পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ‘শেখ হাসিনা ভদ্র ভাষা জানেন না,’ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের পরদিন তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা বলেছেন, বিএনপির নেতাদের কাছ থেকে ভদ্রতা শিখতে হবে না।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমতাসীন ১৪ দলের মুখপাত্র হিসেবে এ প্রতিক্রিয়ার কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। ‘বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে আসামিরা’Ñ৭ মার্চে ঢাকার এক জনসভায় শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার গুলশানে নিজের কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এক অনুষ্ঠানে খালেদা বলেন, ‘হাসিনা ভদ্র ব্যবহারও করেন না, ভদ্র ভাষায়ও কথা বলতে জানেন না।’ বিএনপি প্রধানের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নাসিম বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রায়ই তিনি (খালেদা জিয়া) হাসিনা বলে সম্বোধন করেন। তিনি (হাসিনা) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। পুরো নামটা তিনি উচ্চারণ করেন না। এটা কোন ধরনের ভদ্রতা। প্রধানমন্ত্রীকে যখন তিনি সম্বোধন করবেন, ভদ্রভাবে সম্বোধন করা উচিত। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে, বঙ্গবন্ধুকন্যাকে এভাবে সম্বোধন করতে পারেন না।
নাসিম বলেন, তিনি আমাদের ভদ্রোচিত আচরণ করতে বলেছেন! নিজ দলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে যখন প্রায় গলাধাক্কা দিয়ে বঙ্গভবন থেকে বের করে দিয়েছিলেন, তখন তার ভদ্র আচরণের চিন্তা কোথায় ছিল?
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে জিজ্ঞেস করতে চাই, একজন বিদেশি অতিথি ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর সঙ্গে ঢাকায় তিনি যে আচরণ করেছেন, সেটা কোন ধরনের সভ্যতায় পড়ে। সেদিন তিনি দেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণœ শুধু করেননি, ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছেন। তখন কোথায় ছিল ভদ্রতা?
আওয়ামী লীগের শাসনে বাংলাদেশে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে বলে বিএনপি চেয়ারপারসনের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম বলেন, তিনি (খালেদা) নারী নির্যাতনের কথা বলেছেন! কদিন আগেও তিনি জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে নারীদের রাস্তায় হত্যা করেছেন, তার নির্দেশে। তার আমলে কীভাবে ইয়াসমিনকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছিল! সেই বিচারটা পর্যন্ত আমরা সেই সময়ে পাইনি। তার আমলেই ২১ আগস্ট আইভি রহমানসহ অনেককে হত্যা করা হয়েছে। ২০১৪-১৫ সালে যেভাবে নারী-শিশুদের পেট্রল বোমায় হত্যা করা হয়েছে, সেটা কি তিনি ভুলে গেছেন?
মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে খালেদা জিয়া ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ‘নির্বোধ’ বলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বক্তব্য তুলে ধরে নাসিম বলেন, আমাদের বিএনপির কাছ থেকে ভদ্রতা শিখতে হবে না। ভদ্র আচরণও শিখতে হবে না। আমরা যা বলি, চিন্তা-ভাবনা করেই বলি।
শেখ হাসিনার মামলার বিষয়ে বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নাসিম বলেন, মোশাররফ সাহেব বলেছেন, ১৫ মামলা নিয়ে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তিনি একজন শিক্ষিত লোক। কীভাবে তিনি এই কথা বলেছেন? ২০০৯ সালে যখন তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, সেটা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলরদের ভোটে হননি। জনগণের ভোটে হয়েছেন।
তিনি বলেন, তার (শেখ হাসিনা) মামলা আছে কি-না, সেটা বড় কথা নয়। তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। দলীয় কাউন্সিলে প্রধানমন্ত্রী হননি। তার (মোশাররফ) এই বক্তব্য হাসির উদ্রেক করে।
এদিকে, উল্টো বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকেই ‘ভদ্রতা’ শিখতে বলেছেন আওয়ামী লীগের আরেক নেতা হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আপনি খালেদা, যেভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কথা বলছেন, মনে হয় তিনি আপনার ছোট বোন। আপনাকে মনে রাখতে হবে, দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কথা বলছেন। ভদ্রতা শিখুন।’
বুধবার জাতীয় প্রেসক্ল¬াবের সামনে রমনা থানা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘জামায়াত-শিবিরের অবৈধ হরতালের প্রতিবাদে মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশে’ তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি নেতাদের পরামর্শ দিয়ে হাছান বলেন, আপনারা আগে আপনাদের নেত্রী ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে ভদ্রতা শেখান। মির্জা ফখরুল মহাসচিব হবে কি হবে না এমন শঙ্কায় রয়েছেন বলেই একটু বেশি বলছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মন্তব্য করায় দুজন মন্ত্রীকে সুপ্রিম কোর্টে তলব প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, তাদের আদালতে তলব করা হলে যারা ৯ জন বিচারপতির রায়কে অমান্য করে অবৈধ হরতাল ডেকেছে, তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না?
তিনি বলেন, জামায়াত নেতা মীর কাসেমের বিরুদ্ধে রায় আওয়ামী লীগ বা সরকার দেয়নি। এ রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালতের ৯ জন বিচারপতি। সুতরাং এ রায়কে অমান্য করে যারা অবৈধ হরতাল ডেকেছে তাদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল হামিদ খানের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ, সদস্য হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, উপ-কমিটির সহ সম্পাদক এমএ করিম, কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।