পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভয়েস অব আমেরিকা : জোট সহায়তা তহবিলের অংশ হিসবে পাকিস্তানকে ৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থ প্রদান স্থগিত রাখার কথা পেন্টাগন ঘোষণা করার পর দক্ষিণ এশীয় দেশটির রাষ্ট্রদূত সম্ভাব্য পাল্টা ব্যবস্থার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। এর ফলে ওয়াশিংটনকে সম্ভবত পাকিস্তানে বিমান করিডোর সুবিধা নিয়ে পুনরালোচনা করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আইজাজ আহমদ চৌধুরী বলেন, পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত যদিও ওয়াশিংটন এখন বিমান করিডোর ও অন্যান্য বাস্তব সম্পদ বিষয়ে ইসলামাবাদের সাথে আলোচনা শেষ করতে চাইতে পারে।
লন্ডন ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের ওয়াশিংটন অফিসে ২৬ জুলাই এক আলোচনায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তান যা করেছে সহায়তা তহবিল হ্রাস করার মার্কিন সিদ্ধান্তের সময় তা যথেষ্টভাবে বিবেচনা করা হয়নি।
চৌধুরী বলেন, আফগানিস্তানে মার্কিন সৈন্যদের জন্য পাকিস্তান যে বিমান ও স্থল লজিস্টিক্যাল সমর্থন দিয়েছে তা আর কেউ দেয়নি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে ২০০১ সাল থেকে পাকিস্তান থেকে বিনামূল্যে সকল বিমান করিডোর দেয়া হচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, পাকিস্তান এ সুবিধা দিয়েছে এ কারণে যে আমরা মনে করি যে এটি এক অভিন্ন যুদ্ধ। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে মার্কিন পদক্ষেপ থেকে আমাদের নেতাদের মনে হয়েছে যে আমরা বোধ হয় অংশীদার নই। যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের প্রতি পাকিস্তানের অঙ্গীকার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। এর প্রধান উদাহরণ হচ্ছে ২০১১ সালে এটা আবিষ্কার যে আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন পাকিস্তানের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনার কাছে নিরুপদ্রবভাবে বাস করছিলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যখন ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ইরানসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রতি সামগ্রিক কৌশল পর্যালোচনা করছে তখনি পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতের এ মন্তব্য এল। তুলনামূলকভাবে তার অনমনীয় স্বরে যেন পাকিস্তানে চীনা পুঁজির অন্তঃপ্রবাহ এবং ইসলামাবাদ ও বেইজিংয়ের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরতা হ্রাসের বিষয়টিই প্রতিফলিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান বনাম চীন-পাকিস্তান
রাষ্ট্রদূত চৌধুরী বলেন, সমর্থন তহবিল বিষয়ে ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্ত ইসলামাবাদে নেতাদের শঙ্কিত করেছে। তিনি বলেন, এগুলো ও অন্যান্য বিষয়গুলো সবসময়ই আলোচিত হয়েছে , কারণ তা মিত্রদের মধ্যকার কর্মকান্ডের রীতি। বিপরীত দিকে তিনি এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ প্রতিদ্ব›দ্বী চীনের সাথে পাকিস্তানের ‘অনন্য’ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ইসলামাবাদ বেইজিংকে তার ঘনিষ্ঠতম বন্ধু হিসেবে দেখে। দু’দেশ সম্পূর্ণরূপে একই সুরে বাঁধা। দু’দেশের মধ্যে বিরাট মতৈক্য রয়েছে এবং নীতিগত পার্থক্যে দু’দেশ বিভক্ত নয়।
চৌধুরী ভয়েস অব আমেরিকা (ভোয়া)-কে বলেন, চীন-পাকিস্তান সম্পর্কের স্পষ্টতম উদাহরণ ও প্রদর্শন ঘটেছে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর বা সিপিইসি-র আকারে যা চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলের কাশগড় থেকে আরব সাগরের তীরে পাকিস্তানের দক্ষিণপশ্চিম প্রান্তে বন্দর নগরী গোয়াদর পর্যন্ত প্রসারিত।
