পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরীফকে বেছে নেওয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে নওয়াজ শরীফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএলএন-নওয়াজ)। এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে কিছু সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে তাকে। সেই সময়ের জন্য অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তেলমন্ত্রী শহিদ খাকান আব্বাসীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকা ডন-এর অনলাইন সংস্করণের আগের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অযোগ্য ঘোষণার পর দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন নওয়াজ। সেখানে তার ছোট ভাই শাহবাজকে নতুন প্রধানমন্ত্রী পদে সুপারিশ করেন। তার এ প্রস্তাবে বৈঠকে উপস্থিত কেউই দ্বিমত প্রকাশ করেননি। উল্টো তারা নওয়াজের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি পিএমএলএন বা পদস্থ কোনো কর্মকর্তা। প্রকৃতপক্ষে দল থেকে এখনও শাহবাজ শরীফকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি।
তবে পিএমএলএন পার্লামেন্টারি দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রকে উদ্ধৃত করে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে শাহবাজকে অপেক্ষা করতে হবে খানিকটা সময়। মানতে হবে কিছু সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হবে তাকে। মনোনয়ন পাওয়ার পর তার প্রধানমন্ত্রিত্ব বিষয়টি জাতীয় পরিষদের ভোটে পাস হতে হবে।
পাকিস্তানের পার্লামেন্টে পিএমএলএনের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তারা যাকেই মনোনয়ন দিক না কেন, তিনিই নির্বাচিত হবেন। তাই শাহবাজ শরীফের প্রধানমন্ত্রিত্ব নিশ্চিত বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। সম্ভাব্য অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর তালিকায় নাম এসেছিল প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আইয়াজ সাদিক, পরিকল্পনা ও উন্নয়নমন্ত্রী আহসান ইকবাল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খানের। দীর্ঘদিন ধরে কন্যা মারিয়াম নওয়াজ শরীফকে নিজের রাজনৈতিক উত্তরসূরী হিসেবে প্রস্তুত করছিলেন নওয়াজ। তবে মারিয়াম নির্বাচিত এমপি না হওয়ায় এই মুহূর্তে তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ ছিল না।
২০১৩ সালের জুন থেকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শাহবাজ। এর আগে ১৯৯৭-৯৯ এবং ২০০৮-২০১৩-র মার্চ পর্যন্ত তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদে ছিলেন। ১৯৮৫ সালে তিনি লাহোর চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-র সভাপতি নির্বাচিত হন। দক্ষ প্রশাসক হিসাবে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে তাকে আগে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হবে।
ওদিকে শাহবাজ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তেলমন্ত্রী শহিদ খাকান আব্বাসী। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পেতে পারেন পাঞ্জাবের করমন্ত্রী মুজতবা শুজাউর রহমান। সূত্র : ডন।
নওয়াজের ক্ষমতাচ্যুতিতে মুখ থুবড়ে পড়তে পারে ভারত-পাকিস্তান সংলাপ
এদিকে আদালতের রায়ে অযোগ্য ঘোষিত হওয়ার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের পদত্যাগে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার সংলাপ প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। একই সঙ্গে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিও অস্থিতিশীলতায় পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন ভারতের সাবেক কয়েকজন কূটনীতিক ও বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, পাকিস্তানের সম্ভাব্য অস্থিতিশীলতার বিষয়ে ভারতের প্রস্তুতি থাকা উচিত।
কূটনীতিক ও বিশেষজ্ঞদের মতে, নওয়াজের পদত্যাগ ভারত-পাকিস্তানের আলোচনার জন্য বড় ধরনের ক্ষতি। বিষয়টি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ হলেও নওয়াজ শান্তির পক্ষে ছিলেন। অবশ্য ভারতীয় বিশ্লেষকরা এমনও বলছেন যে, নওয়াজ পদত্যাগ করলেও ভারতীয় নাগরিক কুলভূষণ যাদবের মামলা বা কাশ্মির ইস্যুতে কোনও পরিবর্তন হবে না।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আফগানিস্তান ও পাকিস্তান বিষয়ক সাবেক বিশেষ দূত সাতিন্দার কে. লাম্বাহ বলেন, ১৯৪৭ সালের পর থেকে নওয়াজ শরীফই ভারতের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি বৈঠক করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রায় ১৫-২০ বৈঠকের বেশিরভাগ তৃতীয় কোনও দেশে হয়েছে। নওয়াজ ভারতে খুববেশি সফর করেননি, তা আলাদা বিষয়। কিন্তু তিনি ১৯৯১ সালে রাজিব গান্ধীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় উপস্থিত হয়েছিলেন। পরে ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানেও হাজির হন। নওয়াজের পদত্যাগে ভারতের প্রধান উদ্বেগ পাকিস্তানের সঙ্গে সংলাপের একজন অংশীদার হারালো। সাবেক এই দূত আগামী কয়েক মাস পাকিস্তানের রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
পাকিস্তানে হাই কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা কূটনীতিক টিসিএ রাঘবন বলেন, পাকিস্তানের গণতন্ত্রের জন্য এটি অনেক পিছিয়ে পড়ার মতো ঘটনা। পাকিস্তানের ইতিহাসে কোনও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ শেষ করতে না পারা দুর্ভাগ্যজনক। নওয়াজের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে তা আরও স্পষ্ট হলো।
ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক কাশ্মির ইস্যুতে আটকে আছে। নয়া দিল্লির দাবি, ভারতের অভ্যন্তরে পাকিস্তান বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও জঙ্গিদের সহায়তা দিচ্ছে। পাকিস্তানের পাল্টা অভিযোগ, ভারত বালুচিস্তানে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে।
লাম্বাহ বলেন, ‘এই মুহূর্তে দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ খুব কম রয়েছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতের বড় ধরনের কোনও প্রভাব পড়বে না।’
২০১৮ সালের মাঝামাঝিতে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তখন নতুন দেশটি নতুন একজন প্রধানমন্ত্রী পাবে। কৌশলগত বিষয়ক বিশ্লেষক উদয় ভাস্কর বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের অনেক কিছুই নির্ভর করবে কীভাবে খন্ডকালীন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ইসলামাবাদের ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয়।’
উদয় উল্লেখ করেন, নওয়াজ শরীফের রাজনৈতিক জীবন সামরিক শক্তির সহযোগিতায় শুরু হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পছন্দের মানুষ ছিলেন নওয়াজ। কিন্তু ১৯৯৯ সালে পারভেজ মুশাররফ যুগের শুরুতে সেই সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে হয় তাকে।’ সূত্র : দ্য হিন্দু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।