পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : বড় ধরনের লোকসান এড়াতে অবশেষে বিআইডবিøউটিসি ঢাকা-চাঁদপুর-বরিশাল-মোংলা-খুলনা রুটে বহু কাঙ্খিত প্যাডেল জাহাজ পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছে। আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধায় সংস্থার নির্ভরযোগ্য প্যাডেল নৌযান ‘পিএস অস্ট্রিচ’ ঢাকা থেকে বরিশাল-খুলনা উদ্যেশ্যে যাত্রা করবে। পথিমধ্যে নৌযানটি চাঁদপুর-বরিশাল-ঝালকাঠী-পিরোজপুর ও বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ সহ মোংলা সমুদ্র বন্দরে যাত্রা বিরতী করবে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত নভেম্বরে স্ক্র-হুইল জাহাজ ‘এমভি বাঙালী’ ও ‘এমভি মধুমতি’র সাহায্যে ঐ রুটে সপ্তাহে একদিন যাত্রীবাহী স্টিমার সার্ভিস পরিচালন শুরু করে সংস্থাটি। কিন্তু অত্যাধীক জ্বালানী ব্যায়ের এসব নৌযানের কারণে প্রতি ট্রিপে সংস্থাটিকে ৩-৪ লাখ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনতে হয়। এভাবে গত আট মাসে প্রায় কোটি টাকা লোকসান গোনার পরে সংস্থাটির শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে আজ থেকে পরিক্ষামূলকভাবে ঢাকা-বরিশাল-খুলনা নৌপথে সপ্তাহে একদিন প্যাডেল স্টিমার সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছে সংস্থাটি।
অনেক বিদেশী পর্যটক ঢাকার থেকে বরিশাল হয়ে খুলনা পর্যন্ত ঐতিহ্যবাহী পাডেল জাহাজে ভ্রমণে আগ্রহী। মোংলা-ঘাশিয়াখালী চ্যানেলে নব্যতা সংকটে ২০১১সালের শুষ্ক মওশুমে খুলনা পর্যন্ত রকেট স্টিমার সার্ভিস বন্ধ করে দেয় সংস্থাটি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেশের ‘২৪টি নৌপথ খনন প্রকল্প’এর আওতায় প্রায় সোয়া ২কোটি কিউবিক মিটার পলি অপসারন শেষে গত বছরের মাঝামাঝি চ্যনেলটি খুলে দেয়া হয়। নভেম্বরে বিআইডবিøউটিসি খুলনা পর্যন্ত রকেট স্টিমার সার্ভিস স¤প্রসারন করলেও ব্যায় সাশ্রয়ী প্যাডেল জাহাজের পরিবর্তে আড়াইগুন জ্বালানী ব্যায়ের স্ক্রু-হুইল নৌযান পরিচালনা করতে গিয়ে সংস্থাটি বড় ধরনের লোকসানের কবলে পরে।
সংস্থাটির শীর্ষ পর্যায় থেকে ঐ রুটে প্যাডেল জাহাজ পরিচালন-এর সিদ্ধান্ত হলেও এতদিন ঘাশিয়াখালী চ্যানেলে ঐ ধরনের নৌযান পরিচালন সংস্থার মেরিন বিভাগ থেকে ‘ঝুকিপূর্ণ’ বলে নেতিবাচক মনোভাব পোষন করায় তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তিতে বিষয়টি নিয়ে বিঅইডবিøউটিসি’র শীর্ষ পর্যায় থেকে আইডবিøউটিএ’র উচ্চ পর্যায়ে যোগোযোগ করা হলে উভয় দফ্তরের মেরিন ও কারিগরি দল সহ একটি প্যাডেল জাহাজ ঘাশিয়াখালী চ্যানেল অতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়। সেভাবেই আজ (বৃহস্পতিবার) বিআইডবিøউটিসি এবং আইডবিøউটিএ’র একটি যৌথ কারিগরি দল প্যাডেল জাহাজ নিয়ে মোংলা-ঘাশিয়াখালী চ্যানেল হয়ে খুলনায় যাচ্ছে। এব্যাপারে বিআইডবিøউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর মোজাম্মেলল হক-এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, মোংলা-ঘাশিয়াখালী চ্যানেলটি দিয়ে মাঝারী থেকে বড় মাপের পণ্য ও জ্বালানীবাহী নৌযান নির্বিঘেœ চলাচল করছে। বিআইডবিøউটিসি’র প্যাডেল জাহাজ চলাচলে কোন সমস্যা হলে আমরা তা অবশ্যই দেখব।
বিআইডবিøউটিএ’র ড্রেজিং এবং নৌপথ সংরক্ষন ও পরিচালন পরিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহলের মতে, মোংলা-ঘাশিয়াখালী নৌপথে অভ্যন্তরীন রুটের যেকোন ধরনের নৌযান চলাচলে কোন সমস্যা নেই। বর্তমানে ভাটার সময় চ্যানেলটিতে ১২ফুটেরও বেশী গভীরতা থাকছে। পাশাপশি চ্যানেলটির প্রসস্ততা সর্বনিম্নে ১২০ফুট থেকে ৩শ ফুট পর্যন্ত। তাদের মতে গত নভেম্বরের পরে দশ থেকে ১৪ফুট গভীরতার প্রায় ২২হাজার পণ্য ও জ্বালানীবাহী নৌযান চ্যানেলটি অতিক্রম করেছে। একই সময়ে ৬ফুট থেকে ৮ফুট গভীরতার আরো প্রায় ৪০হাজার নৌযান চ্যানেলটি ব্যবহার করে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৭সালে ড্রেজিং করে মোংলা-ঘাশিয়াখালী চ্যানেলটি চালু করার ফলে সমুদ্র বন্দর মোংলা ছাড়াও খুলনা ও নওয়াপাড়া নদী বন্দরের সাথে সারা দেশের নৌযোগাযোগ সহজতর হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন সংরক্ষন ড্রেজিং না করায় ২০১১-এর শুষ্ক মওশুমের শুরুতে নাব্যতা হারিয়ে চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি ঐসময় ভড়া বর্ষা মওশুমে চ্যানেলটির গভিরতা পূর্ণ জোয়ারে ১.৩৭মিটার এবং বুড়িডাঙ্গা ও রামপাল শোলে সর্বনিম্ন গভিরতা ০.৪৬ মিটারে নেমে আসে। ফলে কোন অবস্থাতেই মোংলা এবং খুলনার বিশাল পণ্য ও জ্বলানীবাহী নৌযানগুলো এ চ্যানেলটি অতিক্রম করতে না পারায় সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে একটি বিকল্প চ্যানেল চালু করা হয়। কিন্তু এতে করে মোংলা ও খুলনার সাথে দুরুত্ব প্রায় ৫০কিলোমিটার বেড়ে যায়। পাশাপাশি বিশ্ব ঐতিহ্যের সুন্দরবনের পরিবেশ, প্রতিবেশ সহ জীববৈচিত্রের ওপর মারাত্মক বিরূপ প্রভাব পরে। এমনকি একই কারনে ঢাকা-বরিশাল-খুলনা যাত্রীবাহী রকেট স্টিমার সার্ভিসটিও মোড়েরগঞ্জ পর্যন্ত সিমিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রায় ২শ কোটি টাকা ব্যায়ে ‘বাংলার সুয়েজ খাল’ খ্যাত ‘মোংলা-ঘাশিয়াখালী চ্যানেল’টি গতবছর পুণঃ খনন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতবছর ২৭ অক্টোবর চ্যানেলটি উদ্বোধন করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।