চীনের কাছে পাকিস্তানের কৌশলগত মূল্য
কৌশলগত গুরুত্বের কারণে চীন গোয়াদরের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং তার অর্থসম্পদ দিয়ে বিনামূল্যে বন্দর নির্মাণে সম¥ত হয়। চীন প্রকাশ্যে গোয়াদরে বিনিয়োগকে চীনের মূল ভূখন্ড অভিমুখে তেল ও অন্যান্য পণ্য পরিবহনের বিকল্প পথ বলে যুক্তি দিলেও কৌশলগত চিন্তকদের কাছে বন্দরটির সামরিক ব্যবহারের সম্ভাবনাই বেশী গুরুত্ব পেয়েছে।
এ বছরের গোড়ার দিকে পাকিস্তান ঘোষণা করে যে তারা একটি চীনা কোম্পানিকে ৪০ বছরের জন্য গোয়াদর বন্দর পরিচালনার অধিকার বন্দোবস্ত দিয়েছে।
এ বন্দোবস্ত দেয়ার বিশদ তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের জার্মান মার্শাল ফান্ডের সিনিয়র ফেলো অ্যান্ড্রু স্মল বলেন, আনুষ্ঠানিক শর্তগুলো সম্পূর্ণরূপেই অর্থনৈতিক প্রকৃতির। তার মানে এই নয় যে সামরিক উদ্দেশ্যে একে গড়ে তোলা হবে না। উভয় পক্ষই বিষয়টি মনে রেখেছে।
চীনের লক্ষ্য অর্জনে পাকিস্তানের ভূমিকা
বিশ্লেষকরা বলছেন, সিনো-পাকিস্তান অংশীদারিত্বকে সফল করতে চীনের দৃঢ়তার সাথে তার বৈশি^ক উচ্চাকাক্সক্ষা রয়েছে বলে মনে হয়। স্মল বলেন, বৈশি^ক সামরিক শক্তি হিসেবে তার সম্প্রসারণ ঘটাতে চীনের বন্ধু প্রয়োজন । তাই সে সম্ভাব্য নিরাপত্তা অংশীদারদের কাছে পাকিস্তানের সাথে তার সম্পর্ককে মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে।
স্মল বলেন, পাকিস্তানের প্রতি তার ভবিষ্যত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিতর্কের সাথে দক্ষিণ এশিয়া কৌশল সামগ্রিক পর্যালোচনার পর যুক্তরাষ্ট্রের সামনে এ প্রশ্ন এসেছে যে নিকট মেয়াদী সময় নির্ভরতা অব্যাহত রাখার বদলে সামঞ্জস্যপূর্ণ দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে কিনা।
এ বিশ্লেষক বলেন, বিভিন্ন কারণে পাকিস্তান এখনো ওয়াশিংটনের সাথে সুসম্পর্কের মূল্য দেয়। সে সব কারণের মধ্যে একটা হতে পারে যে ওয়াশিংটনের সাথে সম্পৃক্ততার জন্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রাপ্ত মর্যাদাকে ইসলামাবাদ বিবেচনা করে।
অতীতের উর্ধ্বে ওঠা
বিশ্লেষকরা বলেন, আজ পাকিস্তানের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দেশটি বর্তমান সুযোগ গ্রহণ করতে এবং সীমান্ত বিরোধ ও অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা ভরা অতীতের উর্ধ্বে উঠতে পারবে কিনা। স্মলের ভাষায়, তাহলে তাকে উদীয়মান বাজার হিসেবে দেখার সম্ভাবনা আছে।
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সাবেক মার্কিন সহকারী সচিব রাষ্ট্রদূত রবিন রাফেল বলেন, সময়ের ব্যবধানে পাকিস্তান প্রতিবেশীদের সাথে ভালো সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় নিজের পথে অগ্রসর হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয়ের উপরই নির্ভরতা হ্রাস করবে।
রাষ্ট্রদূত চৌধুরী ভোয়াকে বলেন, এখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয়েরই বিশে^ পালনযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। আর পাকিস্তান উভয়েরই বন্ধু।
তার মতে, গোয়াদর ও সিপিইসি নিয়ে চীনের সাথে পাকিস্তানের সহযোগিতার চূড়ান্ত বিবেচনা হবে বালুচিস্তান ও পাকিস্তানের বাকি অংশে বসবাসরত মানুষদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন। পাকিস্তানের দক্ষিণ পশ্চিম প্রদেশ বালুচিস্তানের ভিতর দিয়ে সিপিইসি গেছে। বালুচিস্তান পাকিস্তানে তালিবান কর্মকান্ডের কেন্দ্র বলেও পরিচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।