Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪, ২৫ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

চলছেই চাঁদাবাজি

| প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নূরুল ইসলাম : চাঁদাবাজি থামছে না কিছুতেই। রাজধানীর ফুটপাত থেকে শুরু করে নির্মাণাধীন বহুতল ভবন পর্যন্ত চাঁদাবাজি চলছেই। সাথে পরিবহন, ডিশ, ইন্টারনেট প্রভাইডার সেক্টরতো আছেই। শুধু তাই নয়, রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও কোচিং বাণিজ্যসহ অনিয়ম দুর্নীতি টিকিয়ে রাখতে ম্যানেজিং কমিটিকে এখন নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়। ভুক্তভোগিদের মতে, চাঁদাবাজির ধরণ এখন অনেকটাই পাল্টে গেছে। আগে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা চাঁদাবাজি করতো। এখন শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সহযোগিদের সাথে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা। সন্ত্রাসীদের তৎপরতা একেবারে নেই তা নয়। কেরানীগঞ্জে চাঁদার দাবিতে কয়েকদিন আগেও এক ব্যবসায়ীকে গুলী করেছে সন্ত্রাসীরা। আহত ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, সন্ত্রাসী ল্যাংড়া আমীর তাকে গুলী করেছে। বহুল আলোচিত শিশু পরাগ অপহরণ মামলার প্রধান আসামী ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী ল্যাংড়া আমীর কয়েক দিন আগে এক ব্যবসায়ী দম্পতির কাছে চাঁদা দাবি করে প্রাণনাশের হুমকী দিয়েছে। প্রাণভয়ে এখন তারা ঘরছাড়া। পুলিশের দাবি, সন্ত্রাসী ল্যাংড়া আমীর নিজে কখনও মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না। হঠাৎ করে এসে গুলী করে চলে যায়। এ কারণে তাকে ধরা যাচ্ছে না। আমীরের ভয়ে মহাআতঙ্কে দিন কাটছে কেরানীগঞ্জের ব্যবসায়ীদের। পুরান ঢাকায় ডাকাত শহীদ গ্রæপের সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি বন্ধ হলেও থেমে নেই ছিনতাই। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাজনৈতিক পরিচয়ে এখনও নীরবে চাঁদাবাজি চলছে ভিন্নভাবে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে এখন কমপক্ষে ৩৫ জন দাগী সন্ত্রাসী তৎপর। এর মধ্যে তালিকাভুক্ত কয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসী রয়েছে। শীর্ষ সন্ত্রাসীর বাইরে পুলিশের খাতায় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের অধিকাংশই উঠতি বয়সী তরুণ। যারা ওইসব শীর্ষ সন্ত্রাসীর কাছে দীক্ষিত-প্রশিক্ষিত। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আশীর্বাদপুষ্ট উঠতি বয়সী এসব সন্ত্রাসী এখন বেশি তৎপর। তারাই মূলত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হত্যাকান্ড, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। গোয়েন্দাদের তথ্যমতে, আন্ডারওয়ার্ল্ডের গডফাদাররা অধিকাংশই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নানা পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতা। তাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে অনেক তথ্য পেলেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে এবং সুস্পষ্ট প্রমাণের অভাবে ব্যবস্থা নিতে পারছে না পুলিশ। এসব গডফাদারের আশীর্বাদে শীর্ষ কয়েকজন সন্ত্রাসী ও উঠতি বয়সী বেশকিছু সন্ত্রাসী আন্ডারওয়ার্ল্ড কাঁপাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে সাবেক আইজিপি আব্দুল কাইয়ুম ইনকিলাবকে বলেন, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করলে সুবিধাভোগিরা মাথাচাড়া দিবে-এটাই স্বাভাবিক। দলীয়করণের প্রভাবে তখন উভয়পক্ষের মধ্যে একটা গোপন আঁতাত হয়ে যায়-যা সংক্রমিত হতে সময় লাগে না। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন। তিনি বলেন, এজন্য শুধু সরকারী দল নয়, সবগুলো রাজনৈতিক দলকে একমত হয়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। আব্দুল কাইয়ুম বলেন, এটা ঠিক যে, এক সময় শীর্ষ সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি বন্ধ করার জন্য পুলিশ কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। দীর্ঘদিনের পথপরিক্রমায় পুলিশ এ বিষয়ে সফলতা অর্জন করেছে।

