করে। এক বিঘা জমিতে যে ধান হবে তা দিয়ে খরচও উঠবে না। তাই বোরো আবাদ কমিয়ে দিয়েছি। তার পরিবর্তে বাদবাকি জমিতে তিনি অন্য ফসল করবেন।
কেশবপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা জাহিদুর রহমান জানান, তাদের এলাকায় বোরো চাষে খরচ কিছুটা কম হয়। এক বিঘা জমিতে সবমিলে খরচ হয় ১২ হাজার থেকে ১৩ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ধান হয় ২৫ মণ করে। যখন ধান ওঠে তখন বাজারে দাম থাকে প্রতিমন ৬শ’ টাকা। সে হিসাবে এক বিঘা জমির ধান বিক্রি করে পাওয়া যায় ১৫ হাজার টাকা। তবে যারা বর্গা চাষী তাদের এ থেকে জমির মালিককে দিতে হয় প্রায় ৪ হাজার টাকা। অর্থ্যাৎ তাদের বিঘা প্রতি লোকশান হয় এক থেকে ২ হাজার টাকা। এ ছাড়া যারা উচু ও বেলে জমিতে ধান লাগান তাদের সেচ খরচ হয় আরো বেশি। এসব কারণে তাদের এলাকায় বোরো চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা। খরচ বেশি হওয়ায় তারাও এবার গতবারের চেয়ে ১৫ কাঠা জমিতে বোরো চাষ করবেন বলেও জানান। এভাবে যশোরের প্রত্যেক উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে অনেক কৃষকই গতবারের চেয়ে কম জমিতে বোরো চাষ করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোর সূত্রে জানা গেছে, গতবার যশোর জেলায় ১ লাখ ৫২ হাজার ৪৩৬ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে কৃষকরা ৫৭৯ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ করেছিলেন। এবার লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫১ হাজার হেক্টর জমিতে। উপ পরিচালক নিত্যরঞ্জন বিশ্বাস জানান, তারাও আশংকা করছেন এবার এ জেলায় গতবারের চেয়ে কম আবাদ হতে পারে। খরচ বেশি অথচ লাভ কম হওয়াই কৃষকরা বোরো চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে কৃষকরা তাদের জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।