পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে বিশেষ সংবাদদাতা : আমদানীর উপর শুল্ক কমানোসহ নানামুখী সরকারী উদ্যোগে এখনো খাদ্যে উদ্বৃত্ত দক্ষিণ-পশ্চিমের বাজারে চালের বাজার স্বাভাবিক হয়নি। তবে গত দু’দিন মোটা চাল কেজিপ্রতি মাত্র ২টাকা কমেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, কেজিতে ২/১টাকা কম হওয়া, এটিকে কম বলা যাবে না। যেখানে আকস্মিকভাবে ৩৩/৩৪টাকার চাল বৃদ্ধি পেয়ে ৪৫/৪৭টাকা হয়। সেখানে পূর্বের দামে নেমে আসলে বলা যাবে চালের বাজার স্বাভাবিক হয়েছে। তাছাড়া সরু চালের দাম কমেনি মোটেও। সাধারণ ভোক্তাদের কথা, স্মরণকালের মধ্যে এবারই প্রথম চাল উঠার মৌসুমে মোটা চালের দাম বেড়ে যায় রাতারাতি। স্থানীয় প্রশাসন, খাদ্য বিভাগ ও বাজার কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রথমদিকে বিষয়টির গুরুত্ব দেননি বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। চাল নিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য ছাড়া বাস্তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মাঠে নেমে মূল্যবৃদ্ধি প্রকৃত কারণ উদঘাটন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়নি দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে।
খুচরা চাল ব্যবসায়ী খুলনার ইসলাম উদ্দীন ও যশোরের রফিকুল ইসলাম গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, সরকার চাল আমদানীর উপর শুল্ক কমিয়ে দেওয়ায় বেসরকারী পর্যায়ে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানী শুরু হওয়ায় পাইকারী ব্যবসায়ীরা বাজারে চাল সরবরাহের মাত্রা আকস্মিকভাবে বৃদ্ধি করে। সেজন্য দাম একটু কমেছে। তাদের কথা, মোটা চালের দাম আরো কমলে বলা যাবে বাজার স্বাভাবিক। খুচরা ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা জানান, বড় ধরণের দুর্যোগের সময় একবার একলাফে ৩৫টাকা পর্যন্ত মোটা চালের দাম বৃদ্ধি পায়। এবারের মতো ৪৭টাকা কখনো দাম ওঠেনি। সাধারণত খেটে খাওয়া মানুষ মোটা চালের প্রধান ক্রেতা। দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের কষ্টের সীমা নেই।
খাদ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র দাবি করে, মোটা চালের দাম আরো কমবে। কারণ সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে আমদানীকৃত চাল বাজারে ঢুকছে। মজুদদাররাও বাজারে চাল সরবারহ বৃদ্ধি করেছে। সুত্র জানায়, সরকারী খাদ্য গুদামগুলোতে চাল সঙ্কটের কারণে এবার ভিজিএফ কার্ডে চালের বদলে গম দেওয়া হয়েছে। এটি খাদ্য কর্মকর্তাদের অদুরদর্শীতার কারণে। ঢালাওভাবে ডিও লেটারে বিভিন্ন প্রকল্পে চাল আর চাল উত্তোলন করে সরকারী গুদাম প্রায় চালশূন্য করা হয়। প্রভাবশালীরা প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে নানা প্রকল্পের নামে চাল উত্তোলন করে এমন অভিযোগ রয়েছে। সংকটের মূল কারণ এটি। দক্ষিণ-পশ্চিমের ১০ জেলায় ২টি সাইলো, ২টি সিএসডিসহ মোট ৭৩টি সরকারী খাদ্যগুদাম রয়েছে। আপদকালীন মজুদ ছিল না বললেই চলে। নামকাওয়াস্তে ছাড়া কোথাও এবার সরকারী সংগ্রহের চাল ঢোকেনি। একজন খাদ্য কর্মকর্তা দাবি করেন, বাজারে চাল ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা যখন তখন কয়েকজন মিলার ৩৪টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করেছে খাদ্য বিভাগের কাছে। এটি কিভাবে সম্ভব সেই প্রশ্নের মেলেনি। সুত্র জানায়, এ অঞ্চলের চুক্তিবদ্ধ মিলারদের সিংহভাগ সরকারী সংগ্রহে সাড়া দেননি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্ততি নিচ্ছে খাদ্য কর্মকর্তারা। মিলারদের কথা, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ না করে সরকার নির্ধারিত মূল্যে চাল দিতে বলে, এটি কি করে সম্ভভ।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, চাল নিয়ে কারসাজির জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ দায়ি। সেইসঙ্গে মজুদদাররা। যাদের দেখভাল করার দায়িত্ব তারাই উৎকোচের বিনিময়ে মজুদদার, পাইকারী ব্যবসায় ও মিলারদের ফ্রিস্টাইলে কাজকর্ম করার সুযোগ দেয় বলে বিস্তর অভিযোগ। ধান চাল সংগ্রহ ব্যর্থ হওয়া একই কারণ। সূত্র জানায়, ১৯৬৪ সালের এগ্রিকালচারাল প্রডিউস মার্কেটস রেগুলেশন এ্যাক্ট ও ১৯৮৫ সালের সংশোধিত বাজার নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৬(১) ও ১৬(২) ধারামতে কৃষিজাত ও ভোগ্যপণ্যের ক্রয়মূল্য, বিক্রয়মূল্য ও মজুদ পরিস্থিতির তদারকির ক্ষমতা রয়েছে কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের বাজার কর্মকর্তাদের। কিন্তু বাস্তবে কোথাও আইনটির প্রয়োগ হতে দেখা যায় না। তাছাড়া ১৯৫৩ সালের মজুদবিরোধী আইন ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইনেরও প্রয়োগ নেই। মুক্ত বাজার অর্থনীতির কোপানলে ওইসব আইন কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ে।
বেনাপোলের বিশিষ্ট আমদানীকারক মোঃ মতিয়ার রহমান বলেন, সরকার চালের বাজার স্বাভাবিক করার জন্য যেখানে আমদানী শুল্ক কমিয়ে দিয়েছে। সেখানে চাল আমদানীতে বেনাপোলে শনিবার ‘হলিডে’ আদায় করা হচ্ছে। এসব নানা ঝামেলা ও ব্যয়বৃদ্ধির কারণে আসলে মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। তিনি জানান, আমদানীকৃত চাল ঢুকতে শুরু করেছে। এখনই জরুরিভিত্তিতে বেনাপোল পোর্টের হলিডে চার্জ বন্ধ করার নির্দেশনা দরকার।
যশোর ও খুলনাসহ গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাট-বাজারে শুধু চাল নয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। মাঝেমধ্যে কোথাও কোথাও বাজার পরিদর্শন করতে দেখা যায় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের। নামকাওয়াস্তে মিটিং সিটিং আর রেজুলেশনে সীমাবদ্ধ থাকে। বাজার তদারকি হয় না। যশোর. খুলনা, মাগুরা, সাতক্ষীরা, চুযাডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাজারে গতকাল খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রতিকেজি মোটা চাল ৪০টাকা থেকে ৪২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাসমতি ৫৮ টাকা, মিনিকেট ৫০টাকা, ব্রি ২৮ প্রসেসিং ৪৭টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।