রাজধানীর ফুটপাতে চাঁদাবাজির সংস্কৃতি বহু পুরনো। রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে লাইনম্যান নামধারী এক শ্রেণির দালাল ফুটপাতের হকারদের কাছে থেকে চাঁদা তোলে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের গুলিস্তান, মতিঝিল, পল্টন ও এর আশপাশের এলাকার ফুটপাতে এই টাকার পরিমাণ মাসে কমপক্ষে ৫ কোটি টাকা। অবশ্য এই চাঁদাবাজি বন্ধে এই প্রথম দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ৭২ জন চাঁদাবাজকে চিহ্নিত করে মামলা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মতিঝিল থানা পুলিশ একটি মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট ) দাখিল করেছে আদালতে। ওই অভিযোগপত্রে ১৫ জনকে আসামী করা হয়েছে। বাকীদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, চাঁদাবাজি মামলার এসব আসামী এখনও ফুটপাতে চাঁদাবাজি করছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব চাঁদাবাজদের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা। গত বছরের ২৭ অক্টোবর গুলিস্তান পাতাল মার্কেট এলাকার ফুটপাত থেকে অবৈধ দোকান উচ্ছেদের সময় হকারদের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের মধ্যে গোলাপী ফুলহাতা শার্ট পরিহিত ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) ছাত্রলীগের তখনকার সাধারণ সম্পাদক সাব্বির রহমানকে রিভলবার উঁচিয়ে গুলি করতে দেখা যায়। এসময় সাব্বিরের পাশে নীল টি-শার্ট পরা ওয়ারী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকের হাতেও দেখা যায় পিস্তল। পরদিন বিভিন্ন সংবাদপত্রে ছবি আসার পর ছাত্রলীগ তাদের বহিষ্কার করলে ১ নভেম্বর শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক এই দুজনসহ অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ এই দুই অস্ত্রধারীকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়। পরে ১৭ নভেম্বর আশিক-সাব্বির ঢাকার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেয়। বাংলাদেশ হকার্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, ফুটপাতে যারা চাঁদাবাজি করে তারা বরাবরই চিহ্নিত। সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা এসব চাঁদাবাজদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু মামলা হওয়ার পরেও পুলিশ হাতেগোনা মাত্র কয়েক জনকে গ্রেফতার করে। বাকীরা সবাই উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়ে এসে আবার আগের মতোই চাঁদাবাজি করছে। তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন চাঁদাবাজদের উচ্ছেদের জন্য এই প্রথম মামলা করে নজির সৃষ্টি করেছেন। মেয়র মহোদয় হকারদের পূর্ণবাসনের লক্ষ্যেও কাজ করছেন।
রাজধানীর স্কুল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি থেকে শুরু করে কোচিং বাণিজ্যসহ ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। নামীদামীসহ এসব স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিকেও চাঁদা দিতে হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্কুলের দুর্নীতি নিয়ে যাতে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস না করে এজন্য স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাসহ প্রভাবশালী ও মাস্তানদের হাতে রাখার জন্যই ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিমাসে একটা অঙ্ক বরাদ্দ রাখা হয়। পরিবহণ সেক্টরে চাঁদাবাজির ঘটনাও পুরনো। রাজধানীর মতিঝিলে ইনকিলাব ভবনের সামনে প্রতিদিন চট্টগ্রাম কক্সবাজার, টেকনাফ রুটের বিলাসবহুল বাসগুলো থেকে চাঁদা তোলা হয়। ইনকিলাব ভবনের সামনে সাবেক ইত্তেফাক ভবনের মোড়ে সন্ধ্যার পর ওই সব রুটের প্রতিটি বাস দাঁড়ায়। চাঁদাবাজ আগে থেকেই সেখানে অপেক্ষা করতে থাকে। বাসগুলো থামিয়ে পুলিশের সামনেই এই চাঁদাবাজি চলে। এ ছাড়া মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে চলাচলকারী মিনিবাস থেকে চাঁদা তোলা হয় যাত্রাবাড়ীর কাজলায়। বাসগুলো গুলিস্তান থেকে রওনা করে ফ্লাইওভারের টোলঘর অতিক্রম করার পরই একজন এসে চালকের কাছে থেকে চাঁদা নিয়ে যায়। বাসের কন্ডাক্টরদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিটি বাস থেকে প্রতিদিন ১২০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। চাঁদা না দিলে বাস চলতে দেয়া হয় না। