দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
আতিকুর রহমান নগরী : ইসলাম ধর্ম পাঁচটি ভিত্তির উপর স্থাপিত।এ গুলোর মধ্যে ‘যাকাত’ অন্যতম ভিত্তি।এ সর্ম্পকে আল্লাহ তা’লা ইরশাদ করেন অর্থ্যাৎ “এবং তোমরা আল্লাহ তা’লার সন্তুষ্টির জন্য যাকাত আদায় করো। অত:পর তিনি উহা দ্বিগুন করে দিবেন। (সুরা: আর-রুম,আয়াত:৩৯) যাকাত আদায়ের ব্যাপারে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন,“নিশ্চয় আল্লাহ পাক যাকাত দেয়া ফরয করেছেন যেন তোমাদের অবশিষ্ট সম্পদকে নির্দোষ বা নির্বিঘœ করে দিতে পারেন’। (আবু দাউদ শরীফ)।
যাকাত কাকে বলে: যাকাতের আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা। যাকাত যেহেতু অর্থসম্পদকে পুঁজিবাদের অপবিত্রতা থেকে পবিত্র করে, মানুষের মন-মস্তিস্ককে গর্ব-অহংকার, লোভ-লালসা ও কৃপণতার মলিনতা থেকে পরিচ্ছন্ন রাখে। এবং নিজের উপার্জিত সম্পদে সমাজের অবহেলিত শ্রেণীর দাবী-দাওয়া পূরনে উৎসাহ যোগায় এজন্য ইসলামের এই স্তম্ভের নামকরণ হয় যাকাত। শরিয়ত কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদ মুসলমান গরীবকে আল্লাহর ওয়াস্তে পুরোপুরি মালিক বানিয়ে দেয়াকে যাকাত বলে।
ধনি সম্পদশালী ব্যাক্তিরা মনে করেন যে যাকাতের দ্বারা সম্পদ কমে যায় তা নিছক ভুল ধারণা। কেননা আল্লাহ পাক পবিত্র কালামে পাকে ওয়াদা করেছেন যে,“যাকাত আদায়ের ফলে তিনি তার প্রিয় বান্দাদের সম্পদ দ্বিগুন করে দিবেন”।
যাকাত অস্বীকারকারীর হুকুম: যাকাত ইসলামের অন্যতম খুঁটি। ক্বোরআন-হাদিসে যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে বারবার তাগিদ করা হয়েছে। ক্বোরআন-হাদিসের অকাট্য প্রমানাদি দ্বারা যাকাতের বিধান প্রনোদিত হয়েছে। তা অস্বীকার করার কোন সুযোগ কারো নেই। যাকাত অস্বীকারকারীকে শরিয়ত কাফির বলে আখ্যা দিয়েছে। কেননা ফরযের বিধান অস্বীকার করা কুফুরির অর্ন্তভুক্ত।
যে তা আদায় না করবে সে ফাসিক এবং ক্বাতল হওয়ার যোগ্য। আর যে আদায় করতে বিলম্ব করবে সে গুনাহগার তার সাক্ষি গ্রহণযোগ্য নয়। (আলমগীরি: তরিকুল ইসলাম বাংলা ২য় খন্ড,পৃ.২৬৫) যাকাতের হিসাব যে মাস থেকে: যাকাত আরবি (চন্দ্র মাসের) হিসাবানুযায়ী আদায় করতে হবে। বছরের যে কোন মাসে যাকাত আদায় করলে হয়। তবে আদায় করার সময় নিয়ত করা শর্ত।
যাকাত যেভাবে আদায় করবে: পাঠকগনের সুবিদার জন্য সহজ-সরল ও সাবলিল ভাষায় যাকাতের হিসাব দশ টাকা থেকে লক্ষ টাকা পর্যন্ত যাকাত কত টাকা আসবে। নিম্নে টাকা-পয়সার হিসাব বিস্তারিত প্রদান করা হল। এ দিকে লক্ষ্য রেখে আদায় করলে কোন অসুবিদা হবেনা বলে আমি আশাবাদী। আনুগ্রহ করে আল্লাহর অফুরন্ত রহমতের আশা নিয়ে দোযখের আযাবের ভয় অন্তরে রেখে সময়মত যাকাত আদায় করুন।
যাকাতের হিসাব নিম্নরূপ:
টাকার পরিমাণ যাকাতের হিসাব প্রদত্ত টাকা/পয়সা
১,০০,০০০/= এক লক্ষ টাকায় ২৫০০/=
৫০,০০০/= পঞ্চাশ হাজার টাকায় ১২৫০/=
১০,০০০/= দশ হাজার টাকায় ২৫০/=
১০০০/= এক হাজার টাকায় ২৫/=
৯০০/= নয়শত টাকায় ২২.৫০/=
৮০০/= আটশত টাকায় ২০/=
৭০০/= সাতশত টাকায় ১৭.৫০/=
৬০০/= ছয়শত টাকায় ১৫/=
৫০০/= পাঁচশত টাকায় ১২.৫০/=
৪০০/= চারশত টাকায় ১০/=
৩০০/= তিনশত টাকায় ০৭/=
২০০/= দুইশত টাকায় ০৫/=
১০০/= একশত টাকায় ০২.৫০/=
(চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।