পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী নিজে ‘দুর্নীতি’ মামলার আসামি হয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে আসামি বলার কোনো অধিকার রাখেন না বলে মন্তব্য করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ১/১১ এর স্বাভাবিক এক্সটেনশন বর্তমান সরকার। জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দশম কারাবন্দী দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকের পত্রিকায় দেখলাম, সরকার প্রধান যিনি আওয়ামী লীগের সভানেত্রীও বটে তিনি বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী একটা মন্তব্য করেছে, বিএনপি নাকী আসামিদের নির্বাচন করেছে। আমরা বলতে চাই, যিনি (প্রধানমন্ত্রী) এই কথাটা বললেন, তিনি নিজে একজন আসামি। ১/১১ পরে আজকের যিনি প্রধানমন্ত্রী তার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলা, বার্জ মাউন্ট বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুর্নীতি মামলা, মিগ-২৯ ক্রয় দুর্নীতি মামলা, ব্যবসায়ী নুর আলী ও আজম জে চৌধুরীর চাঁদাবাজীসহ ১৫টি মামলার আসামি ছিলেন। আপনি একজন আসামি হয়ে কীভাবে কোন মুখে আজকে আপনি বললেন বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হয় আসামিরা। আপনার সেই অধিকার নেই।
ড. মোশাররফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং একটি দলের সভানেত্রী হয়ে আপনি আরেক দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে কটূক্তি করে আপনি রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত কাজ করেছে। আমরা এর নিন্দা জানাই।
দলের নেতৃত্বে নির্বাচনের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্যের সমালোচনা করে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপি তার নেতা হিসাবে কাকে নির্বাচন করবে, সেটা নেতাকর্মী ও কাউন্সিলরদের দায়িত্ব। সেখানে আরেকটি দলের প্রধান এ ব্যাপারে মাথা ঘামাতে পারেন না।
১/১১ সময়ে তারেক রহমানকে গ্রেফতারের পটভুমি তুলে ধরে তিনি বলেন, গ্রেফতারের সময়ে তারেকের বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। তাকে কেনো গ্রেফতার করা হয়েছিলো? প্রথমে ১/১১ এর সেনা সমর্থিত সরকার এদেশে বিরাজনীতিকরণের নামে আসলে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নির্মূল করে দেওয়ার তারা ঘৃণ্য পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। মাইনাস টুয়ের নামে প্রকৃতপক্ষে মাইনাস ওয়ান খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার জন্য তারা মাঠে নেমেছিল। আর সেজন্যই প্রয়োজন হয়েছিল তাদের জাতীয়তাবাদী দলের ভবিষ্যৎ কান্ডারি তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা।
১/১১ সময়ে গ্রেফতার হওয়া মোশাররফ বলেন, ৭ মার্চ তারেক রহমান গ্রেফতারের তিন ঘণ্টা আগে আমি গ্রেফতার হয়েছিলাম। সেসময়ে তাকে গ্রেফতারের পেছনে আরেকটি কারণ ছিল যে, সরকার এসেছিল গায়ের জোরে, তারা বেশি দিন ক্ষমতায় থেকে একটি পদলেহী একটি রাষ্ট্রের বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়, যারা তাদের বসিয়েছিল তাদের স্বার্থেই। অর্থাৎ বিদেশি স্বার্থকে চরিতার্থ করার জন্য ১/১১ সরকার বেশি দিন ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। সেজন্য তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
গ্রেফতারের পর তারেকের বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল। গ্রেফতারের পর একটির পর একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারের অভ্যন্তরে রেখে দেয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়, তাকে রিমান্ডের নামে যে নির্যাতন করা হয়েছিল, তার ফলে তার মেরুদ- ভেঙে গিয়েছিল এবং সেই ১/১১ সরকারের কুশীলবদের উদ্দেশ্য ছিল তারেক রহমানকে নিঃশেষ করে দেওয়া।
তারেক রহমানকে বর্তমান সরকার ভয় পায় বলে তার বিরুদ্ধে ১/১১ সরকারের মতোই মিথ্যা মামলা দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগও করেন ড. খন্দকার মোশাররফ।
১/১১ এর স্বাভাবিক এক্সটেশন বর্তমান সরকার। যেসব কারণে তারেক রহমান ১/১১ সরকারের কাছে টার্গেট হয়েছিল, একই কারণে তিনি (তারেক) বতর্মান সরকারের টার্গেট। তারা বেগম জিয়া, জিয়া পরিবার, জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ভয় পায়। সেজন্য বাকশালী কায়দায় সরকার বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য সকল প্রকার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
যুদ্ধাপরাধীর মামলার বিষয়ে প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে দুই মন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে সভাপতির বক্তব্যে ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সরকার প্রধান এই দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি বরং সাফাই গাইছেন। তবে এটর্নি জেনারেলকে ধন্যবাদ জানাই তিনি বলেছেন, দুই মন্ত্রী সঠিক কথা বলেননি। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তার মতো কথা বলেছেন, আওয়ামী লীগের এটর্নি জেনারেলে মতো কথা বলেননি।
নির্বাচন প্রক্রিয়া ধ্বংস করার অভিযোগ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধায়নে এখানে নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো, আওয়ামী লীগকে দেবো, তার সঙ্গে আমি একমত নই।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা এডভোকেট জয়নাল আবেদীন, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবেক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুনির হোসেন, ছাত্র দলের সভাপতি রাজীব আহসান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দলের সহ দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীমসহ অন্যরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।