পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট : ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া বা আইএসআইএস (ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর আরেক নাম) ইরাকে তাদের কার্যত রাজধানী মসুল থেকে বিতাড়িত হয়েছে। এ ঘটনার পর ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি আইসিসের তথাকথিত খিলাফতের অর্ধেকের পতন ঘটেছে বলে ঘোষণা করেন। বিশ্লেষকদের প্রশ্ন যে খিলাফতের পতন কি
সংগঠনটি ২০১৫ সালে তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তির শীর্ষে থাকার সময় যে পরিমাণ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করত এখন তার মাত্র নয় শতাংশ এলাকা তাদের হাতে আছে।
মার্কিন সমর্থিত বাহিনী জিহাদিদের শেষ শক্তঘঁটি রাক্কা দখলের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে জনশ্রুতি রয়েছে ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে যে আইএসের নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি নিহত হয়েছেন।
কোনো সন্দেহ নেই যে আইএসআইএস বেশ কিছু সামরিক ও মতাদর্শগত বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। কিন্তু গ্রুপের ভবিষ্যতের ব্যাপারে তা কি কোনো অর্থ বহন করে?
আইএসআইএস কি এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে?
ইরাকের ক্ষেত্রে বলতে হয়, তারা অধিকাংশ এলাকা হারিয়েছে যদিও তারা ইরাকের উত্তরাংশে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পকেট ধরে রেখেছে।
মসুল জয়কে যে বিরাট বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে তার কারণ আইএসআইএস তাদের বিজয়াভিযানে যতগুলো শহর দখল করেছিল সেগুলোর মধ্যে এটা ছিল সর্ববৃহৎ। ২০১৪ সালে সিরিয়া সীমান্ত অতিক্রম করে ইরাকে বিজয়াভিযানে তারা মসুল দখল করে। তারা বিরাট এলাকা দখল করে। এটা এক বিরাট হুমকি সৃষ্টি করে যা দেখে বাকি বিশে^র টনক নড়ে ।
আইএসআইএস মসুল দখলের আগে সেখানে অধিবাসীর সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ। এটি ছিল ইরাকের সর্বাপেক্ষা বহুবৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও বুদ্ধিজীবী অধ্যুষিত শহর। এখন এখানকার হাজার হাজার লোক নিহত হয়েছে এবং শহরটি পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। মসুল থেকে আইএসকে বিতাড়িত করা হয়েছে , কিন্তু তার জন্য বিরাট মূল্য দিতে হয়েছে।
তাদেরকে পরাজিত করা এখন সময়ের ব্যাপার, তা কি নিশ্চিত?
সামরিক ভাবে দেখলে হ্যাঁ। কিন্তু আইএসআইএসের যোদ্ধারা, বিশেষ করে বিদেশী যোদ্ধারা মৃত্যু পর্যন্ত লড়াই করতে আগ্রহী। যার ফলে তাদের শহর এলাকার অবস্থানগুলোর দিকে অগগ্রতি ছিল ধীর ও কঠিন।
মসুল পুনর্দখলের জন্য মার্কিন সমর্থিত ‘ অপারেশন ইনহারেন্ট রিজলভ ’ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের অক্টোবরে। ২০১৭ সালের জানুযারিতে বারাক ওবামার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এ অভিযান শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইরাকি বাহিনী ফাঁদ পাতা রাস্তা ও বাড়ি, পাশাপাশি আত্মঘাতী বোমা হামলা এবং মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত বিপুল সংখ্যক বেসামরিক লোকদের নিয়ে সমস্যায় পড়ে। তাই মসুল দখলে নয় মাসেরও বেশী সময় লাগে। আইএসআইএসের ¯িøপার সেল এখনো শহরের সর্বত্র রয়ে গেছে।
সিরিয়াতে আইএসআইএসের শেষ শহুরে শক্তঘাঁটি ও কার্যত রাজধানী রাক্কা দখলের জন্য গত মাসে মার্কিন সমর্থিত আরব- কুর্দি বাহিনী হামলা শুরু করে। সেখানকার লড়াইও দীর্ঘস্থায়ী ও রক্তক্ষয়ী রূপ নেবে বলে ধারণা।
মতাদর্শ হিসাবে কি আইএসআইএস টিকে থাকবে?
ইসলামিক স্টেট প্রকল্প ব্যর্থ হতে পারে , কিন্তু আইএসআইএস ইতোমধ্যে একটি স্পন্দনশীল সংস্থা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট, সিরিয়া ও রাশিয়ার বোমা হামলা শুরু হলে তারা আল-কায়েদার মত বহুদূরের লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করার মাধ্যমে বিশ^ব্যাপী হামলা শুরু করে।
লন্ডনের কিংস কলেজে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর দি স্টাডি অব র্যাডিক্যালাইজেশন-এর উপপরিচালক . শিরাজ মাহের সম্প্রতি দি ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেন, একটি প্রোটো স্টেট বা পরিচালনা পর্ষদের পতন তার সার্র্বিক পতনকে নির্দেশ করবে না।
তিনি বলেন, গ্রুপটি বিদ্রোহী ও সন্ত্রাসী আন্দোলন উভয় হিসাবে স্থায়িত্ব লাভ করতে পারে। এ সব পরিচয়ে গ্রুপটিকে পরাজিত করা সার্বিকভাবে কঠিন এবং তা দীর্ঘ সময়ের উচ্চাকাক্সক্ষা, যাতে বহু বছর লাগবে।
অতএব এর পরে কি?
আইএসআইএস সিরিয়ায় আল কায়েদার কার্যক্রম থেকে জন্ম নিয়েছে। যতদিন সেখানে যুদ্ধ চলবে এবং ইরাকে দীর্ঘদিনের গোষ্ঠিগত বঞ্চনার প্রতিবিধান না করা হবে আইএসআইএস-এর এখনকার মত গোলযোগ ও ভীতি সৃষ্টির ঘটনা ঘটবে
মসুলের পুরনো শহর থেকে পালিয়ে আসা এক ব্যক্তি এ পি-কে বলেন, সেখানে থাকা মানে নিশ্চিত মৃত্যু। আপনার মনে একবার যদি ভয় ঢোকানো হয় আপনি সে ভয় থেকে মুক্তি পাবেন না।
একজন মার্কিন সেনা কমান্ডার বলেন, খুব সম্ভব গ্রুপটি অন্য একটি সংগঠনের মধ্যে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। সেটার নাম হতে পারে “আইএসআইএস ২.০ অথবা নতুন একটি জিহাদি সংগঠন তার জায়গা নিতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।