Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভিবাসীদের ঢল ঠেকাতে আরো কঠোর হচ্ছে বলকান দেশগুলো

ইউরোপের অভিবাসন : সংকটে যুক্ত হলো নতুন টানাপড়েন

প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম


ইনকিলাব ডেস্ক : অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ইউরোপের উত্তরের দেশগুলোতে পৌঁছাতে শরণার্থীরা বলকান অঞ্চলের দেশগুলো পার হয়। তবে এখন থেকে এই পথ কঠিন করে তুলেছে শ্লোভেনিয়া আর ক্রোয়েশিয়া। রাষ্ট্র দুটি গত বুধবার থেকে তাদের দেশে বিদেশিদের প্রবেশের ক্ষেত্রে আরো কড়াকড়ি আরোপ করেছে। ফলে যে বিদেশিরা শ্লোভেনিয়ায় প্রবেশের শর্ত পূরণ করবে শুধু তাদেরই প্রবেশ করতে দেয়া হবে। আর যারা আশ্রয় পেতে আগ্রহী কিংবা অভিবাসী হতে আগ্রহী তাদের প্রবেশাধিকার দিতে মানবিক কারণ ও শেনজেনের নিয়মকানুন মানবে শ্লোভেনিয়া। ক্রোয়েশিয়াও একই নীতি অনুসরণ করছে। শ্লোভেনিয়ার এ সিদ্ধান্ত অনুপ্রাণিত করেছে সার্বিয়াকে। মেসিডোনিয়া ও বুলগেরিয়ার সঙ্গে তাদের যে সীমান্ত রয়েছে সেদিক দিয়ে বিদেশিদের প্রবেশের ক্ষেত্রে তারাও একই নীতি অনুসরণ করার ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে, গ্রিস ও তুরস্কের মধ্যে গত মঙ্গলবার একটি চুক্তি সই হয়েছে। এর ফলে ইউরোপ যেসব অভিবাসীদের না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেবে তাদেরকে ফিরিয়ে নেবে তুরস্ক। বিনিময়ে তুরস্কের কয়েকটি শর্ত মেনে নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। যেমন তুরস্কে যে ২৭ লাখ সিরীয় শরণার্থী রয়েছে তাদের জন্য ইইউ আরো তিন বিলিয়ন ইউরো দেবে। এর আগেও তিন বিলিয়ন ইউরো দেয়ার অঙ্গীকার করেছিল ইইউ। এ ছাড়া ইইউ তুরস্কের নাগরিকদের ভিসা ছাড়াই তাদের অঞ্চলে প্রবেশের সুবিধা দেবে এবং সেটি জুন মাস থেকেই শুরু হবে।
অন্যদিকে, বলকান অঞ্চল দিয়ে অভিবাসন প্রত্যাশীদের উত্তর ইউরোপ যাওয়া ঠেকাতে সীমান্ত বন্ধ করছে শ্লোভেনিয়া। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে দেশটিতে নতুন সীমান্ত আইন করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে গ্রিস হয়ে অভিবাসীদের উত্তর ইউরোপ যাওয়া বন্ধ হবে। জানা গেছে, মানবিক প্রয়োজনে ও আশ্রয় প্রার্থীদেরই শুধু শ্লোভেনিয়ায় ঢোকার সুযোগ দেওয়া হবে। আর শ্লোভেনিয়ার এমন পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে মেসিডোনিয়া ও বুলগেরিয়ার সঙ্গে থাকা নিজেদের সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সার্বিয়া। এখন থেকে শুধু বৈধ কাগজপত্র থাকা ব্যক্তিরাই এই সীমান্ত পার হতে পারবে। জানা গেছে, শ্লোভেনিয়া সীমান্ত ব্যবহার করে অভিবাসন প্রত্যাশীরা জার্মানিসহ উত্তর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যায়। ওদিকে, অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, শ্লোভাকিয়াসহ ইউরোপের আটটি দেশ এরই মধ্যে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। এমন পদক্ষেপে ইউরোপের পাসপোর্টবিহীন এলাকা নিয়ে এরই মধ্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। মেসিডোনিয়া জানিয়েছে, গ্রিসের সঙ্গে দেশটির সীমান্ত দিয়ে আর কোনো অভিবাসন প্রত্যাশীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কার্যত এভাবে বলকান দেশগুলোর মধ্য দিয়ে উত্তর ইউরোপে যাওয়ার প্রধান পথটি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। নিজেদের দেশের মধ্য দিয়ে অভিবাসী গমন বন্ধে শ্লোভেনিয়ার নিষেধাজ্ঞা জারির পরপরই মেসিডোনিয়ার গ্রিক সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা এলো। এরপর ক্রোয়েশিয়া ও সাইবেরিয়াও একই নীতি অনুসরণ করবে বলে জানিয়েছে।
এর আগে, ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সোয়া লাখের বেশি শরণার্থী ইউরোপে প্রবেশ করেছে। এই সংখ্যা কমাতে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে ইইউ। তুরস্কের সঙ্গে চুক্তি তারই একটি অংশ। ইইউ এই চুক্তিকে স্বাগত জানালেও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার প্রধান চুক্তির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও এর সমালোচনা করেছে। ডয়চে ভেলের বারবারা ভেসেল মনে করছেন, ইউরোপের সবাই ক্রমেই যেন দুর্গ ইউরোপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিবিসি, রয়টার্স, ডিডব্লিউ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অভিবাসীদের ঢল ঠেকাতে আরো কঠোর হচ্ছে বলকান দেশগুলো
আরও পড়ুন