Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুদিন সোনালী আঁশের

পাটচাষিদের কথা মাঠের হাসি যেন বাজারেও অটুট থাকে

| প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিজানুর রহমান তোতা : সারাদেশে পাটের উৎপাদন এবার স্মরণকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড সৃষ্টির পথে। উপযোগী রোদ ও বৃষ্টিসহ সার্বিক আবহাওয়া ছিল পাট আবাদ ও উৎপাদনের অনুকুলে। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি এবং মাঝেমধ্যে রোদ রেশনিং পদ্ধতিতে হলে পাটের জন্য হয় খুবই সহায়ক হয়। আবাদ মৌসুম জুড়ে তার পুরোমাত্রায় সেটিই হয়েছে। পাটপচনে পানিরও সমস্যা নেই। রংও ভালো হওয়ার আশা করা হচ্ছে। বলেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ গোলাম মারুফ গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, এবার পাটের সার্বিক অবস্থা খুবই ভালো। আশানুরুপ উৎপাদন প্রত্যাশা করছি। এখন পাট কাটার অপেক্ষায় রয়েছেন চাষিরা। মাঠে মাঠে বাতাসে পাট দুলছে। খুশীতে মন ভর উঠছে চাষিদের। গত মৌসুমে পাটের দাম মোটামুটি ভালো ছিল। মৌসুম শেষে দাম বেড়ে যায় আরো। সেজন্য চাষিরা পাট আবাদের দিকে ঝুকে পড়েন। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যশোর, ফরিদপুর ও মাদারীপুরসহ অনেক জেলায় বেশী আবাদ হয়েছে পাটের। পাটের রোগবালাই ছিল না বললেই চলে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, চলতি মৌসুমে ৭ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে আবাদ হয়েছে ৮লাখ ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে। মাঠপর্যায়ের একজন কৃষি কর্মকর্তা জানান, চাষিরা পাট আবাদ ও উৎপাদনের যেভাবে ঝুকেছে, তাতে সোনালী আঁশের স্বর্ণযুগ ফেরার হাতছানি দিচ্ছে। চাষিরা জানান, গতবার আশাতীত ফলনে তাদের মুখে হাসি ফোটে। দামও পান ভালো। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাটের বাজার তোলার সময়ে তদারকির অভাবে মুনাফালোভী ফড়িয়া, দালাল ও আড়তদারদের দাপট বেড়ে যায়। এসব ব্যাপারে নজরদারি না বাড়ানোর কারণেই আশাতীত ফলন হওয়ার পরও অনেক সময় চাষীদের লোকসান গুনতে হয়। চাষিদের উপযুক্ত মূল্যপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা ও বাজার বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে যাতে আগেভাগেই সংশ্লিষ্টরা তৎপর হয় সে ব্যাপারে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এখন যদিও বাজার বিশৃঙ্খলা কম, তবু বরাবরের মতো বাজার বিশৃঙ্খলায় মুনাফালোভী ফড়িয়া, দালাল ও আড়তদারদের দাপট অপ্রতিরোধ্য গতি বাড়লে স্বর্ণযুগ ফেরার স্বপ্নভঙ্গের আশংকা সৃষ্টি হবে। তাই বিভিন্ন মহল থেকে সতর্ক করা হয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে।
সুত্রমতে, প্রতিটি মৌসুমে পাটচাষি সোনালী আঁশ নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিনরাত পরিশ্রম করেন পাট উৎপাদন। হারানো অতীত ঐতিহ্য ফেরানোর প্রত্যাশা করেন পাটচাষিরা। গেল বছরের আগের দু’টি মৌসুমে অধিকাংশ চাষিকে লোকসান গুনতে হয়। এখন সুদিন ফিরছে, এটিকে ধরে রাখতে হবে। চাষিরা জানান, জমি চাষ, বীজ, পরিচর্যা, কাটা, পচানো, আঁশ ছড়ানো, শুকানো ও বিক্রির জন্য পরিবহনসহ পাটে অনেক খরচ হয়। উপযুক্ত মূল্য না পেয়ে মাঝেমধ্যে হতাশা বাসা বাঁধে। তবে এবার আশাতীত ফলনে মুখে হাসি ফুটেছে, মাঠের হাসি বাজারেও যেন অটুট থাকে সেই প্রত্যাশা চাষিদের।
কৃষি বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদগণ ও চাষিসহ সংশিষ্টদের মন্তব্য, বিরাট সম্ভাবনাময় ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম মাধ্যম কৃষির এই খাতটির দিকে সামগ্রিকভাবে নজর দেওয়া জরুরি। অতীতের মতো নানা অজুহাতে সহজ সরল নিরীহ চাষিদের যাতে কোনভাবেই কেউ প্রতারিত করতে না পারে। প্রয়োজন হলে এখন থেকেই সংশ্ণিষ্ট কর্মকর্তাদের মাঠে নামাতে হবে। সার্বিক বিষয়ে খোঁজ খবর রাখতে হবে। তাদের মতে, সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনার অভাব ও নানামুখী বিশৃঙ্খলার কারণেই পাটের বাজারে মুনাফালোভীদের বরাবরই দাপট চলে।

###



 

Show all comments
  • Jewel ৮ জুলাই, ২০১৭, ১০:৩১ এএম says : 0
    Tomader moto sanbadik der jonno amader krisok dam valo pai na.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