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁওয়ের মুগড়া পাড়ার স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার নামে বাসপ্রতি ৫০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। সায়েদাবাদ বাস মালিক সমিতির এক নেতা বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচলকারী সবগুলো রুটের দুরপাল্লার বাস থেকে এই চাঁদা তোলা হচ্ছে। তিনি বলেন, এটা বন্ধ করার জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সবক’টি রুটের বাস ধর্মঘট ডাকা হতে পারে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কয়েক হাজার টেম্পু ও হিউম্যান হলার চলাচল করে। স্থান ভেদে যাত্রীপরিবহণের জন্য এসব যান থেকে প্রতিদিন ২শ’ থেকে ৪শ’ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, টেম্পু বা হিউম্যান হলার থেকে সবচে’ বেশি চাঁদাবাজি করা হয়, মিরপুর ১০ নং গোলচত্বর, বাড্ডার শাহজাদপুর, ফার্মগেইট, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, জুরাইন রেল গেইট, নিউমার্কেট, আজিমপুর, নিউপল্টন, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, মিরপুর মাজার রোড, উত্তরখান, দক্ষিণ খান এলাকায়। জানা গেছে, যাত্রাবাড়ী-ডেমরা রুটে চলাচলকারী টেম্পু ও হিউম্যান হলার থেকে প্রতিদিন চাঁদা তোলে বাচ্চু খন্দকার। এক সময়কার ফ্রিডম পার্টির নেতা বাচ্চু এখন সরকার সমর্থিত শ্রমিক লীগের নেতা। যাত্রীবাড়ী বিআরটিসির জমি দখল করে দোকান তুলে ভাড়াও দিয়েছেন শ্রমিকলীগের এই নেতা। একই রুটের গাড়ি থেকে চাঁদা তোলে কাউয়া খালেক ও সোহরাব। তারা আবার ভিন্ন গ্রুপ। যাত্রাবাড়ী পাইকারী আড়তে চাঁদাবাজি করে বকুল ও রিপন। এখানকার ফুটপাতের চাঁদা তোলে সোনা মিয়া। ফার্মগেইটে চাঁদা ওঠে যুবলীগের এক নেতার নামে। শনিরআখড়া থেকে নিউমার্কেট পর্যন্ত চলাচলকারী টেম্পুগুলো থেকে চাঁদা তোলে স্থানীয় যুবলীগ নেতার লোকজন। জুরাইন রেল গেইটেও চাঁদাবাজি করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এসব ছাড়াও রাজধানীতে অবৈধভাবে চলাচলকারী প্রায় এক লাখ ব্যাটারীচালিত ইজিবাইক ও রিকশা থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছে। প্রতিটি চাঁদার নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি।
রাজধানীজুড়েই এখন ডেভেলপার ব্যবসা চলছে। আগের মতো এই ব্যবসা ভালো না হলেও থেমে নেই। আর বহুতল ভবন নির্মাণ করতে গেলেই সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদেরকে মোটা অংকের চাঁদা দিতে হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুরান ঢাকার ডেভেলপার কোম্পানীকে জমি দিয়েছেন এমন একজন বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী কচির লোকজনকে ম্যানেজ করেই এখানে ডেভেলপাররা বাড়ি নির্মাণ করছে। আরেকজন ভুক্তভোগি জানান, তার ডেভেলপার নিয়ম ও চুক্তির তোয়াক্কা না করে নিজের খেয়াল খুশি মতো ফ্ল্যাট বিক্রি করছে। পুলিশ দিয়ে তাকে নানাভাবে হয়রানিও করা হচ্ছে। কদমতলীর এক ডেভেলপার কোম্পানীর মালিক জানান, সরাসরি চাঁদা না চেয়ে প্রভাবশালী চিহ্নিত একটি চক্র তার কেনা জমি নিয়ে অভিযোগ তুলেছে। ওই ব্যবসায়ী বলেন, আমি কাগজপত্র যাচাই করে জমির মালিকের সাথে চুক্তিপত্র করে কাজ শুরু করেছি। হঠাৎ করে তারা এসে জমির মালিকানা দাবি করে বসেছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমি বহুতল ভবনের ভীত দিতে গিয়ে তিন কোটি টাকার মতো খরচ করে ফেলেছি। এখন পিছিয়ে যাই কিভাবে? বাধ্য হয়ে মোটা অঙ্ক দিয়ে হলেও ওদের সরাতে হবে।
