পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সভাপতি সেক্রেটারিসহ চাকরিচ্যুত ৩, বাধ্যতামূলক অবসরে ১ ও পদাবনতিসহ বদলী ৪ ব্যাংকিং খাতে শৃংখলা ফেরাবে, সাহসী পদক্ষেপের নজির -ইব্রাহিম খালেদ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসাদাচারণের দায়ে রূপালী ব্যাংকের তিন সিবিএ নেতাকে বহিস্কারসহ ৮ জনকে চূড়ান্ত শাস্তি দিয়েছে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় আর্থিক খাতে কিছুটা হলেও শৃংখলা ফিরবে। একই সঙ্গে এ ধরনের সাহসী পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করছেন আর্থিকখাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেছেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্যাংক খাতে সিবিএ নেতাকর্মীদের ১৪ বছরের অনাচারের লাগাম টেনেছে রূপালী ব্যাংক। আর এটা ব্যাংকটির বর্তমান শীর্ষ নির্বাহীদের সদিচ্ছা এবং সাহসের কারণেই সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা।
সূত্র মতে, ২০০৩ সালের পর এই প্রথম কোন সিবিএ নেতা শাস্তির মুখে পড়েছেন। ওই সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০ জনকে চাকুরিচ্যুত করেছিলেন তৎকালীন গভর্নর ড. ফখরুদ্দিন আহমেদ।
রূপালী ব্যাংক সূত্র মতে, গত বছরের ৫ ডিসেম্বর স্থানীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপকসহ কয়েকজন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করে রূপালী ব্যাংকের সিবিএ নেতাকর্মীরা। এই ঘটনায় গতকাল জড়িতদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রাশাসনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ব্যাংকটি। সিবিএ সভাপতি খন্দকার মোস্তাক আহমেদ, সেক্রেটারি মো. কাবিল হোসেন কাজী ও কেয়ার টেকার মো. আরমান মোল্লাকে স্থায়ীভাবে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হয়েছে। বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে ড্রাইভার মো. আবুল কালাম আজাদকে। আর ঢাকার বাইরে বদলী করা হয়েছে কেয়ারটেকার মো. আনোয়ার হোসেন, ছাব্বির আহমেদ ভুঁইয়া ও মনিরুল ইসলাম সহ অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার (গ্রেড-১) মো. আহসান হাবিবকে।
সিবিএ নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার ঘটনায় রূপালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। তিনি বলেছেন, উশৃঙ্খল সিবিএ নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা পুরো আর্থিক খাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যারা ইউনিয়ন করার নামে আর্থিক খাত বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত তারা একটা কঠোর বার্তা পাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আর্থিক খাতের জন্য এটা উদাহরণ হয়ে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সাহসী পদক্ষেপের জন্য আমি ব্যাংকের বোর্ড ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানাই। বিশেষ করে ব্যাংকটির শীর্ষ নির্বাহী আতাউর রহমান প্রধান যেভাবে সাহসীকতার সঙ্গে বিষয়টা সমাধান করেছেন, এটা প্রশংসনীয়।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সকালে রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. নূরুজ্জামান, উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শওকত আলী খান, সহকারী মহাব্যবস্থপক মো. সাখাওয়াত হোসেন ও প্রিন্সিপাল অফিসার মো. জসিম উদ্দিন সরকারের সাথে গুরুতর অসদাচরণ ও অশালীন আচরণ করে তাদেরকে শারিরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করেন আলোচিত এই সিবিএ নেতারা। এর প্রেক্ষিতে ওই দিনই ৫ জনকে (সংস্থাপন ও কল্যাণ বিভাগের অফিস সহকারী মো. কাবিল হোসেন কাজী, একই বিভাগের ড্রাইভার মো. আবুল কালাম আজাদ, স্থানীয় কার্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আনোয়ার হোসেন ও অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার গ্রেড-১ মো. আহসন হাবিব এবং কাপ্তান বাজার শাখার অফিস সহকারী মো. আরমান মোল্লা) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সিবিএ সভাপতি মতিঝিল কর্পোরেট শাখার জুনিয়র অফিসার খন্দকার মোস্তাক আহমেদ, ভিজিলেন্স ও ইন্টিলিজেন্স বিভাগের অফিস সহকারী মো. মনিরুল ইসলাম ও শিল্প ঋণ বিভাগের অফিস সহকারী মো. ছাব্বির আহমেদ ভূইয়াকে চার্জশীট করা হয়। পরে ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করে তদন্ত কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে জড়িত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়।
সিবিএ সেক্রেটারি কাবিল হোসেন কাজী শাস্তির বিষয়ে বলেন, শ্রম আইন অনুযায়ী সকল সিবিএ পরিচালিত হয়। তিনি বলেন, ২০১১ সালের রূপালী ব্যাংকের মানব সম্পদ নীতিমালা অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাই শ্রম আইনের সাথে এ সিদ্ধান্তের কোন সম্পর্ক নেই।
রূপালী ব্যাংকের শৃঙ্খলা কমিটির এক সদস্য বলেন, তদন্ত কমিটির সুপারিশ এবং সকল ধরনের নীতিমালা অনুযায়ীই সিবিএ নেতাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও একাধিকবার কর্মকর্তাদের সাথে অসদাচরণ করেছে। বিভিন্ন সময়ে তাদেরকে সতর্কও করা হয়েছে। কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
উল্লেখ্য, রূপালী ব্যাংকের সিবিএ নেতাদের বিরুদ্ধে এর আগেও ব্যাংক কর্মকর্তাদের মারধর এবং সাংবাদিক নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।