Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বন্ধ হচ্ছে সার কারখানা, তবে সংকটের শঙ্কা নেই

প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার ঃ বেড়েছে গ্যাসের উৎপাদন, আর চাহিদা বেড়েছে জ্যামিতিক হারে। আর এ কারণে সংকট পিছু ছাড়ছে না। তাই সব সময়ই কোন না কোনদিকে বন্ধ রাখতে হচ্ছে গ্যাস সরবরাহ। পরিস্থিতি সামাল দিতে যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি (জেএফসিএল) ছাড়া অপর ৬টি সার কারখানা যে কোন দিন বন্ধ করে দেওয়া হবে। খোদ প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ইলাহী চৌধুরী এমন তথ্য জানিয়েছেন।
সার কারখানা থেকে সরিয়ে সে গ্যাস দেওয়া হবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে। লক্ষ্য হচ্ছে সেচ মৌসুমে লোডশেডিং মুক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা। দেশে সাতটি সার কারখানার দৈনিক ৩১৬ মিলিয়ন ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে ২’শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে বলে পেট্রোবাংলা সূত্র জানিয়েছে। অন্যদিকে গ্যাস ভিত্তিক ৫৭টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পুরোদমে চালাতে গেলে দৈনিক এক হাজার ৫১৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন হয়। যার বিপরীতে বর্তমানে সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ৯৬৫ মিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাসঘাটতির কারণে সাতটি কেন্দ্রে পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আংশিক উৎপাদন হচ্ছে। এতে প্রায় ১২’শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।
বাংলাদেশের বর্তমানে বিদ্যুত উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে প্রায় ১৩ হাজার মেগাওয়াট। তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ইউনিটে খরচ পড়ে প্রায় ১৭ টাকা। আর গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ পড়ে মাত্র দুই টাকার মতো। তেল দিয়ে দৈনিক একশ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের চেয়ে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা বেশি খরচ পড়ে। সে কারণে সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের বিকল্প দেখছে না সরকার।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গ্যাস দিয়ে সরাসরি ইউরিয়া সার উৎপাদন করা হয়। বর্তমানে ইউরিয়া সারের মজুদ রয়েছে ১১ লাখ মেট্রিক টন। যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। মাস অনুযায়ী ইউরিয়া সারের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়। তবে বছরে ২৪ থেকে ২৫ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের চাহিদা থাকে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং) পুলক রঞ্জন সাহা বলেন, কয়েক মাসের জন্য ইউরিয়া সারের উৎপাদন বন্ধ থাকলেও কোনো প্রভাব পরবে না। কেননা ইউরিয়ার যথেষ্ট মজুদ আছে। তিনি জানান, বোরো মৌসুমেই (জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ) সাধারণত ইউরিয়া সারের চাহিদা ও ব্যবহার বেশি হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে প্রায় চার লাখ মেট্রিক টন সার ব্যবহৃত হয়েছে। সময়টা কিন্তু পার হয়ে গেছে। সুতরাং কয়েক মাস বন্ধ থাকলে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। এছাড়া যমুনায় উৎপাদন চলবে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে ঘোড়াশাল, আশুগঞ্জ, পলাশ, কাফকো ও যমুনা। এর মধ্যে যমুনায় সারা বছরই উৎপাদন হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে ১০ লাখ এবং কাফকো (বিদেশি প্রতিষ্ঠান, কিন্তু দেশেই সার বিক্রি করতে হবে এমন চুক্তি সরকারের সঙ্গে) তিন লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন করে। আর বাকি প্রায় ১১ থেকে ১৩ লাখ মেট্রিক টন জিটুজি চুক্তিতে আমদানি করা হয়। ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী স¤প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বোরো সেচকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এ সময় কোন লোডশেডিং দেওয়া হবে না। সার কারখানা বন্ধ রেখে বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানো পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ জন্য মার্চ মাস থেকেই পর্যায়ক্রমে সবগুলো সার কারখানা (যমুনা ছাড়া) বন্ধ করে দেওয়া হবে।
তিনি বলেছেন, আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা যথেষ্ট রয়েছে। তবে বিতরণ ও সঞ্চালন লাইনে পুরোপুরি উন্নয়ন করা যায়নি। সে কারণে কোথাও কোথাও সাময়িক আঞ্চলিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ জন্য গ্রাহকদের ধৈর্য্য ধারণের অনুরোধ জানিয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আরও কিছুদিন সময় চেয়েছেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্ধ হচ্ছে সার কারখানা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