গোপীবাগ এলাকায় এক সময় ডিশের ব্যবসা করতেন এক ব্যবসায়ী। সন্ত্রাসীরা তার ব্যবসা কেড়ে নিয়ে তাকে এলাকাছাড়া করেছে। ওই ব্যবসায়ী এখন নিজের নাম প্রকাশ করতেও ভয় পান। এর আগে পুলিশের স্মরণাপন্ন হয়েও তিনি কোনো প্রতিকার পাননি। ডিশের ব্যবসা নিয়ে গত ২০ বছরে রাজধানীতে বহু খুনের ঘটনা ঘটেছে। এখনও রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকায় ডিশের ব্যবসা করতে হলে চাঁদা দিতে হয়। এর সাথে এখন যোগ হয়েছে ইন্টারনেটের ব্যবসা। কোনো কোনো এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা নিয়ন্ত্রণ করছে এই ব্যবসা। কদমতলী থানা এলাকার একজন ভুক্তভোগি ব্যবসায়ী জানান, এতোদিন চিহ্নিত কতিপয় সন্ত্রাসীকে মাসে মাসে চাঁদা দিতে হতো। এখন তারা নিজেই ব্যবসা শুরু করেছে। এ কারণে ব্যবসার ভবিষ্যত নিয়ে ওই ব্যবসায়ী শঙ্কিত বলে জানান।
এসবের বাইরে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি আগের মতো না থাকলেও এখন পুরোপুরি শেষ হয়নি। কেরানীগঞ্জে কয়েক দিন আগেও ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী ল্যাংড়া আমীরের গুলীতে আহত হয়েছেন শাহ আলম নামে এক ব্যবসায়ী। দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ল্যাংড়া আমীর চাঁদা দাবি করে আরও কয়েকজনকে প্রাণনাশের হুমকী দিয়ে রেখেছে। তারা এখন এলাকাছাড়া। শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের ভয়ে এখনও আতঙ্কিত পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা। এক সময়ের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ডাকাত শহীদ গ্রুপের চাঁদাবাজি বন্ধ হলেও বেড়েছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। গেন্ডারিয়ার বাসিন্দাদের কাছে এখন আতঙ্ক কচি বাহিনী। সাথে সহিদ কমিশনারের বাহিনী তো আছেই। গেন্ডারিয়া ও শ্যামপুর থানা এলাকায় মাদকের ভয়াবহ বিস্তার হরেও সাধারণ মানুষ কচি ও সহিদের ভয়ে মুখ খোলে না। দয়াগঞ্জ এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ হযরত এখন পরিবহন ব্যবসায়ী। স্থানীয়রা এখনও তার বাহিনীর ভয়ে তটস্ত থাকে। মোহাম্মদপুরে নবীর দাপট এক বিন্দুও কমেনি। নবীর নামে এখনও নীরবে চাঁদাবাজি চললেও ভয়ে কেউ মুখ খোলে না। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের সংশ্লিষ্ট থানা এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, অভিযোগ না পাওয়ার কারণে তারা ব্যবস্থা নিতে পারেন না। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হয়।



 

Show all comments
  • afzal ২০ জুলাই, ২০১৭, ৩:৩৪ এএম says : 0
    It is very sad that every sector in our country has a bad situation. either ransom or bribe, with out that no work can be done. The responsible person either Minister or head of the department never take the responsibility. PM has a good intention for the people of Bangladesh but some Minister and some Amla are very corrupted . I have never seen any minister or any Amla ever step down for their failure to run their department. These Amla and the ministry run by people tax money. But what service we are getting. If you to make a complain to police you have to pay bribe or has to be some other way negociation with police otherwise you might get trouble as a innocent victim because they they are not bound to give explanation to anybody. they think they are the supper power.
    Total Reply(0) Reply
  • ফিরোজ খান ২০ জুলাই, ২০১৭, ২:২৫ পিএম says : 0
    এভাবে চললে একসময় এটা ভয়ারহ রূপ ধারণ করবে। তাই সরকার ও প্রশাসনকে এখনই এটা রুখতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • সুলতান আহমেদ ২০ জুলাই, ২০১৭, ২:২৮ পিএম says : 0
    রাজনৈতিক সাপোর্টের কারণে এসব সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজরা বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Laboni ২০ জুলাই, ২০১৭, ২:৩১ পিএম says : 0
    শুধু সরকারী দল নয়, সবগুলো রাজনৈতিক দলকে একমত হয়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাঁদাবাজি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